বাগেরহাট প্রতিনিধি
‘সব হারিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। বাড়িঘর, ভিটেমাটি সব লিখে নিয়েছে। সুদ কারবারিদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। আমি মামলা করেছি। মামলার পর উল্টো ওরা আমাকে চেক ডিজঅনার মামলার ভয় দেখাচ্ছে। ভয়ে একমাত্র সন্তান স্বপনীলকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এখন আমি পথের ফকির, টাকা দিব কীভাবে।’
কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার আজিজুল হক কিন্ডার গার্টেনের প্রধান শিক্ষক যুগল কান্তি ডাকুয়া (৪৫)।
যুগল কান্তি ডাকুয়া দৈনিক অধিকারকে জানান, সুদখোরদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন ও কটুকথা সইতে না পেরে গত ২০ জুলাই দুপুরে তার স্ত্রী ও স্কুল শিক্ষিকা হাসিকনা বিশ্বাস (৩৮) আত্মহত্যা করেন। নিহত হাসিকনা বিশ্বাস উপজেলার দক্ষিণ শিবপুর মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। এ ঘটনায় যুগল কান্তি বাদী হয়ে গত ২২ জুলাই রাতে ৮ জনকে আসামি করে চিতলমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেপ্তারও করে। কিন্তু বর্তমানে যেসব সুদ কারবারিদের কাছে তার স্বাক্ষরিত ‘ব্লাঙ্ক চেক’ রয়েছে তারা সেই চেক ডিজঅনার মামলার ভয়সহ বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
তিনি জানান, যাদের কাছে তার স্বাক্ষরিত ব্ল্যাংক চেক রয়েছে তারা হলেন, রত্নার কাছে অগ্রণী ব্যাংকের দুইটি, বিকাশ বালার কাছে একটি অগ্রণী ও একটি বেসিক ব্যাংকের চেক, অনুপ বসুর কাছে একটি বেসিক ব্যাংকের চেক, যোতিষের কাছে একটি অগ্রণী ব্যাংকের চেক, রবীন সরকারের কাছে অগ্রণী ব্যাংকের একটি চেক, রমাজানের কাছে বেসিক ব্যাংকের একটি ও অগ্রণী ব্যাংকের একটি চেক এবং অঞ্জন মণ্ডলের কাছে অগ্রণী ব্যাংকের একটিসহ ১০ জনের কাছে মোট ১৫টি স্বাক্ষরকৃত ব্লাঙ্ক চেক রয়েছে। ওই চেকের বিপরীতে তিনি সুদ কারবারিদের ২ থেকে ৩ গুণ টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু এখনও চেক ফেরত পাননি।
স্ত্রী ও সর্বস্ব হারিয়ে তিনি এখন পথের ফকির। চেক ডিজঅনার মামলা হলে এখন তারও স্ত্রীর মতো মৃত্যু ছাড়া কোন পথ নেই বলে আবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন যুগল কান্তি ডাকুয়া।
এ ব্যাপারে রমজান ও অঞ্জন মণ্ডল অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক অধিকারকে জানান, যুগল কান্তি ডাকুয়ার সাথে তাদের কোনো লেনদেন নেই। তাই ব্লাঙ্ক চেক থাকার প্রশ্নই আসে না। তারা যুগলকে চেনেন না বলেও দাবি করেন।
আরও পড়ুন : হাত স্যানিটাইজ করে ঘুষ নিলেন ওসি!
এ বিষয়ে চিতলমারী থানার ওসি মীর শরীফুল হক দৈনিক অধিকারকে জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড