মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মুন্সিগঞ্জ জেলা এখন বন্যা কবলিত। গত কয়েকদিন যাবত ভারি বৃষ্টিপাত হওয়া জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। এদিকে, বাঁধ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেওয়া লোকজন বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও শৌচাগারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যা কবলিত এলাকার সব উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন উঁচু প্রতিষ্ঠানে বানভাসি পরিবারগুলো তাদের গবাদিপশু নিয়ে বাস করছেন। তবে, অধিকাংশ পরিবার বসতভিটা রেখে আশ্রয়কেন্দ্র যেতে রাজি হচ্ছে না। কারণ হিসেবে অনেকেই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) ভাগ্যকুল পয়েন্টে পদ্মার পানি ৭.০৫ মিটার উচ্চতায় ছিল। যা বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যা গেল ২৪ ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পদ্মার পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। চলতি মাসে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়া পদ্মার চরের গ্রামগুলোর বসতবাড়িতে কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও বুক সমান পানি। এসব বসতবাড়িতে থাকা মানুষজনের সঙ্গে বিপদে পড়েছে তাদের গবাধি পশু ও হাঁস-মুরগিও। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঘরের মাচা উঁচু করলেও পানিবন্দি হয়ে চরম বিপাকে দিন কাটাতে হচ্ছে বানভাসি পরিবারগুলোকে।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী টিএম রাশেদুল হাসান বলেন, চলতি মাসে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে জেলার নদ-নদীতে পানির চাপ বাড়তে পারে। তবে পানি বাড়লেও আগস্ট মাসে গিয়ে পদ্মার পানি কমতে পারে।
আরও পড়ুন : মুক্তাগাছায় একদিনে স্কুলছাত্রীসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপক কুমার রায় (সার্বিক) জানান, এ পর্যন্ত ১৪৬ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় ১৬টি ইউনিয়নের ১০৪ টি গ্রাম প্লাবিত। এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ১৯ হাজার ৮৫১ জন। জেলায় ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। সেখানে ১০৮টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি আরো জানান, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লৌহজং উপজেলা। সেখানে ৯টি ইউনিয়নের ৪৬ টি গ্রাম প্লাবিত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পরিবার। এ পর্যন্ত ৬৬ মেট্রিক টন চাল, এক হাজার শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, টংগিবাড়ী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ২৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এখানে ৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া শ্রীনগর উপজেলার ২৯টি গ্রাম প্লাবিত। প্রায় ৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড