• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুন্সিগঞ্জে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর অর্ধেকই সদরে!

  রিয়াদ হোসাইন, মুন্সিগঞ্জ

১০ জুলাই ২০২০, ২০:৫২
মুন্সিগঞ্জ
মুন্সিগঞ্জ শহর

মুন্সিগঞ্জে এখন পর্যন্ত যে কয়জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে তার প্রায় অর্ধেকেই সদর উপজেলায়। শুধু আক্রান্তই নয়, জেলায় মৃত্যুর সংখ্যাও অর্ধেকের কোটায় রয়েছে এই উপজেলায়। মুন্সিগঞ্জে এখন পর্যন্ত মোট করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৩৬৮ জনের দেহে , যার মধ্যে ১ হাজার ৭ জনই সদর উপজেলায় রয়েছেন। অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছেন ৫৫ জন, এর মধ্যে ২৬ জনই মারা গেছেন সদর উপজেলায়।

শুক্রবার (১০ জুলাই) বিকেলে মুন্সিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য বার্তায় এ তথ্য পাওয়া যায়।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানাযায়, গত ১১ এপ্রিল সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের প্রথম এক নারীর দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে এই উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে । করোনা শনাক্তের প্রথম মাস এপ্রিলে এ উপজেলায় ৩১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। মে মাসে নতুন আরো ৩১৯ জন করোনা আক্রান্ত হলে, তা বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে ৩’শের কোটায় পা রাখেন। এ উপজেলায় পিক টাইম (সর্ব্বোচ্চ শিখর) হিসেবে জুন মাস অতিক্রম করে। ’পিক টাইম’ জুন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়। ওই মাসে নতুন করে আরো ৫৪৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে গত জুন মাসে করোনা রোগীর সংখ্যা ছিলো ৮৯৩ জন। তবে চলতি জুলাই মাসেও এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১১৪ জন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত সদর উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭ জনে। এ সব তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে গড়ে প্রতিদিন একজনের বেশি, মে মাসে ১০ জনের বেশি, জুন মাসে ১৮ জনের বেশি ও চলতি জুলাই মাসে এ পর্যন্ত ১১ জনের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

সদর উপজেলার করোনা পরিস্থিতিতে সম্পর্কে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুমন বণিকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অফিস টাইমে যোগাযোগ করেন, এখন কোনো তথ্য নেই। এসময় প্রতিবেদক তথ্যের জন্য অনুরোধ করলে তিনি জানান, সদর উপজেলা থেকে গত কাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ৪ হাজার ৪০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে এতটুকুই জানা আছে৷

স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার সাথে করোনা হটস্পট নারায়ণগঞ্জের সাথে সরাসরি যোগাযোগ থাকার কারণে এ উপজেলায় সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া এই উপজেলার একটি বড় অংশের মানুষের নারায়ণগঞ্জ জেলায় কর্মক্ষেত্র রয়েছে। এদিকে, সদর উপজেলার শহরাঞ্চলে হাসপাতাল, অফিস, আদালত ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকায় এখানে মানুষের গণ জামায়ত বেশি সৃষ্টির ফলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হতে পারে বলে মনে করেন তারা৷ এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে সিঁড়ি রেলিং, লিফট, এসকেলেটরেও ভাইরাস ছড়াতে পারে, যা পরে অন্যকে সংক্রমিত করেছে৷

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের কাছাকাছি সদর উপজেলা। এই শহরাঞ্চল ঘনবসতি হাওয়ার কারণে এখানে সংক্রমণ দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যান্য উপজেলার তুলনায় সদরে দূষণ বেশি থাকার কারণে এখানকার মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তবে, আগের তুলনায় এখন সংক্রমণের সংখ্যা কমছে ও সুস্থতার সংখ্যা বাড়ছে।

নমুনার সংখ্যা কমার কারণেই কী আক্রান্তের সংখ্যা কমছে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা কমার কারণেই নমুনা সংখ্যা কমছে৷ কেননা আগে বেশি লোক আক্রান্ত হলে তাদের সংস্পর্শে বেশি লোক থাকার কারণে তাদেরও নমুনার সংগ্রহ করতে হয়৷ এখন আক্রান্তের সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের সংস্পর্শে আসা মানুষের সংখ্যাও কম তাই নমুনাও কম । এছাড়া আমাদের কাছে যারা আসছে তাদের সবারই নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাই বলা যাবে না নমুনা কমার কারণেই আক্রান্ত কম হচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিধির বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, সামনে ইদুল আযহা আসছে, এসময় আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। মাস্ক ছাড়া বের হওয়া যাবে না। সর্বোপরি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। তাহলেই সংক্রমণ কমে আসবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড