• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুন্সিগঞ্জে টিআর প্রকল্পের রাস্তা এখন বাড়ি! গৃহবন্দী ৭ পরিবার

  মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি

০৯ জুলাই ২০২০, ১৮:৫২
মুন্সিগঞ্জ
গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন সাতটি পরিবার

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় টিআর প্রকল্পের রাস্তায় বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মিজান শেখ ও বাদশা শেখের বিরুদ্ধে। এতে করে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন সাতটি পরিবার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের দক্ষিণ চাইনপাড়া গ্রামে মিজান শেখের বাড়ি হতে আলম শেখের বাড়ি পর্যন্ত টিআর প্রকল্পের নির্মাণ করা রাস্তা বন্ধ করে বাঁশের বেড়া ও ইটের দেয়াল দিয়ে দখল করে রেখেছেন স্থানীয় মিজান শেখ ও বাদশা শেখ নামক দুই ব্যক্তি। এতে করে স্থানীয় আদম আলী শেখ, হাসেম শেখ, কাসেম শেখ, দিল ইসলাম, তোতা মিয়া সহ সাতটি পরিবার গৃহবন্দি হয়ে পড়েন।

জানাযায়, গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে টিআর প্রকল্প রাস্তা নির্মাণের জন্য ৯২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আবু সাইদ মাদবর। পরে ইউপি সদস্য আবু সাইদ স্থানীয় ঠিকাদার মিজান শেখকে রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব দেন। কিন্তু মিজান শেখ তার নিজস্ব জমি ভরাট দেখিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে সাথে নিয়ে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এদিকে, অনুমতি ব্যতীত ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার ওপর টিআর প্রকল্পের রাস্তা বাস্তবায়ন করা হলেও জায়গার মালিকদের রসাতলে পরে ওই সাত পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ওই রাস্তা ব্যবহারকারী পরিবারগুলো৷

গৃহবন্দি পরিবার গুলো বলেন, অনেক আগের থেকেই ওই রাস্তা ব্যবহার করছি আমরা। পরে টিআর প্রকল্পে ওই রাস্তা ৬ ফুট প্রশস্ত করে নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে রাস্তার পাশের জমির মালিকরা ৩ ফুট করে জমি রাস্তার জন্য ছেড়ে দেওয়ার কথা থাকলেও রাস্তা নির্মাণের পর তারা তা দখল করে নেন। এতে করে আমরা গৃহবন্দি হয়ে পড়ি।

গৃহবন্দি শাহানাজ আক্তার বলেন, আমরা এখন বাসা থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের বাড়ির পিছনে সরকারি রাস্তা হওয়ার কথা ছিল। সরকারি রাস্তা হওয়ার কথা বলায় আমরা জায়গাও রেখে দিয়েছে। এখন সেই রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন মিজান শেখ।

অভিযুক্ত বাদশা শেখের ভাই মনসুর শেখ বলেন, এখানে সরকারের কোনো প্রজেক্ট হয়েছে এটা আমরা জানি না এবং আমাদেরকে কেউ জানায়নি। আমাদের টাকা দিয়ে বালু ভরাট করেছি। তাই বাড়ীর দেয়াল দিয়েছি। চেয়ারম্যান সাহেব বলে গেছে এটা আমাদের ভুল না। সরকারি টাকা আসুক বা না আসুক আমরা জানি না। আমাদের জায়গায় কোন সরকারি মাটি ফেলানো হয় নাই। চেয়ারম্যান সাহেব দুইটা সালিশ করেছে এই জায়গার বিষয়ে।

অভিযুক্ত মিজান শেখ বলেন, সাঈদ মেম্বার সাহেব আমাকে ৭২ হাজার টাকা দিয়েছে। পাশের বাড়ির তারা জায়গা না দেওয়ায় আমি রাস্তা আমার জমির উপর দিয়ে করেছি। আমার ব্যক্তিগত রাস্তা দিয়ে কারো যেতে দিবোনা। সরকারি যে রাস্তা বানানো হয়েছে সেই জায়গায় বাদশা শেখ দেয়াল দিয়ে রেখেছে। সেই জন্য আমি ও আমার জমির উপর দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছি। তারা যদি দেয়াল ভেঙে দেয় তবে আমিও আমার জমি থেকে বেড়া সরিয়ে রাস্তা দিয়ে দিব। দরকার হলে আমি প্রকল্পের টাকা ফিরিয়ে দিবো।

জৈনসার ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাঈদ মাদবর জানান, আমি মিজানকে টাকা দিয়েছি রাস্তা করার জন্য। গত বুধবার চেয়ারম্যান সাহেব দুই পক্ষকে ঢেকেছিল, তারা আসেনি। তখন চেয়ারম্যান সাহেব বললো সাবেক মেম্বার আর তোমরা বসে এটা মীমাংসা করো। এভাবেই আছে এখনো, কোন সমাধান হয়নি। প্রকল্পটি ২০১৮-১৯ সালের বরাদ্দ আসছিল। আমার মাধ্যমেই প্রকল্পের কাজটি হয়।

জৈনসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু বলেন, আমি প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছি। মেম্বার রাস্তা তৈরি করেছে। আমি মেম্বার ও মিজানকে বলেছি সরকারি টাকার রাস্তা বুঝাইয়া দিতে। সরকারি টাকার রাস্তা কোথায় সেটা তারা বের করে দিবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড