সারাদেশ ডেস্ক
কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের পরলোকে পাড়ি জমিয়েছে দু’দিন হলো। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের হিমঘরে তিনি অপেক্ষা করছেন দুই সন্তানের জন্য। তার পাশে রয়েছে গত শনিবার করোনায় মৃত্যু হওয়া নওগাঁর পত্মীতলা উপজেলার জামগ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক আজাদ আলীর মরদেহ।
এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ একনজর দেখার জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে আসছেন তার সন্তানরা। কিন্তু পাশের জেলা থেকে আজাদ আলীর জন্য কেউ আসছেন না। রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এরপর করোনা আতঙ্কে তার ভাই এবং শাশুড়ি তার মরদেহ ফেলে চলে গেছেন।
সেদিন থেকে তাদের দুজনের মুঠোফোন নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। শত চেষ্টা করেও পুলিশ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। তাই তার হিমঘরে রাখা হয়। আজাদ আলীর মরদেহের পাশে সোমবার রাতে একই ফ্রিজে রাখা হয় এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মোশাররফ হোসেন জানান, আজাদ আলী করোনায় মারা গেলেও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা তার মরদেহ জীবাণুমুক্ত করার পর ফ্রিজে রাখা হয়েছে।
প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের জন্য কাঁদছে গোটা বাংলাদেশ। কিন্তু গ্রাম্য চিকিৎসক আজাদ আলীর মরদেহটি নিতে আসছেন না কেউ। ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলেই ঠুস’ এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে গাওয়া এ গানের অর্থটি যেন পরিপূর্ণভাবেই ফুটে উঠেছে আজাদ আলীর ক্ষেত্রে।
বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আজাদ আলীর বড় ভাই রাহাত আলী জানান, তারা চার ভাই, চার বোন। আজাদ আলী সবার ছোট। বোনদের বিয়ে হয়ে গেছে। তারা চার ভাই একই বাড়িতে থাকতেন। আজাদ স্ত্রী এবং চার বছরের এক ছেলে ও আট বছরের এক মেয়ে রেখে গেছেন।
মরদেহ না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেছিলেন, আজাদ আলীর মরদেহ আনলে রাতের মধ্যেই দাফন করতে হবে। সেটা সম্ভব না। তাই হাসপাতালে কোয়ান্টামকে বলেছিলাম তার মরদেহ যেন রাজশাহীতেই দাফন করে ফেলে। এখনও দাফন হয়নি সেটা জানি না। তবে এখন লাশ নেওয়ার সুযোগ থাকলে আমরা নিয়ে আসব।’
হাসপাতালের উপ-পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, ‘লাশ হিমঘরে রেখে আমরা অপেক্ষা করছি। তারা না এলে পুলিশ লাশের দায়িত্ব নেবে এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দাফন করা হবে।’
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড