সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হাত দিয়ে বরাদ্দ যায় সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নের বানভাসি মানুষের কাছে কিন্তু ইউএনও’র অফিসের মাত্র পাঁচশত গজ দুরে প্রায় শতাধিক পরিবার ১৫দিন পানিবন্দী থাকলেও তাদের কাছে পৌঁছেনি কোন ত্রাণ সহায়তা। করোনায় কর্মহীন এসব পরিবার ওয়াপদা বাঁধের উপর ঝুপড়ি তুলে মানবেতর জীবনযাপন করলেও খোঁজ নেয়নি ইউএনও। ইউএনও ঘরের কাছের লোকের খোঁজ না নেয়ায় পানিবন্দী এসব মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তারা বলছেন, পড়শী বিপদে পড়লে পড়শীর খোঁজ নেয়া ও সহায়তা করা সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের ইউএনও সে দায়িত্বও মনে হয় ভুলে গেছেন! তবে ইউএনও বলছেন, আমার দায়িত্ব আছে, তাই সহায়তার দেয়ার চেষ্টা করছি। আশা করছি দু একদিনের মধ্যে ত্রাণ দিতে পারবো।
শহরের ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নেয়া বানভাসি সুরমা খাতুন জানান, প্রায় ১৫দিন যাবত হোসেনপুর ওয়াপদা বাঁধের নিচু এলাকায় প্রায় দেড়শত ঘরবাড়ী পানিতে তলিয়ে আছে। সবাই ওয়াপদাবাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। করোনার কারণে কাজও ঠিকমত করতে পারছে না কেউ। কষ্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নিচ্ছে না।
বয়োবৃদ্ধ মনিজা বেগম জানান, ইউএনও অফিস থেকে এদুল্লাহ দুরে আমরা বাঁধের উপর ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে মরার মতো পইড়্যা থাহি তাও ইলিফ তো দুরের কথা মনের ভুলেও ইউএনও কোনদিন দেখতে আহে নাই। অসুখ শরীর নিয়্যা দুমুঠো চালের জন্য ইউএনও’র বারান্দায় কতবার গেছি, তাও একমুঠো চালও দেয় নাই। আরো ওহেনকার ম্যানসে তাড়া দিছে। আবেগে বলেন, হুনি হাসিনা সরকার অনেক কিছু দেয় কিন্তু শরীরে অসুখ নিয়ে বাঁধের উপর থাকি কেউ আংগোরে দ্যাহে না। গরীবেক আসলে কেউ দ্যাইখপার পারে না।
আরেক বয়োবৃদ্ধ মালেকা বেগম বলেন, যারা পানির মধ্যে থাহে তাগো কেউ দ্যাহে না। তেল মাথায় বেহই তেল ঢালে। ইউএনও ত্যাল আলা মাথায় তেল দেয়। আংগোরি পড়শি, তাই আংগো ফুচকি দিতেও আহে নাই। হেউ যারা পানিতে থাহে তাগোরে দেয় না, আর যারা হুকনায় থাকে তাগোরে দেয়। আংগোরে আল্লাহ ছাড়া কেউ নাই। হুনি ম্যানসেক টিন দেয়। আংগোরে কুনদিন একখান টিনও দিলেনা যে বাঁধের তুইল্যা থাকবো। রাইতো বৃষ্টির মধ্যে মাটি খেড় পাইর্যা হুইয়া থাকি। আংগোরে কষ্ট কেউ দেহে না। কতবার যে কমিশনার ভোটের ফটোকপি নিলো, কিন্তু রিলিফ আর দিলো না।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অসীম কুমার মণ্ডলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এসকল বানভাসি মানুষের জন্য আমার চিন্তা আছে, আমার দায়িত্বও আছে। কিন্তু এখনো সরকারি বরাদ্দ পাইনি। চেষ্টা চলছে, হয়তো দু একদিনের মধ্যেই ত্রাণ সহায়তা দিতে পারবো।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড