এম.কামাল উদ্দিন, রাঙ্গামাটি
রাঙ্গামাটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে ১০ হাজার পরিবার। সদরের মধ্যে ৫ হাজার ও জেলা শহরের বাহিরে আরো ৫ হাজার পরিবার পাহাড়ের ঝুঁকিতে বসবাস করছে। এসময়ে রাঙ্গামাটিতে মুষলধারে বৃষ্টি ও পাহাড়ের বৃষ্টি পানি নেমে এসে মাটি ধসে পাহাড় ধসের আশংঙ্খা রয়েছে। এই মৌসুমে অনবরত বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণেও ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস হয়ে থাকে। শহরের শিমুলতলী, ভেদভেদি মুসলিম পাড়া, টেলিভিশন সেন্টার এলাকা, রেডিও ষ্টেশন, যুব উন্নয়ন এলাকা, রাঙাপানি, তবলছড়িও মহিলা কলেজ এলাকায় পাহাড় ধস হয়ে থাকে।সদরের বাহিরে কাপ্তাই, কাউখালী, বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচর পাহাড় ধস হয়ে থাকে।
স্থানীয়রা বলেন, যে সকল এলাকায় পাহাড় ধস হয়ে থাকে ওই সব এলাকায় লোকজন বসবাস না করতে বারংবার প্রশাসনের পক্ষ হতে নিষেধ করার পরও লোভী লোকজন ওইসব এলাকায় গিয়ে স্থাপনা তৈরি করে বসবাস করছে। আবার অনেকে বলেন,পাহাড় ধস এলাকা বেচা বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের বেশ কিছু সিন্ডিকেট (জায়গা জমি)বিক্রির দালাল রয়েছে এদের মাধ্যমেই সরকারি খাস জায়গা বিক্রি হয়ে থাকে। অভিযোগে উঠে এসেছে এক জায়গা ৩-৪ বার বিক্রি হয়। এতে প্রতারণার শিকার অসহায় ক্রেতারা। জায়গা ক্রয় করে দখলে যেতে পারেনি এমন লোকের সংখ্যা অনেক। সম্প্রতি টিভি সেন্টারের আশ পাশে নতুন নতুন স্থাপনা গড়ে উঠেছে যা প্রশাসনের নাকের ডগায়। কিন্তু প্রশাসন দেখেও না দেখার ভাব ধরে আছে। প্রশাসন ওই সব এলাকায় বারবার গিয়েও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না! পাহাড়ের পাদদেশে এক দিকে নতুন স্থাপনা গড়ে উঠেছে অন্যদিকে প্রশাসন পাহাড়ের পাদদেশে লোকজন বসবাস না করতে নিষেধ করছেন।
সম্প্রতি এলাকার লোকজনকে সচেতন করার লক্ষে জেলা প্রশাসক ঝুঁকিপূর্ণ স্থান নির্ধারণ করে সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনের মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পাহাড় ধস সম্পর্কে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।
জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, বর্ষাকাল এসে গেছে এই সময়ে পাহাড়ি অ লে মুষল ধারে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। বৃষ্টির সাথে প্রচুর বজ্রপাত হয়ে থাকে,যার ফলে পাহাড় ধসের আশংঙ্খা অনেকটা বেশী তাই লোকজনকে সচেতন করতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মানুষ যদি সচেতন হয় তাহলে অনেক কিছু থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। জেলা প্রশাসক বলেন,গত বছরও পাহাড় ধস সম্পর্কে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া। এবারও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পাহাড় ধস সম্পর্কে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। যদি কেউ আইন অমান্য করে তাহলে তাকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।পাহাড় ধসে কেউ মারা যাবে এটা সহ্য করা হবে না।পাহাড় ধসের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্ধারিত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে জেলা প্রশাসন সাইনবোর্ড স্থাপন করেছেন কেউ এই সাইন বোর্ডের বাহিরে গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যে সমস্ত এলাকায় পাহাড় ধস নিয়ে সাইনবোর্ড স্থাপন ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে সে সব এলাকাগুলো হলো-রেডিও ষ্টেশন,শিমুলতলী,মুসলিম পাড়া,টিভি সেন্টার ও যুব উন্নয়ন এলাকা। তিনি বলেন,সদরে ও সদরের বাহিরে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পাহাড় ধস আতংকে বসবাস করছে। এসব লোকজনকে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত-রাঙ্গামাটিতে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পাহাড় ধসে ২০১৭ সালের ১৩ জুন ৫সেনা কর্মকর্তাসহ ১২০জন লোক মারা গিয়েছিল। ২০১৮ সালে জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে ২শিশুসহ ১১জন মারা যায়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড