মনিরুল ইসলাম মনি
ঈদ এলেই কেনাকাটার ধুম পড়ে যায় সবার। সবাই শপিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তবে ঈদে পরের জন্য ক‘জনই বা কেনাকাটা করে? তার উপর জীবনঘাতি করোনার আঘাতে অনেকটাই নাস্তানাবুদ নিন্ম আয়ের খেটে মানুষ। আর দেশের এই পরিস্থিতিতে এবারের ইদশপিংয়ের টাকা দিয়ে এসব অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন খোকসার তিন সহোদর। খোকসার প্রয়াত সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব আমিনুল ইসলাম আরজু ও কামরুন জাহান কবিতা দম্পতির তিন কৃতী সন্তান কুষ্টিয়ার খোকসার ১৮৭ পরিবারকে এসব সহায়তা দেন। তিন সহোদরের মধ্যে আরমান পান্থ একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ব্যবস্থাপক, আনিস আদনান কল্লোল ব্যবসায়ী ও খাদেমুল ইসলাম হিল্লোল দেশের বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার, বর্তমানে তিনি আমেরিকাতে ফিজিশিয়ান পদে কর্মরত।
প্রচারবিমুখ এই তিন সহোদর প্রকাশ্যে আসতে না চাইলেও অন্যকে উৎসাহিত করার জন্য এ প্রতিবেদকের পীড়াপিড়িতে অবশেষে তারা তথ্যপ্রচারের অনুমতি দেন।
এবারে তারা দুই অসহায় পরিবারকে অটোরিকশা ভ্যান কিনে দিয়েছেন। যার মূল্য প্রায় ৭২ হাজার টাকা। পাশাপাশি একশ জনকে দিয়েছেন শাড়ি ও লুঙ্গি। এছাড়াও ৬৭ জনকে দিয়েছেন খাদ্যসামগ্রী। এসব খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- ৫ কেজি চাল, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি করে চিনি, সেমাই, লবণ, সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, ২ কেজি আলু, একটি করে লাক্স সাবান ও হুইলসাবান।
বিতরণকৃত সহায়তাসামগ্রীর কিছু অংশ
এ ছাড়াও ২০ জনকে দেওয়া হয়েছে নগদ অর্থ। আর এসব অর্থ সব তাদের পরিবারের ইদ শপিংয়ের বাজেটের পুরোটা থেকে দেওয়া হয়েছে।
অসহায়দের সহযোগিতা করতে পেরে নিজের ভালোলাগার অনুভূতি প্রকাশ করে আরমান পান্থ বলেন, ছিন্নমূল মানুষের কাছে যখন এই ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়েছে তখন তাদের চোখে-মুখে ভালোবাসার ছাপ দেখেছি। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলো স্বামীহারা বিধবা, বৃদ্ধ মহিলা, সন্তানহীন পরিবার ইত্যাদি। এই মানুষের ভালোবাসার চাইতে বড় উপহার বা পাওয়া আর কি হতে পারে?
আনিস আদনান কল্লোল বলেন, সংকট একদিন কেটে তো যাবে। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই সময় ও সুযোগে সাধ্যমত সহায়তার হাত বাড়াতে চাই। মানুষের জন্য কাজ করার স্বপ্ন দেখি। মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি কিন্ত এই করোনা যুদ্ধ নিজ চোখে দেখছি। ডাক্তার, পুলিশ-প্রশাসন সামনের সাড়িতে কাজ করছে। আমাদের তো আর সেই সুযোগ নেই। তাই নিজের জায়গা থেকে যতটুকু করা যায় তাই করার চেষ্টা করছি। সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজ করুন। অসহায়দের পাশে দাঁড়ান।
ডা. খাদেমুল ইসলাম হিল্লোল বলেন, হাল ছেড়ে না দিয়ে আসুন সবাই একসাথে লড়াইটা চালিয়ে যাই। ইনশাআল্লাহ একদিন আমরা সফল হবো। আর আমার বাবা-মা ও আমাদের পরিবারের সবার জন্য আপনারা দোয়া করবেন। আর একজন চিকিৎসক হিসেবে বলব- আপনারা দেশ, পরিবার ও দেশের মানুষের স্বার্থে হলেও ঘরে থাকুন আর জরুরি কাজে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখুন।
ভবিষ্যতে আরজু-কামরুন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে খোকসার মানুষের পাশে বৃহৎ পরিসরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মহান এই তিন সহোদর।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড