নওগাঁ প্রতিনিধি
সংবাদ সম্মেলনের মাত্র চার দিন পর নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শামসুল আলম খাঁন সাময়িক বরখাস্ত হলেন।
গত ১৪ মে তিনি একই উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)’র বিরুদ্ধে টেন্ডার ছাড়াই ভবন ভাঙা, দুর্যোগ মোকাবেলা তহবিল থেকে ত্রাণ বিতরণের নামে পাঁচ লাখ টাকা তুলে এককভাবে ব্যয় করা এবং কৃষকের উপস্থিতি ছাড়াই লটারি করা সহ বিভিন্ন অভিযোগে বদলগাছি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্থানীয় সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার, ইউএনও মুহা. আবু তাহির ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে যোগসাজশের অভিযোগ করেন।
এই ঘটনার মাত্র চারদিন পর গত ১৮ মে সোমবার ৪৬.০০.০০০০.০৪৬.২৬.৪৮৮.২০২০-৪২৮ নং স্মারকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-১ শাখা থেকে উপ সচিব নুমেরী জামান স্বাক্ষরিত ওই আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডিএম. এনামুল হক গত ১৪ মে জেলা প্রশাসক নওগাঁ এর নিকট অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শামসুল আলম খাঁনের বিরুদ্ধে বদলগাছী থানার জিআর ২/১১(বদল), তারিখ ০৩ জানুয়ারি ২০১১ নং মামলা রয়েছে যা নওগাঁ বিজ্ঞ দায়রা জজ, ২য় আদালতে বিচারাধীন (মামলা নং ৪২৮/১১ দায়রা)। তিনি ওই মামলার ৩নং আসামী।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ মে বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ জেলা প্রশাসক এর নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮ মে উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ [ উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০১১] এর ১৩ (খ) ধারা অনুযায়ী শামসুল আলম খাঁনকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং প্যানেল চেয়ারম্যান-১ কে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মে) ভাইস-চেয়ারম্যান ইমামুল আল হাসান তিতু দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মঙ্গলবার উপজেলা চেয়ারম্যানের রুমে তাকে অফিস করতে দেখা গেছে।
এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলনে টেন্ডার ছাড়াই কীভাবে ইউএনও ভবন ভাঙলেন তার কোনো সুরাহা হলো না। অথচ ২০১১ সালের ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করা হলো। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।
শামসুল আলম খান বলেন, লোকমুখে শুনেছি আমি সাময়িক বরখাস্ত হয়েছি। এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি হাতে পাইনি। যে অভিযোগে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে তা ২০১১ সালের ঘটনা। ঐ অভিযোগে যদি আমাকে বরখাস্ত করা হয় তাহলে ২০১৯ সালে ভোট করতে দেওয়া হলো কীভাবে। আমার প্রার্থিতা বাতিল হলো না কেন?
তিনি বলেন, ইউএনও নীতিমালা অনুসরণ না করে টেন্ডার ছাড়াই দ্বিতল ভবন ভেঙে ফেলেছে ফলে ১০/১২ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে সরকার বঞ্চিত হয়েছে। এসব নিয়ে কথা বলায় আমাকে হয়রানী করার জন্য চক্রান্তমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছেন।
ভাইস-চেয়ারম্যান ইমামুল আল হাসান তিতু জানান, ডিসি অফিস থেকে ফোন করে দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য আমাকে বলা হয়েছে। কিন্তু দায়িত্ব হস্তান্তর সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমি পাইনি।
ইউএনও মুহা. আবু তাহিরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করো হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড