সারাদেশ ডেস্ক
নেত্রকোনা-৩ আসনের এমপি অসীম কুমার উকিলের নির্দেশে কেন্দুয়া উপজেলায় সরকারি রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত ১৩০০ স্বেচ্ছাসেবীদের কাজ স্থগিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই নিয়ে স্বেচ্ছাসেবীদের ও সাধারণ মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এর আগে, গত মাসের (এপ্রিল) মাঝামাঝি সময়ে করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে গঠন করা হয় সেচ্ছাসেবক টিম। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন এর মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক সংগ্রহ করা হয়। এতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আবেদন করেন বলে জানা যায়।
এর মাঝে ৭ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে প্রাথমিক ধাপে কেন্দুয়ার বিভিন্ন গ্রামে কাজ শুরু করা হয়েছিল।কাজের সুবিধার্থে প্রতিটি টিম ইউনিয়ন ভিত্তিক ভাগ করা হয়েছিলো। এতে দেখা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি বেসরকারি অফিস ছুটিতে থাকায়, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা ও স্কুল কলেজের শিক্ষকদেরকেও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে মাঠে কাজ করতে দেখা গেছে।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা মসজিদ, মন্দির ও বাজারে গিয়ে জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজসহ লিফলেট বিলি করতেও দেখা গেছে। তাছাড়া বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে খাদ্য সহযোগিতার আবেদন পেয়ে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার সামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিতেও দেখা গেছে।
এই নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান রুহুল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে স্বেচ্ছাসেবীদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে একটি লেখা শেয়ার করতেও দেখা গেছে। স্বেচ্ছাসেবীদের কাজ স্থগিতের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান রুহুল জানান, স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম এমপি মহোদয়ের নির্দেশ পেয়েই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্তটি সাময়িক কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত সাময়িক দেখানো হয়েছে, তবে নতুন করে শুরু হলে নতুন সদস্য সংযুক্তি করা হতে পারে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, এমপি মহোদয়ের অসন্তোষের কারণেই মূলত এই স্থগিতাদেশ। তবে সেচ্ছাসেবীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।
অন্যদিকে এই স্থগিতাদেশ নিয়ে শিক্ষিত সমাজ ও সচেতন মহলে বইছে সমালোচনার ঝড়। কেউ কেউ আবার এই সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলে মনে করছেন। এটা এমপি মহোদয়ের ভুল সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন স্বেচ্ছাসেবীদের বড় একটা অংশ।
এ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্য চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া, আইডি ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটি কেউই স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন না বলে এক স্বেচ্ছাসেবী ও তার পরিবার জানান। অনেকেই এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে এমপি অসীম কুমার উকিলকে ফোন করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
এর আগে আটপাড়ার গণেষ হাওরে স্বদলে ধান কাটতে গিয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধম্যে বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন এই এমপি।
তবে পরিচয়পত্র ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে এমপি অসীম উকিলের পুন:বিবেচনা করার দাবি জানান স্বেচ্ছাসেবীরা।
এ দিকে সচেতন নাগরিক ও শিক্ষিত সমাজের অনেকেই দাবি জানাচ্ছেন যারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছে ও করছে তাদেরকে করোনাযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে আবারো কাজে ফিরিয়ে নেওয়া হোক। জাতির দুর্দিনে এই স্বেচ্ছাসেবীরা জীবনের মায়া না করে সবার আগে এগিয়ে এসেছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড