ফরিদপুর প্রতিনিধি
করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। বিক্রি হচ্ছে না ফুল। তাই করোনাভাইরাসের প্রভাবে কপাল পুড়েছে ফুল চাষিদের। বিশেষ করে পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে আবাদি জমিতে ফুল চাষ করে এবার ধরা খেয়েছেন তারা।
সাম্প্রতিককালে ভাল মুনাফা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েন অনেক চাষি। খাদ্য সামগ্রীর বদলে এই ফুল হয়ে ওঠে তাদের জন্য অর্থকরী ফসল। বিশেষ করে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ হিসেবে অনেক যুবক ফুল চাষের দিকে এগিয়ে আসে।
ফরিদপুরে এসব চাষিদের হাত ধরেই বিভিন্ন প্রজাতির দেশী-বিদেশী ফুল চাষ শুরু হয়। স্থানীয় পর্যায়ে ধার দেনা করে অনেক যুবক এতে জড়িয়ে পড়েন। গত দুই-তিন বছরে ভাল লাভ হওয়ায় এদের অনেকে অধিক আয়ের আশায় ফুল চাষের পরিধি বৃদ্ধি করেন।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ হেক্টরের বেশি জমিতে দেশী ও বিদেশী জনপ্রিয় ফুল জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্র মল্লিকা, গোল্ডেল স্টিক, রজনী গন্ধা, গোলাপসহ বিভিন্ন প্রকার ফুলের চাষ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, সারা বছরই ফুলের চাহিদা থাকে তবে চাষিরা বিভিন্ন দিবসকে সামনে রেখে ফুল চাষ বাড়িয়ে দেন। মার্চ ও এপ্রিল মাসে চাহিদা বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ফুল চাষ করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন কিন্তু করোনার প্রভাবে এবার তারা ক্ষতির সম্মুখীন।
সদর উপজেলার আলীয়াবাদ ইউনিয়নের কয়েকটি ফুল বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, ফুল বিক্রয় বা বাজারজাত করতে না পারায় গাছের ফুল গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু কিছু বাগানের ফুল ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছে।
ফরিদপুরের গদারধর ডাঙ্গী এলাকার জারবেরা ফুলে চাষি আনোয়ার হোসেন জানান জানান, অনেক ফুল গাছ বাঁচিয়ে রাখার জন্য ফুল ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছি। মজুরের টাকা দিতে পারছিনা।
আরেক ফুল চাষি লিয়াকত হোসেন বলেন, গত দু’তিন বছর এই ফুল চাষে ভাল আয় হয়েছে। চলতি মৌসুমে তাই ঋণ করে আরও কয়েক প্রকার ফুলের আবাদ করেছি। কিন্তু এবার আমাদের কপাল পুড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আর্থিক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
লিয়াকত বা আনোয়ারের মতো আরো অনেক ফুল চাষিদের এখন একই দুরবস্থা। তারা এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিকল্প পথের সন্ধান করছেন। অনেকে এই ফুল চাষের অনিশ্চয়তা কাটিয়ে তুলতে ধান কিংবা সবজির মতো অর্থকড়ি ফসল আবাদের কথাও চিন্তাভাবনা করছেন।
ফরিদপুরের গেরদা ইউনিয়নের খামারী আবু বাকের সাব্বিরের মতে, এসব জাতের ফুলের আবাদ না করে বড়জোর সরিষা কিংবা সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করা যেতে পারে। তাতে ক্ষেতের ফসল তুলে দিনশেষে ফেলে দিতে হবে না।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড