• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভুল আসামি আটক, ভিক্ষার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ 

  গাজীপুর প্রতিনিধি

০৪ মার্চ ২০২০, ২০:৪৪
ভুক্তভোগী কামাল হোসেন
ভুক্তভোগী কামাল হোসেন ( ছবি : দৈনিক অধিকার )

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও নামের মিল থাকায় ভুল করে এক কাঠমিস্ত্রীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার সময় ৪ হাজার টাকা ঘুষ নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে শ্রীপুর থানার এসআই হারুনের বিরুদ্ধে।

পুলিশের ভুলে আটক হওয়া ভুক্তভোগীর নাম কামাল হোসেন (৪৫)। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের মাহমুদ উল্লাহর ছেলে।

ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানায়, পুলিশকে যে টাকাটা দেওয়া হয়েছে সেই টাকা হলো আটক হওয়া ব্যক্তির প্রতিবন্ধী সন্তানের ভিক্ষা করা টাকা।

ভুক্তভোগী কামাল হোসেন জানান, সোমবার (২ মার্চ) বিকাল ৪টায় আমাকে আমার বাড়ি থেকে আটক করে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে রাত ৮টার দিকে থানায় নিয়ে যায়। থানার ভেতরে আমাকে ১ ঘণ্টা আটকে রেখে রাত ৯টার দিকে থানা থেকে ছাড়েন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় পুলিশ ৪ হাজার টাকা নিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে টাকা লেনদেন করেছে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আশরাফুল ঢালী। এ ঘটনায় আমার পরিবারের থানায় যাতায়াতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ টাকা। পুলিশের ভুলে আমি আটক হলেও ৫ হাজার ৩৫০ টাকা ব্যয়ে আমি থানা থেকে ছাড়া পাই। আমি নির্দোষ থাকার পরও আমার থেকে টাকা নেওয়ায় পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

মঙ্গলবার (৩ মার্চ) বিকালে ভুক্তভোগী পরিবারসহ এলাকাবাসী এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রকৃত আসামি ১১ বছর ধরে মালয়েশিয়া থাকে। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আলী। তার নামে ২০০৫ সালে একটি বন মামলা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, সোমবার বিকালে যাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তার বাবার নাম মাহমুদউল্লাহ। প্রকৃত আসামির বাবার নাম মোহাম্মদ আলী। প্রকৃত আসামি যে মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত তার স্ত্রীও একই মামলার আসামি। তার নাম শিরিনা আক্তার। আর পুলিশের ভুলে যিনি ঘুষ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন তার স্ত্রীর নাম জায়েদা খাতুন। জায়েদা খাতুনের নামে কোনো মামলা নেই। এতসব পার্থক্য থাকার পরেও মেম্বারসহ প্রায় একশ মানুষ এসব বিষয়ে পুলিশকে জানালেও এসআই হারুন কোনো কর্ণপাত করেননি। তাই ঘুষখোর পুলিশের শাস্তি চাই।

এ ব্যাপারে কাওরাইদ ইউপি সদস্য আশরাফুল ঢালী বলেন, যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার নামে ইতোপূর্বে কোনো মামলা নেই। প্রকৃত আসামির মামলার ব্যাপারে আমিসহ এলাকার সবাই জানে। ভুল আসামি কামাল গ্রেপ্তারের সময় আমি নিজে উপস্থিত হয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে ছিলাম। তারপরেও পুলিশ কামালকে নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই হারুন মিয়া জানান, নামের মিল থাকায় ওসির নির্দেশে তাকে আটক করে থানায় আনা হয়। তবে টাকা লেনদেনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, কামাল নামে একজনকে ধরে আনা হয়েছিল। বাবার নাম কিছুটা মিল থাকার কারণে তাকে আটক করা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে আমাকে বিষয়টি অবগত করছিল পরে বিভিন্নভাবে বিস্তারিত যাচাই করে আমরা তাকে ছেড়ে দিয়েছি। ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নাই। অভিযোগ পেলে আমরা দেখবো।

আরও পড়ুন: গাজীপুরে গাঁজাসহ ২ মাদক কারবারি আটক

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, কোনো অপরাধই ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। লিখিত অভিযোগ দিলে আমাদের ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়।

ওডি/এসএএফ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড