ভালুকা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় অবৈধভাবে চাল দেওয়ার সময় হাতে নাতে চার ট্রাক চাল আটক করলেও রহস্যজনক কারণে তিন ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সবগুলো ট্রাক ছেড়ে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ভালুকা উপজেলা খাদ্য গুদামে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভালুকা উপজেলার মিল মালিক সমিতির সভাপতি ও খাদ্য গুদামের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভালুকা খাদ্য গুদামে সরকারি ধান-চাল ক্রয় করার অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভালুকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চাল ভর্তি চারটি ট্রাক আটক করে ট্রাকের চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে চালকরা জানায়, চাল ভর্তি ট্রাকগুলো তারা রংপুরের একটি মিল থেকে নিয়ে এসেছে। ট্রাকের চালের মালিক ভালুকার সিরাজ সাহেব। কিন্তু চালকরা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি চেয়ারম্যানকে। পরে আবুল কালাম বিষয়টি ময়মনসিংহ ১১ আসনের সংসদ সদস্য ও ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনওকে অবগত করেন।
এরপর মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ কামাল খাদ্য গুদামে উপস্থিত হয়ে ট্রাকের চালক ও সারম মিল মালিক মকবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে সিরাজও উপস্থিত ছিলেন, সেখানেও চালকরা স্বীকার করেন চাল তারা রংপুরের একটি মিল থেকে এনে ভালুকার খাদ্য গুদামে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন সিরাজের নামে। কিন্তু সিরাজ তার চাল নয় বলে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে রহস্যজনক কারণে সন্ধ্যায় ৬০ টন চাল ভর্তি চারটি ট্রাক ছেড়ে দেন ইউএনও ও গুদাম কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এক কৃষকের নামের ধান আরেক কৃষক গুদামে বিক্রি করতে এসে ধরা পড়েন। এ ব্যাপারে গুদাম কর্মকর্তা নিজেকে বাঁচাতে পরের দিন দুই ছাত্রের নামে ভালুকা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অথচ গুদাম কর্মকর্তা আবুল বাসার নিজেই ওই ছাত্রদের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য সরকারি বস্তা সরবরাহ করেছিলেন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি মাসুদ কামাল দৈনিক অধিকারকে জানান, রংপুর থেকে চাল নিয়ে এসে ভালুকা খাদ্য গুদামে বিক্রির বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়। এই কাজের সঙ্গে জড়িত যারা রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভালুকার খাদ্য কর্মকর্তা হাসান আলীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং এই বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা খাদ্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে জানান, এসব বিষয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
ওডি/এমএমএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড