• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ফরিদপুরে সূর্যমুখী চাষে সম্ভাবনার হাতছানি

  হারুন আনসারী, ফরিদপুর

০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৪৪
ফরিদপুর
সূর্যমুখী চাষ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ফরিদপুরে সূর্যমুখী ফুল চাষের কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে প্রণোদনা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই খাতে কৃষির অপার সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে। জেলা সদরের ডোমরাকান্দিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে বিএডিসির ডাল ও তৈল বীজ খামার ভরে উঠেছে এই সূর্যমুখীর হলুদ গালিচায়।

সরেজমিনে সূর্যমুখীর ক্ষেত পরিদর্শনকালে দেখা যায়, দুই একর জমিতে ফুটে রয়েছে হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুল। বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের ফুলের বীজ বপন করে প্রথমে চারা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দুই দিনের মধ্যে সেই চারা রোপণ করা হয়েছে বিএডিসির পূর্ব দিকে চারটি প্লটে।

খামারের মালি মিজানুর রহমান খান জানান, এ দুই একর জমিতে অনুমানিক ২০ হাজার সূর্যমুখী গাছ রয়েছে। সারি করে বীজ বপন করা হয়েছে। এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব আনুমানিক ৩০ সেন্টিমিটার। এক সারিতে একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব ৮ থেকে ১০ সেন্টিমিটার। আকার ভেদে একটা ফুল থেকে ১০০ গ্রাম থেকে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত বীজ পাওয়া যায়। চলতি মাসের শেষ থেকে মার্চের শুরুর মধ্যে এ বীজ সংগ্রহ করা যাবে।

বিএডিসির উপসহকারী পরিচালক এম এ জাকের বলেন, গত বছর সমপরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে বীজ উৎপাদন হয়েছিল ৯শ কেজি। এ বীজ বিএডিসির সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলার বিএডিসির বিপণন কেন্দ্র থেকে বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি ৭৫ টাকা দরে বিক্রি করে এই বীজ থেকে গত বছর ৬৭ হাজার ৫শ টাকা পাওয়া গেছে। বিপরীতে খরচ হয়েছিলো ৪৭ হাজার টাকা।

সূর্যমুখী চাষ লাভজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বীজ থেকে তেল করা হলে দুই একর জমি থেকে উৎপাদিত বীজে ৪৫০ থেকে ৪৬০ লিটার তেল পাওয়া যায়। প্রতি লিটার তেল ২০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও কৃষকদের ৪০ হাজার টাকা আয় থাকবে। রোপণ থেকে তেল উৎপাদন পর্যন্ত চার মাসের মধ্যে দুই একর জমি থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

এম এ জাকের আরও বলেন, সময় একটু বেশি লাগে এবং টিয়া পাখিসহ বিভিন্ন পাখি থেকে ফুলগুলো রক্ষা করা কষ্টসাধ্য বিধায় সাধারণ চাষিরা সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত হন না। অবশ্য বিএডিসি এটিকে জনপ্রিয় করে তোলা ও সাধারণ কৃষককে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ নেবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরে বিএডিসির এই ডাল ও তৈল বীজ খামারে গত এক যুগ ধরে সূর্যমুখীর চাষ করা হচ্ছে। তবে এ বীজ দিয়ে তেল উৎপন্ন করা হয় না। বীজ হিসেবেই সাতক্ষীরা, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন খামারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন : চালককে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত করার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে এই প্রথম এ বছর ১০ জন চাষিকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ফরিদপুর সদরে পাঁচ ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচজন চাষি রয়েছে। প্রতি চাষিকে এক বিঘা জমির অনুপাতে সূর্যমুখী ফুলের বীজ, সার, কীটনাশক দেওয়া হয়েছে। তবে আমন ধান জমি থেকে তুলে নেওয়ার পর কৃষকরা সূর্যমুখী চাষ করেছেন। গাছগুলো ভালো হয়েছে এবং ফুল আসার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ ১০ জন চাষি সাফল্য পেলে আগামীতে কৃষি বিভাগের প্রণোদনার আওতা আরও বাড়ানো হবে।

ওডি/জেএস

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড