যশোর প্রতিনিধি
যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় নববধূসহ তিন নারীর মৃত্যুর ঘটনায় গাড়ির গতিবেগ ১৮০ কিলোমিটার ছিল বলে জানা গেছে।
এ দিকে, প্রাইভেট কারের চালক ছিল বর শফিকুল ইসলাম জ্যোতি নিজেই। তাকে আটক করেছে পুলিশ। সে মাদকাসক্ত ছিল কি না তা পরীক্ষার জন্য বিকাল ৩টার দিকে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত পিয়াসের চাচাতো ভাই আব্দুল করিম জানান, পরিবারের অভিযোগ না থাকায় তানজিলা ইয়াসমিন (২৮), তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসা (২৫) ও তাবাসসুম তিথীর (২৬) লাশ পরিবারের কাছে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জানাজা শেষে তাদের দাফনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, একই পরিবারের তিনজন নিহতের ঘটনায় যশোর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে হাজির হন। এ সময় তারা শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এ সময় কীভাবে এবং কী কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিল। কেউ বলছেন, গাড়ির গতিবেগ ছিল কমপক্ষে ১৮০ কিলোমিটার। কেউ বলছেন, মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ার তামিম জানান, জ্যোতি গাড়ি চালায় খুব রাফভাবে। একই কথা বলছেন শহরের আর এন রোডের মোটর পার্টস ব্যবসায়ী কামাল। তিনি জ্যোতিকে অভিযুক্ত করেছেন।
আবার কেউ কেউ বলছেন, শুক্রবার নিজেই গাড়ি চালিয়ে জ্যোতি যশোরে এসেছেন। তাতে যথেষ্ট ক্লান্ত হয়ে পড়ে সে। তারপর রাতে ফের গাড়ি চালানোর সময় সে দুর্বল হয়ে পড়ে। যার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতরা জানিয়েছেন, প্রাইভেটের গতিবেগ খুব বেশি ছিল। এ সময় জ্যোতিকে গাড়ি স্লো করার অনুরোধ জানালেও সে শোনেনি।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানান, নিহত পিয়াসার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতিকে আটক করা হয়েছে। সে মাদকাসক্ত ছিল কি না তা পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং মাদকাসক্তের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : গাইবান্ধায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কলেজছাত্রের মৃত্যু
উল্লেখ্য, শহরের লোন অফিস পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জ্যোতির সঙ্গে আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেলের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ও ইয়াসিন আলীর মেয়ে তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসার (২৫) দেড় বছর আগে বিয়ে হয়। আগামী ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে পিয়াসাকে তাদের তুলে নেওয়ার কথা ছিল। এ কারণে জ্যোতির বাড়িতে আলোকসজ্জা করা হয়। পিয়াসা রাতে ফোন করে জ্যোতিকে জানান, তারা আলোকসজ্জা দেখবেন এবং শহর ঘুরবেন। এ কারণে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে জ্যোতি তার নিজস্ব প্রাইভেটকার নিয়ে বের হন।
এ সময় তাদের সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন- পিয়াসার বোন তানজিলা ইয়াসমিন (২৮) ও পিয়াসার খালাত ভাই মঞ্জুর হোসেনের স্ত্রী আফরোজা তাবাসসুম তিথী (২৬), পিয়াসার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি (২৮), আফরোজা তাবাসসুম তিথীর মেয়ে মানিজুর (৩), জ্যোতির বন্ধু শাহিন হোসেন (২৩) ও হৃদয় (২৮)।
তারা আলোকসজ্জা দেখে ও স্বজনদের দাওয়াত দিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের পালবাড়ি এলাকা থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। ফেরার পথে রাত ১টায় যশোর শহরের পুরাতন কসবা শহীদ মসিয়ূর রহমান সড়কের (আকিজের গলি) পাশে থাকা একটি বিল্ডিংয়ের প্রাচীর ও বিদ্যুতের খুঁটিতে সজোরে আঘাত করে গাড়িটি। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। গাড়িতে থাকা অন্যরা গুরুতর আহত হন। আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড