মো. সাঈদ মাহাদী সেকেন্দার
খুলনার ফুলতলা উপজেলার গাড়াখোলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আকরাম গাজী। ছোটবেলা থেকে কৃষি কাজ করেই তিনি বেড়ে উঠেছেন। আকরাম গাজীর আপ্রাণ চেষ্টায় আজ তাকে এনে দিয়েছে কৃষিতে সফলতা।
নিজের বাড়ির আঙ্গিনার প্রায় এক একর জমিতে শুরু করেন কৃষি কাজ। তবে সেটি গতানুগতিক ধারা থেকে ভিন্ন। কারণ তিনি যে কাজটি শুরু করেছেন সেটি কৃষি পদ্ধতির সঙ্গে খুব বেশি পরিচিত নয়। সৌদি আরবে উৎপাদিত খেঁজুর আকরাম গাজী তার মেসার্স গাজী নার্সারিতে উৎপাদন করেন।
আকরাম গাজী জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমান ঢাকায়। ২০০৬ সালে ল্যাবএইড হাসপাতালের পাম্প অপারেটর হিসেবে চাকরি শুরু করেন। ছাদের উপরেই পানি সরবরাহ সংক্রান্ত তার বিভিন্ন কাজ ছিল। রমজানে ইফতার শেষে খেজুরের বিচি ছাদে ফেলতেন। এরপর তা থেকে খেজুরের চারা হিসেবে বেড়ে ওঠে। কৌতূহল বশত তিনি এর পরিচর্যা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি নিজে এ সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বাংলাদেশে কয়েকটি জায়গায় এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে। ফলে তিনি নিজেও সৌদির খেঁজুরের বাগান গড়ে তুলবেন বলে সীদ্ধান্ত নেন। ২০০৯ সালে চাকরি ছেড়ে ছাঁদে বেড়ে ওঠা খেজুরের চারা নিয়ে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় রোপন করেন। শুরু করেন খেঁজুর গাছের চারা যত্ন নেওয়ার কাজ। এ বিষয়ে তিনি বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকটা সফল হতে শুরু করেন। নিজ বাগানে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন।
আকরাম গাজী সৌদি খেজুর গাছ পরিচর্যার পাশাপাশি নার্সারিতে শুরু করেন ড্রাগন ফল, চুই-ঝাল, ভিয়েতনামী নারকেল, পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত তিন, জয়তুন ফল, থাই ছফেদা, বিভিন্ন জাতের আম, কমলা, লেবু ও চন্দনসহ প্রায় ৬০ রকম ফলজ ও ঔষধি গাছের চাষ। সৌদি খেজুরের মধ্যে তার নার্সারিতে উল্লেখযোগ্য জাত হলো আর্যুয়া, মেজুইন, মরিয়ম, আনবারা।
তার এই নার্সারিকে তিনি ফলগবেষণা নার্সারি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। তাকে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতা এনে দিয়েছে তার এ নার্সারি। ২০১২ থেকে তিনি এ নার্সারি থেকে আয় করা শুরু করেন। বর্তমানে বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকা আয় করেন।
ইতোমধ্যে আকরাম গাজী তার অবদানের স্বীকৃতির জন্য উপজেলা পর্যায়ে ফল গবেষণা পুরস্কার, কৃষি মেলায় সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ থেকে ফল গবেষণায় শ্রেষ্ঠ নার্সারির পুরস্কার অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: নিখোঁজের ৫ দিনেও সন্ধান মেলেনি নববধূর
আকরাম গাজী বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষ যদি প্রত্যেকে ১০টি করে ফলজ গাছের চারা রোপন করে তাহলে দেখা যাবে বাংলাদেশে ফল ঘাটতি থাকবে না। বরং দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড