• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সুনামগঞ্জ সদর হানাদার মুক্ত দিবস আজ

  সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:০৫
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবসের র‌্যালি
সুনামগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবসের র‌্যালি (ছবি : দৈনিক অধিকার)

আজ ৬ ডিসেম্বর, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়েছিল।

এই দিনকে ঘিরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড, জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনারে শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হায়াতুন নবী, সিভিল সার্জন ডা. আশতোষ দাস, পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, নুরুল ইসলাম বজলু, সবুজ কান্তি দাস জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরুল মোমেন, মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বেরিগাঁও ৫ নম্বর সেক্টর ছিল ভারতের বালাট সাব সেক্টরের অধীনে। এখানে ৭১ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্থানি বাহিনীর সম্মুখে সমরে তুমুল যুদ্ধ হয়। জেলার অন্যতম যুদ্ধ ছিল এটি। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বেরিগাঁও গ্রামে পাকিস্থানী বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আরও দেড় শতাধিকসহ প্রায় দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধ শহীদ হন। এছাড়া এই যুদ্ধে বহু পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।

এছাড়া ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে জীবিত ধরে নিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী। দুজন মুক্তিযোদ্ধা পালিয়ে আসলেও পরে বেরিগাঁও ৫নম্বর সেক্টরে আরো ২২ জনকে মেরে ফেলে পাক বাহিনী। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ এনে সুরমা ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে গণকবর দেয় পাকিস্থানীরা। বাকিদের ধরে নিয়ে হানাদার বাহিনীর সদস্যরা সুনামগঞ্জের আহসানমারা ফেরীঘাটে নিয়ে দুজনকে গুলি করে নদীতে ফেলে দেয়।

এলাকার মুক্তিকামী মানুষ পরে নদী থেকে নিহত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ তালেব ও কৃপেশ দাসের লাশ এনে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার উজানীগাঁও গ্রামে তাদের সমাহিত করা হয়। এছাড়াও হানাদার বাহিনীর সদস্যরা জেলার ছাতকে ১৪ জন, দোয়ারাবাজারে ২৬ জন, জামালগঞ্জে ১০ জন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ১২ জন, দিরাইয়ে ১৫ জন, জগন্নাথপুরে ১০ জন, তাহিরপুর উপজেলায় ৮ জন ও শাল্লা উপজেলায় একজন মুক্তিযোদ্ধাকে গুলি করে হত্যা করে হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। এ যুদ্ধের পর অনেকেই মুগাই নদী পাড় হয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান। পরবর্তীতে বর্ননা করেন ভয়াবহ স্মৃতির। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে গণকবর হিসেবে উল্লেখযোগ্য নলুয়া গ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার নুরুল মোমেন বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের ৪৯ বছর পর ও সুনামগঞ্জ জেলার অসংখ্য যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এখনো অনেকেই পঙ্গু হয়ে, কেউ বা রিকশা চালিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করে চলেছেন। কিন্তু বিগত সরকার কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে তারা যথাযথ মূল্যায়ন পাননি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ায় তাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তাদের অন্ন-বন্ত্র বাসস্থান ও রেশনের ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করবে বিজয়ের মাসে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন জেলার যুদ্ধাহত সকল মুক্তিযোদ্ধারা।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড