চন্দনাইশ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
বাঁচার তাগিদে মানুষ কোনো না কোনো পেশায় নিয়োজিত। সেসব পেশার মধ্যে একটি পেশা কুলিগিরি। শ্রমের দিক থেকে বোঝা বহন অত্যন্ত কঠিন কাজ হলেও পরিবারের মুখে হাসি ফোঁটাতে সেই কাজটিই করে যাচ্ছেন ৬০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ।
বেঁচে থাকার তাগিদে কুলিগিরি করছেন দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন পাইকারি সবজি বাজারে। খুব ভোরে শঙ্খ নদীর তীরে সবজি বোঝাই নৌকা থেকে সবজির টুকরা বহন করে যা আয় হয় তা দিয়েই পরিবারের ৭ সদস্যের মুখে হাসি ফোটান।
এক সময় ৫০-৬০ কেজি ওজনের সবজির টুকরি বহন করতে পারলেও এখন ২০-৩০ কেজি ওজনের বেশি বহন করতেও কষ্ট হয় তার। কাজ করার শক্তি নেই তবুও কারো কাছে হাত পাতছেন না তিনি।
বলছি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন পাইকারি সবজি বাজারের কুলি সিরাজুল ইসলামের কথা। গত ৩০ বছর ধরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ পাইকারি সবজি বাজারে কুলিগিরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। স্ত্রী, চার মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের কাটগড় গ্রামে বসবাস করছেন তিনি।
বৃদ্ধ কুলি সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ‘গত ৩০ বছর ধরে সবজির টুকরি বহনের কাজ করছি এই বাজারে। আগে শরীরে শক্তি ছিলো তাই শঙ্খ নদী পথে আসা সবজি বোঝাই নৌকা থেকে ৫০-৬০ কেজি ওজনের টুকরি বহন করতে পারতাম, প্রতিদিন আয় হতো ৭শ টাকা থেকে এক হাজার টাকা। এখন ২০-৩০ কেজি ওজনের বোঝা বহন করলে অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠি। এখন দৈনিক আড়াইশ থেকে ৩শ টাকার মত আয় হয়। স্ত্রী অন্যের বাসা-বাড়িতে কাজ করে। চার মেয়ের মধ্যে ২ জনই বিবাহের উপযুক্ত হয়েছে। উপার্জন করার মতো বয়স হয়নি একমাত্র ছেলের।’
আবু তাহের ড্রাইভার নামে একজন চাষী বলেন, ‘শঙ্খ চরে সবজি চাষাবাদ করে আমার উৎপাদিত সবজি বিক্রি করছি দীর্ঘদিন। সেই সুবাধে সিরাজুল ইসলামকে দেখছি অনেক দিন ধরেই। আগে ৫০-৬০ কেজি ওজনের সবজির টুকরি বহন করতে পারলেও এখন ২০-৩০ কেজি ওজনের সবজির টুকরি বহন করতেও কষ্ট হয় তার। চার মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সে খুবই কষ্টে আছে। বিবাহযোগ্যা মেয়ে দুটোর জন্য পাত্র আসলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিয়ে দিতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরীব-দুঃখীদের কতো কিছুই তো দিচ্ছে। সিরাজুল ইসলামের জন্যও যদি সরকার কিছু করতো, তাহলে তার অনেক উপকার হতো।’
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড