সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় গুলশানারা পারভীন পান্না নামে এক ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে জোরপূর্বক ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে উল্লাপাড়া পৌর মেয়র এস এম নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। পেশায় শিক্ষিকা গুলশানারা পারভীন পান্নাকে প্রায় ২ বছর পূর্বে জোরপূর্বক ভাগিয়ে নিয়ে মেয়র বিয়ে করেন বলে জানা যায়। কিন্তু ক্ষমতাসীন মেয়রের ভয়ে মামলা-মোকদ্দমা বা অভিযোগ পর্যন্ত করার সাহস পায়নি গুলশানারার সাবেক স্বামী ব্যবসায়ী রাজন আহমেদ।
এমন বিতর্কিত ঘটনায় উল্লাপাড়া এলাকার সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইলেও সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হানিমুনও করেন মেয়র নজরুল। হানিমুন থেকে ঘুরে এসে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পৌর এলাকার সকল প্রোগ্রামসহ নানা অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় স্ত্রী পান্নাকে নিয়ে যাতায়াত শুরু করেন মেয়র নজরুল। তবে পৌর মেয়রের দ্বিতীয় স্ত্রীর হানিমুনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হবার পর সবাই মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
এ দিকে, মেয়র নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর থেকেই স্কুলে অনিয়মিত আসছেন গুলশান পারভীন পান্না। এক দিনের ছুটি নিয়ে স্কুল ছেড়ে এই দীর্ঘ সময় ধরে অনুপস্থিত তিনি। তবে স্কুলে না এলেও বেতন ঠিকই তুলে নিচ্ছেন পান্না। পৌর মেয়রের স্ত্রী হওয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিংবা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা মুখ খুলতে নারাজ।
অভিযোগে জানা যায়, উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম কয়েক বছর আগে পৌর এলাকার ঝিড়িকা বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। সেই অনুষ্ঠানেই ১ সন্তানের জননী সহকারী শিক্ষিকা গুলশানারা পারভীন পান্নার প্রতি কুদৃষ্টি পড়ে মেয়র নজরুল ইসলামের। এরপর থেকেই বিভিন্ন প্রলোভন দেখায় পান্নাকে। এক পর্যায়ে কোনোভাবেই যখন গুলশানারা পারভীন রাজি হয়নি তখন ক্ষমতার দাপট ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রভাব দেখিয়ে উল্লাপাড়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রাজন আহমেদের স্ত্রী গুলশানারা পারভীন পান্নাকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন এবং এ বিষয়ে কোনো মামলা-মোকদ্দমা করলে রাজন ও তার সন্তানকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। ১৬ বছর বয়সী সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে রাজন কোনো ঝামেলায় নিজেকে জড়াননি। এরপর থেকেই রাজনকে সবসময় চাপের মুখে রেখেছেন মেয়রের সন্ত্রাসী বাহিনী।
গুলশানারা পারভীন পান্নার সাবেক স্বামী ব্যবসায়ী রাজন আহমেদ রবিবার (১০ নভেম্বর) বিকালে বলেন, আমার দীর্ঘ ১৮ বছরের সংসার ভেঙে তছনছ করে দিয়েছেন মেয়র নজরুল ইসলাম। আমার সংসারে সাঈদ সামির রিয়াদ নামে একমাত্র সন্তান রয়েছে। রিয়াদ উল্লাপাড়া মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। আমার স্ত্রীকে জোরপূর্বক মেয়র সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে বিয়ে করেছেন এবং হুমকি দিয়ে বলে গেছেন, এ বিষয়ে মুখ খুললে আমাকে ও আমার সন্তানকে হত্যা করা হবে। আমার স্ত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ে করায় আমার মান-মর্যাদা সে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে। আমার সন্তান স্কুলে মর্যাদা পায় না। বহু কষ্টে জীবনযাপন করছি। তাদের ভয়ে আমি সন্তানকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, গুলশানারা পারভীন পান্না ঝিড়িকা বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকতে মেয়র নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমার বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। তবে স্কুল ফাঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, পৌর এলাকায় স্কুল, পৌর এলাকার মেয়রের স্ত্রী, ফাঁকি দিলে আমাদের কিছু করার থাকে না।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, গুলশানারা পারভীন পান্না আমার স্ত্রী। তবে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড