রাউজান প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় আত্মহত্যার চেষ্টার পর দীর্ঘ ৬ মাস মুমূর্ষু অবস্থায় থেকে রুনা আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে ওই তরুণী।
নিহত স্কুলছাত্রী রুনা উপজেলার চিকদাইর ইউনিয়নের মাওলানা বদিউর রহমানের বাড়ির দিনমজুর আবদুল মান্নানের মেয়ে ও চিকদাইর শাহাদাৎ ফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্রী।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত স্কুলছাত্রী রুনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রতিবেশী রুবেলের আত্মীয় পটিয়ার শিকলবাহা এলাকার জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান বাড়ির কাজী নজরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম অভির। গত ৩ এপ্রিল চিকদাইরে ওরশ উপলক্ষে মেলায় গেলে প্রতিবেশী কয়েকজন যুবক রুনা ও তার প্রেমিকের গতিবিধি লক্ষ করায় প্রেমিক অভি তাকে রেখেই মেলা থেকে সটকে পড়ে। এরপর মেলায় প্রতিবেশী নুরুল আমিনের ছেলে মঞ্জুর হোসেন (২২), কবির আহম্মদের ছেলে কফিল উদ্দিন (২০), মো. বশিরের ছেলে হেলাল (২০) ও ফয়েজ আলীর ছেলে বেলালসহ (১৯) অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন স্কুলছাত্রী রুনাকে উত্ত্যক্ত করে।
পরবর্তীকালে ঘটনার দিন ৩ এপ্রিল রুনা আক্তার আত্মহত্যার চেষ্টাকালে পরিবারের লোকজন তাকে ফাঁসির রশি থেকে নামিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর উত্ত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রুনা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন স্কুলছাত্রী রুনার বাবা আব্দুল মান্নান।
চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে ৩ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত এক মাস ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাড়িতে ফিরে আসলেও রুনা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সর্বশেষে বুধবার ভোর ৪টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে স্কুলছাত্রী রুনা।
এ দিক, চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে করা মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআইকে) প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেয় আদালত। এ মামলায় রুনাকে নিয়ে মেলায় বেড়াতে যাওয়া আরিফুল ইসলাম অভিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে অভিকে মামলায় সাক্ষী করে আসামি বেলালকে অব্যাহতি দিয়ে করা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রামের সাব ইন্সপেক্টর মো. কামাল আব্বাস মামলাটি তদন্ত করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। রুনা আক্তারের শ্লীলতাহানির ঘটনায় প্রতিবেশী নুরুল আমিনের ছেলে মঞ্জুর হোসেন (২২), কবির আহম্মদের ছেলে কফিল উদ্দিন (২০), বশির উদ্দিনের ছেলে হেলাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে এই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেপায়েত উল্লাহ দৈনিক অধিকারকে জানান, ঘটনাটি ছয় মাস আগে ঘটলেও কেউ বিষয়টি থানায় জানায়নি। মারা যাওয়ার পর আমরা জেনেছি, তার পরিবার আদালতে একটি মামলা করেছে। এ সময় নিহত রুনার লাশটি ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড