• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

লাক্স সুপারস্টার না হলেও ৩৭তম বিসিএসে চ্যাম্পিয়ন তানজিমার গল্প

  ক্যারিয়ার ডেস্ক

১৪ জুলাই ২০১৯, ১৬:৫৬
তানজিমা আঞ্জুম সোহানিয়া
ছবি : তানজিমা আঞ্জুম সোহানিয়া

২০১০ সালের লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন না হলেও ৩৭তম বিসিএসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তানজিমা আঞ্জুম সোহানিয়া। ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন এবং সম্প্রতি ম্যাজিস্ট্রেট পদে যোগদানও করেছেন।

পিতা ডা. আজিজুল হক খান একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা সালমা সুলতানা একজন গৃহিণী। কন্যা তানজিমা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন- ছোটবেলা থেকেই তানজিমা খুব মেধাবী। সব সময় ক্লাশে প্রথম স্থানের অধিকারী। ৫ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল। পরবর্তীতে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সাফল্য অর্জন করে।

পড়াশোনার মাঝেই শুধু তার সীমাবদ্ধতা ছিল না, সকল সৃজনশীল কাজেই সমান আগ্রহ ছিল তার। বিভিন্ন নাচ, গান ও অভিনয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অর্জনের ঝুড়িতে জমা করেছে অনেক পুরস্কার। এদের মধ্যে রয়েছে গান ও একক অভিনয়ে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার, কাবস্কাউট জাতীয় পর্যায়ে রানার্স আপ পুরস্কার।

মা-বাবার অনুপ্রেরণায় সফলভাবে পথ চলতে চলতে ২০১০ সালে লাক্স সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নিজের নাম লিখান। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০১০ এর সেরা সাতে স্থান দখল করেন এবং ক্লোজ আপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতে নেন। এরপর কয়েকটি টিভিসিও করেছেন এই ঢাবি লাক্স সুন্দরী।

বিশ্ববিদ্যালয় গণ্ডি পেরোতেই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকেন। আর তাই প্রস্তুতি শুরু করেন। এই বিসিএস প্রস্তুতি নিয়ে তানজিমা আঞ্জুম সোহানিয়াকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়ার বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দেশ-বিদেশের ঘটনাগুলো সম্পর্কে জানতেন। প্রস্তুতির জন্য প্রতিদিন বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়তেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখতেন এবং যে কোনো বিষয় নিয়ে মুক্ত হস্তে লিখার চেস্টা করতেন।

উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগ হওয়ায় গণিত আর ইংরেজিতে দক্ষতা ছিল। প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য প্রতিদিন একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করতেন ও তা পূরণ করতেন। পড়ার মাঝে যেনো একঘেয়েমিতা না আসে, সেজন্য তিনি দৈনিক ৩ থেকে ৪টি বিষয় পড়তেন।

৩৭তম বিসিএস এর লিখিত পরীক্ষা শেষে তার মনে হতে থাকে যে ভাইবার জন্য তার ডাক আসবেই। আর সে আত্মবিশ্বাস নিয়ে মনের ভয়কে জয় করে একটু একটু করে ভাইবার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এই প্রস্তুতিতে ছিলো দৈনিক ২টি করে বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়া, সাম্প্রতিক ঘটনার উপর নজর রাখা, বিভিন গল্পের বই এবং সাহিত্য পড়া। মনে হওয়া অনুযায়ী আসলেই ৩৭তম বিসিএসের ভাইবা পরীক্ষার ডাক আসলো। আর তাইতো তিনি চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।

পছন্দের তালিকায় পররাষ্ট্র প্রথম থাকায় আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী ও ওয়ার্ল্ড ম্যাপের উপর একটু বেশিই জোর দিয়েছিলেন। এর সাথে মুক্তিযুদ্ধ, নিজ জেলা, নিজের পঠিত বিষয়, বাংলাদেশ বিষয়াবলীও পড়েছেন। পরিচিতজনদের সাথে প্রতিদিন কিছু সময় ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা করতেন। এছাড়া পররাষ্ট্রের পর ২য় পছন্দ ছিল প্রশাসন। সেজন্য খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয়ের উপরও সম্যক ধারণা নিয়েছিলেন তিনি।

৩৭তম বিসিএস এর ভাইভা নিয়ে কিছুটা নার্ভাস থাকলেও মনের এক কোণে কিছুটা সাহসও পাচ্ছিলেন। কেননা এর আগে ৩৬ তম বিসিএসের ভাইভাতে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। মার্জিতভাবে ভাইভাতে উপস্থিত হতে হয়, তা মাথায় রেখে একটি হালকা গোলাপি রঙের জামদানি শাড়ি পড়েছিলেন তিনি।

ভাইভা প্রশ্নের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাইভা বোর্ডে ১৫-২০ মিনিটের মতো সময় ছিলেন। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, পররাষ্ট্র ও প্রশাসন ক্যাডার সর্ম্পকিত কিছু মৌলিক প্রশ্ন, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিষয়াবলীর উপরই বেশির ভাগ প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে নিজের সর্ম্পকে, নিজ জেলা ও কেন ক্যাডার সার্ভিসে আসতে চাচ্ছি সে সর্ম্পকিত প্রশ্নও করেছিল। মোটামুটি ভালো ভাইভা দিয়েছিলেন, কিন্তু বোর্ড চেয়ারম্যান স্যারকে দেখে মার্কস কেমন পাবেন সেটা বুঝতে পারছিলেন না। তবে আশাবাদী ছিলেন যে ভালো কিছু হবে।

বিসিএস যাদের স্বপ্ন তাদের উদ্দেশ্যে তানজিমা আঞ্জুম সোহানিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে অস্থির না হওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন একটি রুটিন মেনে পড়ালেখা করতে হবে। ইংরেজি, গণিত ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করতে হবে। প্রতিদিনের নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ করলে সফলতা আসবেই। এছাড়া ভাইভার ক্ষেত্রে ভাইভা বোর্ড কেমন প্রশ্ন করবে, মার্কস কেমন দিবে-এসব চিন্তা না করে মহান সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রেখে দৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভাইভা মোকাবেলা করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড