• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মৌসুমী ব্যবসাতেই খুলবে ভাগ্যের চাকা

  ক্যারিয়ার ডেস্ক

০৪ জুলাই ২০১৯, ১৬:৫৫
মৌসুমী ব্যবসা

নানা ঋতু, নানা রং, নানা উৎসব আর নানা পার্বন-এই নিয়ে আমাদের দেশ। স্বভাবতই আমরা উৎসব প্রিয়। সারা বছরই কোনো না কোনো উৎসব পালনে আমরা ব্যস্ত। এক উৎসব যেতে না যেতেই পরের উৎসব কি করে পালন করা যাবে, সে চিন্তায় আমরা দিশেহারা। এই একেক মৌসুমে একেক উৎসবকে কেন্দ্র করে কিন্তু অনায়াসে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন।

বর্তমান সময়ের কথা বলতে গেলে পুরো দেশে চলছে বিশ্বকাপের আমেজ। আশেপাশে তাকালেই চোখে পড়বে ক্রিকেট প্রেমীদের উৎসব পালন। বড় থেকে ছোট অনেকেই সেজেছে লাল-সবুজ টি-শার্ট, লাল-সবুজ ব্রেসলেট, লাল সবুজের রুমাল মাথায় দিয়ে। তাছাড়া ড্রেসের সাথে মিলিয়ে অনেকে আবার লাল-সবুজ সমন্বিত মোবাইল কভারও ব্যবহার করছেন। প্রতিটি খেলাতেই নিজেদের পছন্দের দলের টি-শার্টে নিজেকে সজ্জিত করতে পছন্দ করেন এই সকল খেলা প্রেমীরা।

এই সময়টাকেই ব্যবসার জন্য কাজে লাগাতে পারেন। খেলাকে মাথায় রেখে আনতে পারেন খেলা সম্পর্কিত নানান চমকপ্রদ পণ্য। আপনি যদি সঠিকভাবে সে সকল চমকপ্রদ পণ্য তাদের নিকট পৌঁছে দিতে পারেন, তাহলে তারা অবশ্যই আপনার উদ্যোগের সঙ্গী হবে।

খেলাধুলা ছাড়াও আরো অনেক কিছু আছে। যেমন কিছুদিন পরই আসছে ঈদ। এ সময় বিভিন্ন ধরণের জায়নামাজ, টুপি, আতর, জামা-কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করতে পারেন। এ সময় বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করা হয়। সে সকল মেলায়ও অংশগ্রহণ করতে পারেন।

উৎসব মানেই সাজ-গোজ। এ সময় ছোট থেকে বড় সকল নারীই নিজেকে অলংকারে সজ্জিত করতে পছন্দ করেন। এই অলংকারের আবার নানা ধরণ। এর মাঝে আছে নানা রকমের চুড়ি, ব্রেসলেট, লকেট, গলার মালা, দুল। এমিটিশন ছাড়াও হাতে তৈরি মাটির অলংকার এখন নারীদের মন জুড়ে রয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ডিজাইনের গয়নার ব্যবসাও করতে পারেন।

মাটির গয়নার পাশাপাশি আরো একটি গয়নার ব্যবহার মনকে করে প্রফুল্ল। বিয়ে, বৌ-ভাত ছাড়াও ফাল্গুন বা বৈশাখে নারীরা কোন গয়নায় নিজেকে সাজাতে ভালোবাসে, বলুন তো। ফাল্গুন ও বৈশাখ শুনেই নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন যে আমি ফুলের কথা বলছি। কান, গলা ও হাত ছাড়াও এখন মাথার টোপর পরতে দেখা ছোট শিশু থেকে বড় সবাইকেই। এ সময় ফুলের কদর অনেক বেশি। তাই তো নিজে দোকান দিতে না পারলেও বিভিন্ন দোকানে ফুল সরবরাহ করার ব্যবসাটা করতেই পারেন।

গয়না ছাড়াও উৎসবে নারীরা নিজেদেরকে মেহেদিতে রাঙ্গাতে অনেক বেশি পছন্দ করে। ঈদ, বিয়ে, বৌভাত, ফাল্গুনসহ সকল উৎসবেই মেহেদি না হলে চলেই না। এ সকল উৎসবে মেহেদি মেহেদি পরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে পারেন। পড়ালেখার পাশাপাশি এই সকল সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা সম্ভব।

উৎসব ছাড়াও ঋতুভেদে পছন্দ করতে পারেন কিছু ব্যবসা। প্রতি ঋতুতেই কোন না কোন পণ্যের চাহিদা থাকে অনেক বেশি। এই ধরুন গরমকালের কথা যদি আমরা বলি, তাহলেই প্রথমে আমাদের মনে পড়বে কাঠ ফাটা রোদ্রের কথা। এ সময় গলা শুকিয়েও হয়ে যায় কাঠ। গরমের অস্থিরতা থেকে বাঁচার জন্য কম বেশি সবাই রাস্তায় ডাবের পানি ও বিভিন্ন ধরণের জুস পান করে থাকেন। আর তাই গরমের ব্যবসা হিসেবে একটা জুস কর্ণার অর্থাৎ শরবতের দোকান করাই যায়। মানের দিকে একটু খেয়াল রাখলেই ক্রেতাদের কাছ থেকে অনেক সাড়া পাবেন।

শরবতের ব্যবসা করে দিন অনেক ভালো যাচ্ছে বলে ভাববেন না যে শীতের সময়ও আপনার ব্যবসা খুব ভালো যাবে। শীতের সময় আমাদের শরবতের চাহিদা থাকে না বললেই চলে। তাহলে এই মৌসুমে কি করা যায় বলুন তো? মৌসুম বদলের সাথে সাথে নিজের ব্যবসাতেও বদল আনুন।

শীতের সময়টাতে সকলের নিত্য প্রয়োজনীয় পোশাকের মধ্যে রয়েছে সোয়েটার, হুডি ও জ্যাকেট। আজকাল স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নাম সম্বলিত সোয়েটার ও হুডি ব্যবহার করে। এছাড়াও শীতকালে নানা ডিজাইনের সোয়েটারের পাশাপাশি আকর্ষণীয় ডিজাইনের শাল ব্যবহার করে। শীত বস্ত্রের প্রচুর চাহিদা থাকায় এ সময়টাতে এ সকল পণ্যের ব্যবসা নির্ভাবনায় করা যায়।

অনেক টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে হবে-এই ধারণাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে বর্তমানে। দোকান ভাড়া না নিয়েও যে ঘরে বসে ব্যবসা করা যায় তা আমরা সকলেই জানি। এর ফলে খরচ কমেছে অনেকগুণ। অফলাইন ব্যবসার মতো অনলাইন ব্যবসাও সমানতালে বাজার দখল করে চলেছে।

অনলাইনের মাধ্যমে সকল ধরণের পণ্য আমরা বিক্রি করতে পারি। জামা-কাপড়, বিছানার চাদর, গয়না ছাড়াও খাবারের ব্যবসা করা যায়। চাকরিজীবীদের বেশির ভাগদেরই নাস্তা ও দুপুরের খাবার বাহির থেকেই থেতে হয়। হোটেলের খাবারগুলো কিছুটা অস্বাস্থ্যকর হওয়ায় অনেকেই বাসার খাবার খেতে চায়। এক্ষেত্রে বাসার রান্না করা স্বাস্থ্যকর খাবার বিভিন্ন অফিসে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবসাটাও করা যায় অনলাইনে। অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পছন্দনুযায়ে লাঞ্চ বক্স সরবরাহ করার ব্যবসাটাও কিন্তু মন্দ নয়। খাবার যদি মানসম্মত ও সুস্বাদু হয়, তাহলে অনেক বেশি সাড়া পাওয়া যাবে।

আমাদের মধ্যে অনেকেই ছোট উদ্যোগকে অসম্মানের চোখে দেখি। কিন্তু আমরা ভুলেই যাই, বিন্দু বিন্দু জলেই সিন্ধু হয়। তাই ছোট ছোট কাজে অভিজ্ঞতা সংগ্রহের মাধ্যমেই বড় কাজে সফল হওয়া সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড