শামসুল আলম শাহীন
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী ঢাক-ঢোলের হাট। প্রায় ৫শ বছর ধরে নিয়মিত বসছে এ হাট। রবিবার (১৪ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া এই হাট চলবে মহাষষ্ঠী ও সপ্তমীর দিন (মঙ্গলবার) পর্যন্ত। হাট ছাপিয়ে এটি এখন পরিণত হয়েছে দুর্গাপূজার আরেক উৎসবে।
ঢাক-ঢোলের বাজনা ছাড়া দুর্গাপূজার কোনো আনুষ্ঠানিকতাই যেন পূর্ণতা পায় না। মহাষষ্ঠী থেকে বিসর্জন-সবখানেই চাই ঢাকের আওয়াজ। ঢাক-ঢোলের হাট বলা হলেও এখানে কোনো বাদ্যযন্ত্র কেনাবেচা হয় না। পূজার দিনগুলোর জন্য বাদ্যযন্ত্রসহ বাদকদের ভাড়া করা হয় এই হাট থেকে।
বাদক দলের বাজনা পছন্দ হলেই কেবল পূজা আয়োজকরা চুক্তিবদ্ধ হন তাদের সঙ্গে। পরে তারাই বাদ্যের তালে তালে মাতিয়ে রাখেন পূজা মণ্ডপগুলো। কোন দলের চুক্তির মূল্য কত হবে? তা নির্ধারণ হয় ঢাকিদের দক্ষতার ওপর। তাই হাটেই দক্ষতা যাচাই করে দলগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় পূজার আয়োজকরা। এটিই সারা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ঢাকের হাট বলে পরিচিত।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে এ হাটে হাজির হয়েছে অসংখ্য বাদকদল। সাধারণত দলগতভাবে চুক্তি হয় তাদের সঙ্গে। সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যায় তাদের চুক্তির দাম। ঢাকিরা প্রতিবছরই এ হাটে ঢাক-ঢোল নিয়ে উপস্থিত হয়। শুধু ঢাক-ঢোলই নয়, এখানে বাঁশি, সানাই, করতাল, খঞ্জনি, মন্দিরা, কাঁশি, ঝনঝনিসহ নানা জাতের বাদ্যও পূজাতে ভাড়ায় খাটে। বাদ্যযন্ত্রসহ যন্ত্রীরা এসেছেন, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেট, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়াগা থেকে।
এ ব্যাপারে কটিয়াদীর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বেনী মাধব রায় জানান, প্রায় ৫শ বছর ধরে কটিয়াদীতে বসছে ঢাক-ঢোলের হাট। জনশ্রুতি আছে ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে রাজা নবরঙ্গ রায় কটিয়াদীর চারিপাড়ায় তার রাজ প্রাসাদে প্রথম দুর্গাপূজার আয়োজন করেন।
কটিয়াদী মডেল থানা ওসি জাকির রাব্বানী জানান, ঢাকের হাটকে কেন্দ্র করে কটিয়াদী বাজার এলাকায় শত শত মানুষের সমাগম ঘটে। তাই হাটের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি। পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড