অধিকার ডেস্ক ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:৫৫
স্বল্প সময়ে লাভের মুখ দেখায় পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে নওগাঁর কৃষকদের। কম খরচে বেশি উৎপাদন ও লাভ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে এ চাষে ঝুঁকছেন জেলার অনেক কৃষক। এ ফল চাষ করে অভাবের সংসার থেকে সুদিনে ফিরেছেন তারা।
জেলার সদর উপজেলার খাগড়া বিল, মরা বিল, হাসাইগারি বিল ও দিঘীলীর বিলসহ বিভিন্ন খাল ও জলাশয়ে জমে থাকা পানিতে দেখা মিলছে পানিফলের। এখন উৎপাদন, উত্তোলন ও বিপণনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর জেলায় ৮৫ হেক্টর জমিতে পানিফলের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলাতে পানিফলের চাষ হয়েছে ৫৪ হেক্টর জমিতে। এছাড়া মান্দা, রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার কিছু বিল, খাল ও জলাশয়ে পানিফলের চাষ হয়েছে।
গত বছর জেলায় পানিফলের চাষ হয়েছিল ৭২ হেক্টর জমিতে। মৌসুমের শুরুতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় সদর উপজেলার বিভিন্ন বিলের জমি, খাল ও জলাশয় গুলোতে পানি বেড়ে যাওয়ায় এ বছর পানিফলের চাষ বেড়েছে বলে জানায় জেলার কৃষি কর্মকর্তারা।
পানিফল চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসেই বৃষ্টিতে জলাশয়গুলোতে পানি জমতে শুরু করে। অন্যান্য বছর ভাদ্র মাসের শুরু থেকে গাছে ফল আসতে শুরু করলেও এ বছর শ্রাবণ মাস থেকেই গাছে ফল ধরতে শুরু করেছে। ভাদ্র মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই পানিফল উত্তোলন শুরু করেছেন অনেকে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন অথবা অনেকে প্রতিদিনই জমি থেকে ফল সংগ্রহ করেন।
তবে এবার বাজারে এ ফলের দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে বলে জানায় চাষীরা। তারা জানায়, প্রতি মণ পানিফল ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মৌসুমের শুরুতে উৎপাদন কম হওয়ায় এখন বাজারে দাম বেশি। বাজারে আমদানি বেড়ে গেলে দাম কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন চাষীরা।
নওগাঁর সদর উপজেলার খাগড়া বিলে দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক সাদেক হোসেন এ বছর ৪ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে পানিফলের চাষ করেছেন। তিনি জানান, বিলের ৪ বিঘা জমি এক বছরের জন্য ৭৫ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ মণ পানিফল বিক্রি করেছেন। প্রতি মণ পানিফল বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। জমির পানি শুকায়ে না গেলে আগামী অগ্রাহায়ণ মাস পর্যন্ত পানিফল উত্তোলন করা যাবে। ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৪০ মণ করে পানিফল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিৎ কুমার মল্লিক বলেন, ‘নওগাঁয় বেশ কিছু বিল রয়েছে যেখানে বছরে পাঁচ থেকে ছয় মাস পানি জমে থাকে। ওই জমিতে ধান ও সবজি চাষ করা সম্ভব নয়। তাই ওই জমি গুলোতে কৃষকেরা সাধারণত পানিফলের চাষ করছে। পানিফলের চাষে বেশি লাভজনক হওয়ায় দিন দিন কৃষকদেরও আগ্রহ বাড়ছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড