• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

উঠে দাঁড়াতে চান ফখরুলরা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:৫৩
মির্জা আব্বাস, রুহুল কবির রিজভী, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা আব্বাস, রুহুল কবির রিজভী, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ছবি : সংগৃহীত)

এগারো বছর ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। দুর্নীতির মামলায় সাজা মাথায় নিয়ে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুই বছর ধরে কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দীর্ঘ দিন ধরে দেশের বাইরে, কোনো এক ‘ভয়ে’ দেশে আসছেন না তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থেকে সরে গেলে দেশে ফিরবেন তিনি। এসব মাথায় রেখে গত ১১ বছরে বারবার আন্দোলনে নামার চেষ্টা করেছে দলটি; চাঙা হওয়ার চেষ্টা করছেন নেতারা। ২০১৫ সালের পর থেকে মাঠে না নেমে সরকারকে ‘কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি’ দিচ্ছেন নেতারা। এবার তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির ‘শেষ চেষ্টা’ হিসেবে সত্যিকার অর্থেই উঠে দাঁড়াতে চান। এ দিকে ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রী ও দায়িত্বশীলরা বলছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আদালত ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ আদালতই তাকে সাজা দিয়েছেন, সরকার নয়। যে মামলায় সাজা হয়েছে সেটি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বা তাদের দলের কেউ করেননি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বলেছেন, আমরা উঠে দাঁড়াতে চাই। অতীতে আমরা উঠে দাঁড়িয়েছি। বারবার এ দেশের মানুষ জেলে গেছে। আমি কখনো বিশ্বাস করি না, এ সমস্যা শুধু বিএনপির, এটা পুরো জাতির সমস্যা। সমগ্র জাতি পরাধীন হয়ে যাচ্ছে। সমগ্র জাতি তাদের অর্জনগুলোকে হারাচ্ছে। তাই আমাদের সবাইকে উঠে দাঁড়াতে হবে। উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হবে, সোচ্চার হতে হবে, রাস্তায় দাঁড়াতে হবে। আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) মুক্ত করব এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করব ইনশাআল্লাহ।

দুর্বার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে আর বেশি দেরি করা হবে না। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির মিছিল শেষে সমাবেশে তিনি আরও বলেন, অতি দ্রুত বেগম জিয়ার মুক্তি এবং তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাদের দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গণআন্দোলন গড়ে তুলতে আর বিলম্ব করা যাবে না। এ মুহূর্তে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে এবং আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করা হবে।

ক্ষমতাসীন সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে মুক্তির মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে, দেশের মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরে আসবে। দেশে যে খুন, গুমের আতঙ্ক বিরাজ করছে, এমন পরিস্থিতি থেকে মানুষ উদ্ধার হবে। দেশের জনগণ চরম অশান্তির মধ্যে দিনযাপন করছে। এই সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে। দেশের জনগণ এই সরকারকে আর চায় না, তারা এখন ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে বলেন, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় তাদের সমীহ করার প্রয়োজন নেই। ঢাকা সিটির ভোট প্রসঙ্গ বক্তৃতায় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ র‌্যাব, পুলিশ দিয়ে ভোট কেন্দ্রে হানা দিয়েছে। সেখানে আমাদের কমিশনার প্রার্থীরা টিকতে পারেননি। আমার একটাই প্রশ্ন, আমাদের সংগঠন কী সেখানে এতই দুর্বল যে আমরা কিছুই করতে পারলাম না। আমাদের কিছু একটা করা উচিত ছিল। সুতরাং আমাদের সংগঠনটাকে আমাদের জন্য আমাদের নেত্রীর জন্য আরও সুন্দর ও সুসংগঠিত করতে হবে। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, বাংলাদেশ সম্পূর্ণরূপে একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। পানি সমস্যার সমাধান হয় না, সীমান্তে হত্যা হয় তার কোনো বিচার হয় না, একটা কথা বলতে পারে না। এখন এ সরকারের আমলে দেখছি, এখানে নারীদের কোনো সম্মান নেই। এখানে মানুষের কোনো সম্মান নেই, জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। দেশের চতুর্দিকে ত্রাস ও ভয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।

ফখরুল বলেন, অর্থনীতি প্রায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির এমন একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যেখানে পত্রিকা খুললেই দেখবেন, ১১০ কোটি দিয়ে ব্যাসিক ব্যাংকের এক এমডি বাড়ি কিনেছেন। বেগম জিয়ার বিচার হয়, সাজা হয় দুই কোটি টাকার একটা মামলায়। অথচ যিনি ১১০ কোটি টাকার বাড়ি বানিয়েছেন, শত শত কোটি টাকার যিনি লুটপাট করে নিয়েছেন তাকে দুদক দেখতে পায় না। এখন পর্যন্ত তাকে একটা নোটিশ পর্যন্ত করা হয়নি। এ হচ্ছে এ দেশের অবস্থা।

সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম সঞ্চালনা করেন। ভাষা আন্দোলনের পটভূমি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম বক্তব্য দেন। আরও বক্তব্য দেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, যুবদলের গোলাম মাওলা শাহিন, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শিরিন সুলতানা, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মাহবুবুল আলম নান্নু, আমিরুজ্জামান শিমুল, অমলেন্দু দাস অপু, খন্দকার মারুফ হোসেন, রফিক শিকদার প্রমুখ।

ওডি/এমআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড