• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অ্যামাজনে দাবানল : ব্রাজিল বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইউরোপ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৬ আগস্ট ২০১৯, ১০:০৫
অ্যামাজনে দাবানল
অ্যামাজনে দাবানল ইস্যুতে ইউরোপে চলছে ব্রাজিল বিরোধী বিক্ষোভ। (ছবিসূত্র : ইউরো নিউজ)

পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত অ্যামাজন মহাবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইউরোপের বিভিন্ন শহরে ব্রাজিলীয় দূতাবাস প্রাঙ্গণে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছেন প্রতিবাদকারীরা। বড় ধরনের প্রতিবাদ সংঘটিত হয়েছে প্যারিস, লন্ডন, বার্লিন, জুরিখ, মিলান ও মাদ্রিদে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোরানো এই বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডটি দমনে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিক্ষোভরতরা তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত ব্রাজিলের দূতাবাস চত্বরে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট বলসোরানোর পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দেন। এ সময় তাদের হাতে অ্যামাজন রক্ষার দাবি জানিয়ে লেখা বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রো চলতি জি-৭ সম্মেলনে অ্যামাজনে লাগা আগুনের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। যেখানে তিনি বিশ্বনেতাদের প্রতি এই ইস্যুতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে আহ্বান জানান। বিশ্লেষকদের মতে, তার এই পদক্ষেপের পর পরই প্যারিসের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হলো। গত শনিবার (২৪ আগস্ট) প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো এক টুইট বার্তায় অ্যামাজন ইস্যুটিকে একটি 'আন্তর্জাতিক সঙ্কট' বলে অভিহিত করেছেন।

এ দিকে, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল অ্যামাজনে দাবানল ইস্যুতে ফরাসি প্রেসিডেন্টের অনুভূতির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, 'চলতি জি-৭ সম্মেলনে বিষয়টি উত্থাপন করা হওয়া উচিত। কেননা এটি বর্তমানে সর্বশেষ বিশ্ব নেতাদের একত্রিত হওয়ার মাধ্যম।'

অ্যামাজনে দাবানল

দাবানলের কবলে 'পৃথিবীর ফুসফুস' খ্যাত অ্যামাজন মহাবন। (ছবিসূত্র : এনপিআর)

এর আগে গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলেও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। যেখানে সাধারণ ব্রাজিলীয়রা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিক্ষোভে পালন করেন। যদিও সেখানে খুব কমই পরিবেশগত ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। গত শুক্রবারের সেই বিক্ষোভে আগতরা সাও পাওলো প্রদেশের প্রধান সড়ক অবরোধের মাধ্যমে দেশটির পরিবেশমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

অপর দিকে ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স' এক বিবৃতিতে জানায়, চলতি বছর এ পর্যন্ত অ্যামাজনের গভীর জঙ্গলে এই নিয়ে প্রায় ৭২ হাজার ৮৪৩ বার আগুন লেগেছে; যা গত বছরের তুলনায় ৮৪ শতাংশ বেশি।

'বিবিসি নিউজ' এক প্রতিবেদনে জানায়, পরিবেশ, আদি ভূমি ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলকে সংরক্ষণের জন্য এবার সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রাজিল সরকার। মূলত ইউরোপিয়ান নেতাদের দেওয়া প্রচণ্ড চাপের পর পরই এমন সিদ্ধান্ত নিলেন প্রেসিডেন্ট বলসোরানো।

ব্রিটেনভিত্তিক এই গণমাধ্যমটির দাবি, অ্যামাজন বনের আগুন থেকে আসা কালো ধোঁয়ার কারণে ব্রাজিলের সাও পাওলো শহর অন্ধকারে ঢেকে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে অ্যামাজনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্বাভাবিক হলেও গবাদিপশুর চারণভূমি সৃষ্টি করতে এর অনেক এলাকায় ইচ্ছা করেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

অ্যামাজনে দাবানল

অ্যামাজনের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন দমকল কর্মীরা। (ছবিসূত্র : রয়টার্স)

স্থানীয় পরিবেশবিদদের ধারণা, এই আগুন প্রাকৃতিক কারণ নয়। অ্যামাজনের এই আগুনের পিছনে রয়েছে মানুষের ষড়যন্ত্র। চাষ ও বাসের জমি পাওয়ার জন্য স্থানীয় লোকজন জঙ্গলের গাছ কাটা ও আগুন ধরানো শুরু করেছে।

যদিও এর আগে এই অ্যামাজনের দাবানল ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট বলসোরানোকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নাকি এই বন রক্ষার্থে ব্যাপক উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন।

আরও পড়ুন :- অ্যামাজনের আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনা পাঠাবে ব্রাজিল

যে কারণে এসবের প্রেক্ষিতে ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ড অ্যামাজনে সৃষ্ট দাবানল নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্নের হুমকি দেয়। মূলত এর পরপরই একটু নড়ে চড়ে বসেন ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট এবং দেশের সেনাবাহিনীকে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশ দেন।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড