• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জাপানে প্রমোদতরীতে করোনায় আক্রান্ত দুইজনের মৃত্যু

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:৫৯
জাপানে প্রমোদতরীতে করোনায় আক্রান্ত দুইজনের মৃত্যু
জাপানের বন্দরে নোঙর করা জাহাজ (ছবি : পিবিএস)

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। মানুষের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাছাড়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৬ হাজার ছাড়িয়েছে। এমনকি পর্যবেক্ষণে রয়েছেন আরও তিন লক্ষাধিক মানুষ।

গোটা বিশ্ব যখন মহামারি এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত, ঠিক তখনই করোনা আতঙ্কে ৩ হাজার ৭১১ যাত্রীসহ এক প্রমোদতরীকে আটক করেছিল জাপান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি কোয়ারেন্টাইন করে রাখা যাত্রীসহ জাহাজকে বন্দরে নোঙর করানো হয়।

যার ধারাবাহিকতায় এরই মধ্যে পাঁচশ সুস্থ যাত্রীকে প্রমোদতরী থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দিনভর বিভিন্ন পরীক্ষার পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। যদিও আরও কিছুদিন তাদের নিজ নিজ বাড়িতেই পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্তটি নেয় সরকার।

এমন প্রেক্ষাপটে প্রমোদতরীতে করোনায় আক্রান্ত দুই যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছে। রাজধানী টোকিওর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’ নামে ওই যাত্রীবাহী প্রমোদতরীকে জাপানের একটি বন্দরে কোয়ারেন্টাইন করেছিল প্রশাসন। যদিও ক্রুজ শিপে থাকাকালীন মরণঘাতী ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ জন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৬২১ জনে পৌঁছেছে। তাদের সকলকেই বর্তমানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা উপসাগরীয় বন্দরে পৌঁছায় জাহাজটি। তখন সেখানকার ১০ যাত্রীর শরীরে জ্বরসহ করোনা ভাইরাসের অন্যান্য লক্ষণগুলো দেখা দেয়। এদের মধ্যে ৮০ বছর বয়সী এক যাত্রীর শরীরে ভাইরাসের আলামত পাওয়ার পর প্রমোদতরীটি কোয়ারেন্টাইন করে জাপান সরকার। মূলত এর পরপরই সেখানকার অন্য যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।

এমনকি সিঙ্গাপুরে কয়েকজন বাংলাদেশির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বর্তমানে তারা দেশটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

আরও পড়ুন : করোনা আতঙ্কের মধ্যেই শুরু পঙ্গপালের তাণ্ডব (ভিডিও)

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো, ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

ওডি/কেএইচআর