নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস- ২০১৯ উদযাপন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ১৯ বছরে পা রাখলো বিশ্ববিদ্যালয়টি।

সোমবার (১৫ জুলাই) এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় মনোরম পরিবেশে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসহ অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহে ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্রই উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।

অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল- জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, উদ্বোধনী ঘোষণা, আনন্দ শোভাযাত্রা, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কেক কাটা, তথ্যচিত্র উপস্থাপনা, সম্মাননা স্মারক প্রদান, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সকাল ৯ টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমবেত জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন, নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম।

এ সময় তাদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন- সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে এম সাঈদুল হক চৌধুরী, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন, পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. মমিনুল হক। পরে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলে সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ক্যাপ ও টি-শার্ট বিতরণ করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

শেষে সকাল ১০টায় হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস অডিটোরিয়ামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলমের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর-সুবর্ণচর-৪ আসনের এমপি ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী।

সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলওয়াত করেন মো. মাহমুদুল হাসান, গীতা পাঠ করেন পাপিয়া, ত্রিপিটক পাঠ করেন সেবিতা চাকমা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল হতে যেসকল উপাচার্যবৃন্দ কাজ করেছেন সকলের অবদানসহ অদ্যাবধি নোবিপ্রবির নানা অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বিশ্বনেতা শতবছরেও জন্মায় না। আমরা তার দেখানো ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষ।’

তিনি আরো বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এমন দিনে আমি নোবিপ্রবির ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে কঠিন দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন, আমি তা পালনে সর্বদা সচেষ্ট থাকবো। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও ভৌত অবকাঠামোসহ সর্বাঙ্গীন উন্নয়নে আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন বলে আমি আশা করি।’

এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পাশে সর্বদা থাকার জন্য সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী এমপির প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

অ্যাকাডেমিক মানকে গতিশীল করতে নোবিপ্রবিতে আগামীতে পদার্থ, গণিত ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো যুগোপযোগী বিভাগ খুলবেন বলে ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম।

আলোচনা সভা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

পরিশেষে তিনি সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তৃতা শেষ করেন এবং আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. মমিনুল হক।

অনুষ্ঠানে নোবিপ্রবি পরিবারের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, ছাত্র নির্দেশনা পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ওডি/এমএ