• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শিক্ষার্থীদের প্রতি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের আবেদন

  অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হক

২১ এপ্রিল ২০১৯, ২৩:১৪
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের আবেদন
শিক্ষার্থীদের প্রতি উপাচার্যের আবেদন (ছবি : সংগৃহীত)

২৬ মার্চ এর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদে আন্দোলনে ফুঁসে ওঠে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর চলতে থাকে আন্দোলন, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অচল হয়ে যায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নিজের আবেদন জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হক।

তাঁর সেই আবেদন নিন্মে উপস্থাপণ করা হলো-

বিগত ১৮/০৪/০১৯ তারিখে 'বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার' ব্যানারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতেগোনা ও চিহ্নিত কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী মানববন্ধন করে, যেখানে তারা আমার পদত্যাগ দাবি করে। ইতোপূর্বে চিহ্নিত কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীও একই দাবি করে আসছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাতেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন, যার মেয়াদকাল আগামী ২৭ মে শেষ হবে।

বিগত ৩ বছর ৬ মাসের অধিকাল ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে অপেক্ষাকৃত নবীন এই বিদ্যাপীঠটিকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার মেয়াদকালের শেষ সময়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থসিদ্ধির জন্য চিহ্নিত এই গোষ্ঠী আমার পদত্যাগের দাবিতে বিগত প্রায় এক মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বার সমূহে তালা লাগিয়ে অবৈধভাবে এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এই অহেতুক আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহ ভাগ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এ ধরনের পরিস্থিতির অবসান চায় বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তারা এক কল্পিত সন্ত্রাসের ভয়ে ভীত হয়ে এর প্রতিবাদ করে সাহস নিয়ে এগিয়ে আসছে না। এ অবস্থা থেকে আমাদের উত্তরণ অবশ্যম্ভাবী, অন্যথায় জাতির পিতার স্বপ্নের দক্ষিণ বাংলার এই বাতিঘর, যেটি তার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে বাস্তবায়িত হয়েছে, অপূরণীয় ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

যারা মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড করার উদ্যোগ নিয়েছিল, তাদের উদ্দেশ্যেই আমি বক্তব্য রেখেছিলাম। সেই বক্তব্যে কেউ আহত হয়ে থাকলে তাদের উদ্দেশে দুঃখ প্রকাশও করেছিলাম। কিন্তু বিষয়টি সেখানেই থেমে থাকেনি, কোন এক অদৃশ্য ও অশুভ শক্তির প্রয়াসে এতদূর গড়িয়েছে। দুঃখ প্রকাশের পরও কেন এই আন্দোলন চলছে? কেন সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে? এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী মিলিয়ে সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের ৫ শতাংশের বেশি হবে না। এরা কার স্বার্থ হাসিল করার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি ৯৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ধ্বংস করার জন্য নেমেছে, এটি আমার প্রশ্ন।

প্রিয় শিক্ষার্থীদের কাছে আমার আবেদন, পরবর্তী কর্ম দিবসে তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আস, তোমাদের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্লাসে চলে যাও। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের হাতে তোমাদের শিক্ষাজীবন জিম্মি হয়ে থাকতে পারে না। একই সঙ্গে আমি বরিশালের বিদ্যোৎসাহী, শিক্ষানুরাগী, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট জনসহ সকলের প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি, কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থে দক্ষিণবঙ্গের আলোকবর্তিকা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে দেবেন না। আপনাদের বলিষ্ঠ উদ্যোগে অচলায়তন ভেঙ্গে খুব শিগগির কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাদচারণায় মুখরিত হবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস-এই আমার একান্ত প্রত্যাশা।

একজন শিক্ষক হিসেবে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এহেন অবস্থা আমার জন্য কষ্টকর। যে ভাবেই হোক, ২৭ মে এর পর ব্যক্তি ইমামুল হক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবেন না। তবে কেনো এই ধ্বংসাত্মক প্রয়াস চলছে? সকল বরিশাল বাসীর কাছে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে তার মহিমা নিয়ে এগিয়ে চলতে আপনাদের সাহসী প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে আসুন।

লেখক : উপাচার্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড