আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ গ্রহণের সীমা বাড়ল 

বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে কলমানি মার্কেটের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ইক্যুইটির সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ হারে থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে বলে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার (কলমানি মার্কেট) থেকে সোমবার (৫ আগস্ট) ঋণ গ্রহণের সীমা পুনঃনির্ধারণ করে নির্দেশনা জারি করেছে। দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে নির্দেশনাটি পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, বেশ কিছু ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে তা পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে ব্যাংকগুলো টাকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে। টাকা ফেরত পেতে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছে কয়েকটি ব্যাংক। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর সঠিক সমাধান না দিয়ে নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও বেশি টাকা দেওয়ার নিয়ম জারি করেছে। যেখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইক্যুয়িটির ৪০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা ধার নিতে পারবে। আগের নীতিমালায় এই ধারের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ।

সম্প্রতি পিপলস লিজিংসহ ৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান জনগণ ও ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস লিজিং বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে তা আর ফেরত পায়নি।

এছাড়া জাতীয় সংসদেও এ সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা গেছে-ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ৮৩৭ কোটি টাকা, এফএএস ফাইন্যান্স ৫০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং ২৭৫ কোটি টাকা, বিআইএফসি ২০১ কোটি টাকা ও প্রাইম ফাইন্যান্স বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে ২০৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এখন আর ফেরত দিচ্ছে না।

এ দিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এই অনিয়মের কথা জানার পর সাধারণ গ্রাহকরা তাদের আমানত তুলে নিতে শুরু করেছেন। ফলে অর্থ সঙ্কট চরম রূপ ধারণ করেছে। এই সঙ্কট কাটাতে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা এ সঙ্কট কাটাতে তারল্য সহযোগিতা চান।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাস থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ইক্যুইটির সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ হারে কলমানি মার্কেট থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। এর আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তাদের ইক্যুইটির বিপরীতে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ হারে ঋণ নিতে পারত। আর তার পূর্বে তারা আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তাদের নিট সম্পদের সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারত।

ওডি/টিএফ