শাকিল মুরাদ, শেরপুর
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে (২০) ফুঁসলিয়ে জামালপুরের যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগের পর ওই তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি শেরপুরের শ্রীবরদীর দক্ষিণ লঙ্গরপাড়া এলাকায় ঘটেছে।
গত বুধবার (৯ আগস্ট) ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে শ্রীবরদী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে গভীর রাতেই তাকে উদ্ধার করে শ্রীবরদী থানায় আনা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকালে থানা থেকে ওই তরুণীকে আদালতে জবানবন্দি নেয়ার জন্য পাঠানো হয়।
এর আগে চলতি বছরের ২০ জুন ওই তরুণীকে জামালপুর জেলার যৌনপল্লীতে বিক্রি করা হয়।
জানা গেছে, এ ঘটনার হোতা মো. লোকমান মিয়া (২৩)। তিনি শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর নিজপাড়া গ্রামের ইসমাঈল হোসেন ওরফে ডাইয়ার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণীর বাবা-মা ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। দুই বছর আগে ওই তরুণীর সাথে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা ঝিনাইগাতীর পাইকুড়া এলাকার রেজ্জাক আলীর ছেলে বিপ্লবের সাথে। কিন্তু স্বামীর সাথে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীকে ছেড়ে ঢাকায় বাবা-মার কাছে চলে যান ওই তরুণী।
এ দিকে ওই তরুণীর বাবা-মা যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ঠিক ওই প্রতিষ্ঠানেই কাজ করেন লোকমান মিয়া। সেই সুবাদে ওই তরুণীর সাথে ধীরে ধীরে সম্পর্ক তৈরি হয় তার। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দেন লোকমান।
বিষয়টি জানাজানি হলে কিশোরীর বাবা তাকে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গ্রামের বাড়িতে রেখে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয় লোকমান। ২০ জুন বিকালে ওই তরুণীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ফুঁসলিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে ২/৩ জনের সহায়তায় জামালপুর জেলার যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়।
এ ঘটনায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর মেয়েকে না পেয়ে তার মা শ্রীবরদী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান- তাদের মোবাইলে একটি অজ্ঞাত নাম্বার দিয়ে কল আসে। সেই কলে মেয়ের চিৎকার শোনা যায়। পরে তারা খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারে তাদের মেয়েকে যৌনপল্লীতে রাখা হয়েছে। এরপর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে শ্রীবরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জামালপুর যৌনপল্লীতে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করে।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, ভুক্তভোগীকে উদ্ধারের সময় নানা সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। অবশেষে সব মোকাবিলা শেষে তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আজ বিকালে থানা থেকে আদালতে জবানবন্দি নেয়ার জন্য তরুণীকে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড