• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দোয়ারাবাজার সীমান্তে অবাধে চলছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চোরাচালান

  এম এ মোতালিব ভূঁইয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)

০৫ আগস্ট ২০২৩, ১৩:০৯
দোয়ারাবাজার

সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলাটি সীমান্তবর্তী। আর এখানে প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে দিয়ে দিনে রাতে সমানতালে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে ভারতীয় আমদানিকৃত নিষিদ্ধ বিভিন্ন পণ্য।

আর আমদানির বৈধতা আছে এ সকল পণ্য সরকারের শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবাধে দেশে নিয়ে আসছে এই উপজেলার চোরাকারবারিরা। ফলে দোয়ারাবাজার উপজেলা এলাকায় বাড়ছে চোরাচালান প্রবণতা। চোরাচালান ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করার পরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারি চক্র।

স্থানীয়রা বলছেন, কাচা টাকার লোভ আর বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন চোরাকারবারে। যদিও দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের দাবি সীমান্তে অপরাধ ঠেকাতে কাজ করছে বিজিবি,পুলিশ, র‌্যাব বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী।

সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় প্রতিনিয়ত নতুন-নতুন কৌশলে চলছে চোরাচালান। দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের চোখের সামনে দিয়ে উপজেলার বেশ কয়েকটি সীমান্ত পথ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে শুকনো সুপারি,শুঁটকি মাছ,কুচিয়া মাছসহ বিভিন্ন মাছ, মোরগ, মেলামাইনপ্লেট, ক্রেকার, পটেটো, মটরসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের পণ্য-সামগ্রী।

আর ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে মরণ নেশা মাদক,মোটরসাইকেল,টেন্ডুপাতার নাসির বিড়ি, গরু, মহিষ, বিভিন্ন রকম কসমেটিকস, বিস্কুট, চকলেট, চিনি,কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে সীমান্ত গ্রামগুলোর অনেকেই এখন চোরাকারবারের সাথে জড়িত রয়েছে। তবে প্রশাসনের দাবি সীমান্ত সুরক্ষা ও চোরাচালান বন্ধে বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় রয়েছে। এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দিনের বেলা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করা দেশীয় নানা ধরণের পণ্য। ভোরে ও সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সীমান্তের কয়েকটি এলাকা দিয়ে দেশে অবাধে আসে ফেনসডিল, মদ ও আমদানি নিষিদ্ধ নানা পণ্য। ফলে এ সকল কিছু ঠেকাতে দরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত তদারকি ও নিয়মিত অভিযান দাবি করেন এই উপজেলার সীমান্তে বসবাসরত এলাকাবাসীরা।

এদিকে উপজেলায় ভারতের মেঘালয় সীমান্ত বাংলাবাজার,নরসিংপুর,বোগপাবাজার ও লক্ষীপুর এই চার ইউনিয়ন সীমান্তে চোরাচালানের বাণিজ্য বন্দর যেন গড়ে উঠেছে। যদি কোন এক খবরের পাতায় প্রকাশিত হয় কোন এক সচিত্র প্রতিবেদন তবে প্রশাসন একটু নড়ে চড়ে বসে,তৎপর অভিযানে দু'একটা চোরাচালান জব্দ করে, তারপর আধাআধি বখরাতে সবকিছু হাপিস হয়ে যায়, এভাবেই আরো বেড়ে যাচ্ছে চোরাচালান বৃদ্ধি, কিন্তু এতেই কী যথেষ্ট, পুলিশ প্রশাসন সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন সীমান্ত পিলার পয়েন্ট ১২৩৪ থেকে ১২৩৬ পিলার হচ্ছে চোরাচালানের সবচেয়ে বড় রোড,কলোনি ১২৩১ পিলার,মাঠগাও ১২২৫-১২২৬ বাগানবাড়ী ১২২৭-১২২৮ পেকপাড়া ১২২৯ ঝুমগাও ১২৩০ সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা, রাত ২টা থেকে ভোর ৫টা অবধি চোরাকারবারিরা চোরাচালান এপার থেকে ওপারে আনা নেয়া করে থাকে। সীমান্ত এলাকার লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়, এসব মালামাল বাংকাবাজার-ছাতক,বাংলাবাজার-দোয়ারাবাজার,বোগলাবাজার,-দোয়ারাবাজার,পশ্চিম বাংলাবাজার-দোয়ারাবাজার,নরসিংপুর-ছাতক সড়ক দিয়ে চোরাচালান কারবারিরা রাতের বেলায় পরিবহন করে থাকে। এসব মালামালের ধরন-চিনি ও ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ, চাইনিস পিস্তল, মেশিনারিজ সরংঞ্জাম, (মটর সাইকেল স্কুটি) বিভিন্ন মডেলের মোবাইল, ব্যান্ডের শাড়ি লেহেঙ্গা, কম্বল, কসমেটিক, সুপারি, গরু,মহিষ, চা, চিনি, সাবান-সেম্পু তেল, তেজ পাতা ইত্যাদি।

এসব চোরাচালান পাচারকালে চোরাইকারবারিদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হল অকিটকি। জানা যায়, অকিটকিতে দু'সীমান্তের চোরাইকারবারিরা পাহাড়ের আনাচে কানাচে বসে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। কোন কোন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এসব চোরাচালান পাচার করলে সহজ হবে, কেবল তারাই শুধু জানতে পারবে, অন্য কেউ নয়। এই উপজেলার সীমান্তে অকিটকিই এখন তাদের কাছে একমাত্র চোরাচালান বাণিজ্য উৎসবের মাধ্যম।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার(৩ আগষ্ট) রাতে উপজেলার বাগানবাড়ি বিওপি ১০টি মহিষ আটক করেছে। এর আগে বুধবার (২ আগষ্ট) উপজেলার বাংলাবাজারে অভিযান চালিয়ে ২৪৫০কেজি চিনিসহ দুইজনকে আটক করে মামলা দিয়ে থানায় হস্তান্তর করেন।গত ৩১ জুলাই বাঁশতলা কলোনী ১২৩১পিলার দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে মোটরসাইকেল আনতে গিয়ে ১২৩১পিলার ৩ এস বরাবর পুর্ব উত্তর চেলা বাজারের নিকটে চম্পা নালার উপরে মেইন রোডে ১৩ নং গেইট মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়েছে কলোনি গ্রামের মন্তু মিয়া ও বেগমের পুত্র ফজর আলী,হযরত আলীর পুত্র কোরবান আলী,মফিজ মিয়ার পুত্র মুহিবুল ইসলাম।

রবিবার (১৬ জুলাই) সন্ধায় উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭০০ গ্রাম গাঁজাসহ এক মাদকবিক্রেতাকে আটক করে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ। একই রাতে ১০:৪৫ ঘটিকায় দ্বিতীয় অভিযানে উপজেলার লক্ষিপুর ইউনিয়নের লিয়াকতগঞ্জ বাজার থেকে ২ টি প্লাস্টিকের বস্তাবর্তি ৭৫ বোতল আমদানি নিষিদ্ধ ( Officer’s Choice) বিদেশি মদ আটক করে পুলিশ।এর আগে (৬-জুন) সোমবার রাতে দোয়ারাবাজারে ট্রাক্স ফোর্সের অভিযানে ভারতীয় ২১ গরু আটক করে দোয়ারাবাজার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমদ। পরে আদালতের মাধ্যমে নিলাম দেওয়া হয়।একই মাসের (১ জুন) বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টায় দোয়ারাবাজার সীমান্ত পেরিয়ে ছাতকের সুরমা সেতুর টোল প্লাজায় ভারতীয় পেঁয়াজ ভর্তি ৯টি ট্রাক আটক হয় পুলিশের হাতে। এসময় পরিবহনকৃত পণ্যের বৈধতা যাচাইকালে ট্রাক চালকরা সীমান্তবর্তী বাজারের বিভিন্ন মুদি-দোকান থেকে সংগ্রহ করা পেঁয়াজের ক্রয়স্লিপ দেখানের পর পেঁয়াজভর্তি ট্রাকগুলো ছেড়ে দেয় পুলিশ।

এর আগে, শনিবার (২৭ মে) ভোর বেলায় উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কলাউড়া কালা-চান্দের হাওড়ে আল-আমিন (২৮) নামে এক যুবকের মৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ বলেছে বর্জ্রপাতে মারা গেছে। তবে স্থানীয়দের ভাস্যমতে মৃত আল-আমিন চুরাকারবারি ছিলো। একই মাসের সোমবার (২২ মে) নরসিংপুর -শ্রিপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় পণ্য আনতে গিয়ে বিজিবির হাতে জব্দ হয় লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মাদকদ্রব্য বিড়ি ,এতে বিজিবির সোর্স সন্ধেহ করে সজিব মিয়া নামের এক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে হত্যার উদ্দেশ্যে চুরাকারবারিদের বাড়িতে নিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। ৯৯৯ কল দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাই পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে। পরে আহত ওই শিক্ষার্থী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সোমবার (১ মে)রাতে উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের আজমপুর এলাকা থেকে ভারতীয় ইয়াবা বিড়িসহ দু'জনকে আটক করে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ।

শনিবার (২৭ মার্চ) রাতে উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্রিপুর এলাকা থেকে ৬০ বোতল ভারতীয় মদসহ দু'জনকে আটক করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাতে উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ভাওয়ালীপাড়া গ্রাম থেকে ২টি নীল রংয়ের বায়ুরোধক পলিথিনের প্যাকেটে থাকা (৫৫ পঞ্চান্ন) পিছ গোলাপী রংয়ের এমফিটামিন সমৃদ্ধ মাদক ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দু'জনকে আটক করে পুলিশ।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার মান্নারগাওঁ ইউনিয়নের আজমপুর খেয়াঘাট থেকে ভারতীয় ১হাজার ইয়াবাসহ ২ জনকে আটক করে র‌্যাব--৯ সিপিসি ৩ সুনামগঞ্জ। শুধু এখানেই শেষ নয় মাদকের সয়লাব, ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন দেশে আসছে লক্ষ লক্ষ টাকার মাদক।

অন্যদিকে, এর আগে কয়েকবার বর্ডার গার্ড বিজিবির সদস্যরা অবৈধপথে আসা ভারতীয় চুরাই পণ্য আটক করতে গিয়ে চুরাকারবারি কর্তৃক হামলার শ্বিকার হয়ে কয়েকজন বিজিবির সদস্য মারাত্মক ভাবে আহত হয়। বিজিবির উপর হামলার ঘটনায় এখনো মামলা মোকাদ্দমা চলছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের সীমান্ত কলাউড়া, শীমুলতলা, মৌলারপাড়,,পেঁকপাড়া, ঝুমগাঁও,কলোনি ও মোকামছড়া, বোগলা ইউনিয়নের বাগানবাড়ি, গাছগড়া, লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গাপাড়া,মাঠগাঁও,নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্যামারগাঁও, শ্রীপুর ও দ্বীনেরটুক,চাইরগাঁও এলাকার সীমান্তে চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দুর্গম এসব এলাকা দিয়ে প্রতিদিন প্রকাশ্যে গরু,মহিষসহ আনা হচ্ছে সকল প্রকার মাদকদ্রব্য। এতে ওইসব এলাকার যুবকদের অধিকাংশই বিভিন্ন কাজের ব্যস্থতা থেকে সরে গিয়ে সময় দিচ্ছে অবৈধ চুরাই চক্রের সাথে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকার অধিকাংশ যুবক যেখানে দিনের বেলায় তাদেরকে ভালো শার্ট-প্যান্ট পরতে দেখা গেলেও সন্ধার পর থেকে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের জন্য সীমান্ত এলাকায় কয়েকটি চক্র গড়ে উঠেছে। ভারত থেকে গরু-মহিষ পাচার করে দেশের সীমান্তে আনার পরই তাদের হাতে স্থানীয় বাজারের বিক্রির ইজারা রশিদ তুলে দেওয়া হয়। এসব রশিদ সাথে নিয়ে চোরাকারবারীরা বুক ফুলিয়ে গরু-মহিষ স্থানীয় বাজারসহ অন্য অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা গরু-মহিষ, মাদকদ্রব্যসহ অবৈধ মালামাল দোয়ারা সদর বাংলাবাজার,নরসিংপুর ও ছাতকের নোয়ারাই,ফকিরটিলা সড়ক হয়ে ছাতক সুরমা ব্রিজ পার হয়ে নৌকা ও সড়কপথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায়। আর এ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণের জন্য সীমান্ত এলাকায় গড়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ কয়েকটি পাচারচক্র। প্রায়ই পাচারকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর হাতে আটক হলেও অধিকাংশ সময় তারা থাকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। আবার, ধরা পড়লেও আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে এসে আরোও ব্যপরোয়া হয়ে ফের লিপ্ত হয় অবৈধ চোরাচালানে। চোরাচালানের জন্য প্রাণহানি, এলাকায় মাদকের সয়লাব ও চোরাচালান চক্রের মধ্যে প্রায়ই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ হচ্ছে। লক্ষ্য করা গেছে শুধু তাদের নিজেদের মধ্যেই নয়,অভিযান পরিচালনা করা একাধিক বিজিবির সদস্য ও তাদের আক্রমন হতে রক্ষা পায়নি।

এদিকে,গত ২৬ জানুয়ারি রাতে উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর -চাইরগাঁও সীমান্ত এলাকায় চোরাই মহিষ আটক অভিযানে চোরাকারবারীদের হামলায় বিজিবি কমান্ডার নায়েব সুবেদার গোলাম মুর্শেদ আহত হন। তাকে আহত করে ৪৫-৫০ টি ভারতীয় মহিষ নিয়ে যায় চোরাকারবারীরা। এসময় তিনটি মহিষ আটক করা হয়। এর আগে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর একই এলাকায় ভারতীয় মহিষ আটক অভিযানে চোরাকারবারিদের হামলায় গুরুতর আহত হন বিজিবি সদস্য মঞ্জুবরন ত্রিপুরা। এসময় ১০ টি ভারতীয় মহিষ আটক করে বিজিবি।

দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আল তানভীর আশরাফী চৌধুরী বলেন, উপজেলার সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের জন্য সামাজিক অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা দিন দিন বাড়ছে। এলাকার যুবসমাজ পথভ্রষ্ট হয়ে বিভিন্ন কর্মসংস্থান থেকে বিরিয়ে এসে ওইসব চক্রের সাথে জড়িত হয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে। কিভাবে এবিষয়গুলো নির্মুল করা যায় তিনি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক'র সাথে আলোচনা করেছেন।

এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবদুলাল ধর বলেন, চোরাচালানের গরু-মহিষ, মাদকসহ অবৈধ মালামালের বিষয়ে আমাদের অবস্থান কঠোর। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স চালু আছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে ট্রাক্স ফোর্স অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। গরু-মহিষ আটকের পর অনেক সময় বিক্রির রশিদ দেখিয়ে চোরাকারবারীরা চ্যালেঞ্জ করে বসে। এই কাজে তাদেরকে স্থানীয় একটি চক্র সহযোগিতা করে বলে মন্তব্য করেন ওসি।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (২৮-বিজিবি) সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মাহবুবুর রহমান বলেন,সীমান্তে চোরাচালান করতে গিয়ে অনেকে হত্যার শিকার হচ্ছে। এর জন্য স্থানীয় মানুষদের সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করেন বিজিবির এই কর্মকর্তা। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে সখ্যতা করেই চোরাচালান দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে চোরাকারবারিদের সম্পর্ক রয়েছে সঠিক তথ্য প্রমান ছাড়া সেটা বলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন,দোয়ারাবাজারের ৪ টি ইউনিয়নের বৃহৎ এলাকা জুড়ে বর্ডারের সীমান্ত রয়েছে এবং এগুলোর অনেকটাই অরক্ষিত। সেখানকার লোকজনের বিশাল একটা অংশ চোরাচালানের সাথে জড়িত। বিজিবি নিয়মিত অভিযান করছে,তার পরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা প্রায়ই সীমান্তের ওপারে যাচ্ছে চোরাচালানের জন্য। বিজিবি নিয়মিত টহলের ঝুরদারের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করতে জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন সভা করছে। এসময় তিনি আরো বলেন,চোরাচালানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সাংবাদিক ভাইদের প্রশংসনীয় সহযোগিতা পাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় তিনি,চোরাচালান বন্ধে স্থানীয় সাংবাদিকের আরও একটু সহযোগিতার পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মানুষজনদের সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড