দুর্নীতির ঘটনায় রাঙামাটির নয় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা 

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের বরকল উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সবির কুমার চাকমা, রাঙামাটি জেলা পরিষদের দুর্নীতিবাজ নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া, জেলা পরিষদের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সিলেট এলজিইডিতে কর্মরত) কাজী আবদুস সামাদ, জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী জ্যোতিময় চাকমা, জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা, বরকল উপঝেলাধীন ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি প্রভাবশালী নেতা মামুনুর রশীদ মামুনসহ ৩টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে পৃথক পৃথকভাবে ৪টি মামলা দায়ের করেছেন দুদক।

গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) তথ্য সূত্র বেসরকারি চ্যানেল সময় টিভি স্কলে ও রাঙামাটি জেলা সমন্বয় দুদক কার্যালয়।

সূত্রের বরাতে জানা যায়, অস্থিত্বহীন ভূয়া প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থ আত্বসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য ও দুইজন নির্বাহী প্রকৌশলী এবং দুইজন উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে একই দিনে চারটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।

চারটি মামলায় আসামি করা হয়েছে- রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য, নর্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ঠিকাদার, ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সর্বমোট নয়জনকে।

দুদক রাঙামাটিস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন নিজেই উক্ত চারটি মামলা দায়ের করেন।

দুদক জানায়, রাঙামাাটি জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমা, জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়া, সহকারী প্রকৌশলী জ্যোর্তিময় চাকমা, উপসহকারী প্রকৌশলী রিগ্যান চাকমা, ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ, রাঙমাটি জেলা পরিষদের (সাবেক) নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সিলেট এলজিইডিতে কর্মরত) কাজী আবদুস সামাদ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অমলেন্দু চাকমার স্বত্তাধিকারী অমলেন্দু চাকমা, মেসার্স নাংচিং এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী চিংহেন রাখাইন, মেসার্স সম্মৃদ্ধি এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মিলন তালুকদারকে আসামি করে এই চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এসব মামলার বিষয়টি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন দুদক রাঙামাটিস্থ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক।

দুদক সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে জানা গেছে, বরকলের ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত কামিনী চাকমার জমির উপর মৎস্য বাঁধ ও পাঁকা সেচ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে আট লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৩ টাকা, বরকল উপজেলাধীন সুবলং বাজারে পানীয় জলের ব্যবস্থাকরণসহ গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে ছয় লাখ ৫১ হাজার টাকা, বরকল উপজেলাধীন সুবলং ইউনিয়নে সুবলং কমিউনিটি সেন্টার ঘর ও পাঁকা সিড়ি নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, বরকল উপজেলাধীন পূর্ব এরাবুনিয়া মৎস্য বাঁধ হইতে হারুন টিলা এলাকার আহাদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার নামক ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫৩ টাকা পরস্পর যোগসাজসে অপরাধমূলক অসদাচরণ এবং অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে উপরোক্ত টাকাগুলো আত্মসাৎ করে দন্ড বিধির ৪০৯/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলার গুলোর এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন।

দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ৭৫ কার্যদিবস সময়কালে উপরোক্ত মামলাগুলোর সার্বিক বিষয়টি তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।

দুদক সূত্র আরো জানিয়েছে, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমাকে তিনটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে চার মামলাতেই জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী ও উপসহকারী প্রকৌশলীর নাম রয়েছে। বরকলের স্থানীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাংচিং এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী চিংহেন রাখাইনকে আসামী করা হয়েছে দুই মামলায়।

ইউপি চেয়ারম্যান মামুন, ঠিকাদার অমলেন্দু চাকমা ও মিলন তালুকদারের নামে একটি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।