• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জমে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় আম বাজার

  সেলিম রেজা, সাপাহার (নওগাঁ)

০৫ জুন ২০২৩, ১৫:৪০
জমে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় আম বাজার

দেশের উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ আমবাজার বসে নওগাঁর সাপাহারে। ইতিমধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁক-ডাকে জমে উঠেছে সাপাহারের আম বাজার। বিভিন্ন জাতের আম উঠতে শুরু করেছে এই বাজারে।

কয়েকদিন আগেও সুনসান নীরব ছিল এই বাজার। দুই/চারদিন থেকে আমের আমদানি হবার ফলে সরব হয়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় এই আম বাজার।

এই এলাকায় কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু হয় গাছ থেকে আম সংগ্রহ। আম পাড়া শেষ হলেই নানান ধরণের যানবাহনে করে বাজারে আনা হয় এসব আম। প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসে আমের হাট।

সদরের জিরো পয়েন্ট থেকে পত্নীতলার দিবর এলাকা পর্যন্ত বসে আমের হাট। সদরে রয়েছে প্রায় ২৫০টি আমের আড়ৎ এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে আমের আড়ৎ গড়ে উঠেছে।

সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩৬০টি আমের আড়ৎ গড়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। প্রতিদিন সদরের আড়ৎগুলোতে প্রায় দেড় দুই হাজার মণ আম বিক্রয় হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে আরও অন্যান্য জাতের আম বাজারজাত হলে আম কেনা-বেঁচা বাড়বে কয়েকগুণ। যার ফলে কর্মব্যস্ত হয়ে উঠবে আড়ৎগুলো। যার ফলে কর্মসংস্থান হবে প্রায় কয়েক হাজার বেকারের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী গুটি (স্থানীয়) আম ২২ মে থেকে পাড়া শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে গোপাল ভোগ ২৮ মে, ক্ষীরশাপাত/হিমসাগর ২ জুন, নাগফজলি ৭ জুন, ল্যাংড়া/হাঁড়িভাঙা ১০ জুন, ফজলি ২০ জুন, আম্রপালি ২২ জুন এবং আশ্বিনা/বারি-৪/গৌড়মতি/কাটিমন ১০ জুলাইয়ের মধ্যে হারভেস্টেং শুরু হবে। আর এই সময়ের মধ্যে বাগান থেকে আম সংগ্রহ করবেন আমচাষিরা।

চলতি বছরে অনাবৃষ্টির ফলে আম অনেকটা ঝরে যায়। কিন্তু তাতে তেমন কোনো ক্ষতির প্রভাব পড়েনি বলে জানান আমচাষিরা। তবে বর্তমানে শুরুতেই আমের বাজার মূল্য কিছুটা কম বলে দাবী করছেন স্থানীয় আমচাষিরা। এছাড়াও আম বিক্রয় করতে হচ্ছে ৫০/৫২ কেজিতে প্রতিমণ হিসেবে। যার ফলে অনেকটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন চাষিরা।

উপজেলার কুচিন্দা গ্রামের আমচাষি হুমায়ূন কবির হৃদয় ও গোডাউন পাড়ার জিল্লুর রহমান বলেন, বর্তমানে বাজারে গোপাল ভোগ জাতের আম বিক্রি করছি ১৪/১৫শ টাকা দরে। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে আম বাগানে পরিচর্যা করতে হয়েছে বেশি। যার ফলে খরচ অনুযায়ী আমের বাজার মূল্য অনেকটা কম।

বাজারে আম বিক্রয় করতে আসা বেশ কয়েকজন আমচাষির সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা বাজারে আম নিয়ে আসারপর ৫০-৫২ কেজিতে মণ হিসেবে দিতে হচ্ছে। আমের দাম ঠিকমতো আন্দাজ করা অসম্ভব। সকালে এক প্রকার দাম, বিকালে আরেক প্রকার। তবে আমাদের পরিচর্যা অনুযায়ী আমের তেমন দাম নেই। পরবর্তীকালে দাম বাড়লে আমাদের পুষিয়ে যাবে। তাছাড়া আমের দাম স্থিতিশীল থাকলে ক্ষতি হবে না তবে খুব বেশি লাভ হবে না।

সাপাহার আমচাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, বাজারে গুটি, রানিভোগ, গোপাল ভোগ আম উঠতে শুরু করেছে। গুটি ৮০০-৯০০ টাকা, হিমসাগর ১৫০০-১৭০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আমের মণ বাজারে ৫০-৫২ কেজিতে মণবিক্রি হয় যা মেনে নেওয়ার মতো না।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী- এ বছরে উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ১৫ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় প্রায় এক হাজার পাঁচশ কোটি টাকার আম বাণিজ্য হতে পারে বলে জানা গেছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড