নিজস্ব প্রতিবেদক
কুষ্টিয়ার কুমারখালী-খোকসায় গড়াই নদীতে বেড়েই চলেছে পানি বৃদ্ধি। এতে নদী সংলগ্ন চাপড়া ও যদুবয়রা ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে পাড় ভেঙে ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি গ্রাম। ডুবে গেছে শত শত বিঘা কৃষি জমি। তবে ভাঙন শংকা দেখা দিয়েছে খোকসার হিজলাবট আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ হিলালপুর, কালিবাড়ি বাঁধপাড়া, কমলাপুর ও জাগলবা গ্রামে।
সোমবার (২০ জুলাই) সকালে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ হলো গড়াই নদীতে জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করেছে। আর তিনদিন আগে থেকে উপজেলার যদুবয়বা ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রাম থেকে খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের হিজলাবট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার পাড়ের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
একটি পয়েন্টে প্রায় ১৫ মিটার পাড় ভেঙে পানি ঢুকে পড়েছে কৃষিজমিতে। এতে প্রায় চারশত বিঘা ধান,পাঠ, ভূট্টা, কলাবাগানসহ বিভিন্ন ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে।
ইতোমধ্যেই খোকসা উপজেলার হিজলাবট আশ্রয়ন প্রকল্পের হাজারো মানুষ রয়েছে পানিবন্দী। আর হিলালপুর গ্রামের ২০ ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীনের পথে আরও শতাধিক পরিবার। এছাড়াও কমলাপুর গ্রামের কিছু ঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ারও সংবাদ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, নদীর পাড় মেরামত করা না হলে কুমারখালীর দুই ইউনিয়নের প্রায় ১৫ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে চাপড়া ইউনিয়নের চাপরা গ্রামের নেহেদ আলীর বাড়ির পাশে প্রায় ৩০ মিটার গড়াই নদীর পাড় ভেঙে চাপড়া ও মধ্য চরপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে আরও পাঁচটি গ্রাম ও শতশত বিঘা কৃষিজমি হুমকিতে রয়েছে।
এ বিষয়ে খোকসার হিজলাবট গ্রামের কৃষক আহম্মদ আলী বলেন, প্রতি বছরই নদীর পাড় ভেঙে কৃষিজমি প্লাবিত হচ্ছে। এবারও আমার এগারো বিঘা জমির ফসলাদি প্লাবিত হয়েছে। ভাঙন ঠেকানো না গেলে শতশত বিঘা জমি প্লাবিত হবে।
কুমারখালীর এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, জমির ফসল খেয়ে বেঁচে আছি। প্রতিবার ভাঙনে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এবারও হয়েছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা লুৎফর রহমান বলেন, নদীতে ওভার-ফ্লো হওয়ার কারণে পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধ করলে অন্তত আশেপাশের ১৬ নদীর পানি থেকে রক্ষা পাবে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, বৃষ্টি ও জোয়ারে গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওভার-ফ্লো হয়েছে। চাপড়াতে একটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছিল। তবে স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গেই পানি প্রবাহ বন্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, পাড়ে ভাঙন রোধে একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, গড়াই নদীর পাড় ভেঙে চর-চাপড়া গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছিল। স্থানীয় ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহায়তায় তাৎক্ষণিক বাঁশ ও বালুর বস্তা ফেলে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে। তবে যদুবয়রায় ভাঙনের বিষয়টি আমার জানা নেই।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড