• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

চাচাতো ভাইকে হত্যা চেষ্টায় কয়া ইউনিয়ন আ. লীগের দপ্তর সম্পাদক গ্রেপ্তার

  বিশেষ প্রতিবেদক

১৭ মে ২০২০, ১৪:০১
কুষ্টিয়া
আহত আব্দুল মজিদ

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আব্দুল মজিদকে (৫৫) কুপিয়েছে তার চাচাতো ভাইয়েরা। এই ঘটনায় তার স্ত্রী ও দুই সন্তানও আহত হয়েছে। শনিবার (১৬ মে) রাত নয়টার দিকে তার বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত আব্দুল মজিদ একই এলাকার মৃত আনসার মুন্সির ছেলে। পেশায় তিনি একজন দিনমজুর ও ভ্যান চালক।

আহত আব্দুল মজিদের সাথে কথা বললে তিনি দৈনিক অধিকারকে জানান, আমার সাথে আমার চাচাতো ভাইদের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। কাল রাতে তারা আমার স্ত্রীকে নানান অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তাদেরকে এই ধরণের কথা বলতে নিষেধ করায় লিয়াকত, সৈকত, মিলন, সজল, হবু ও পলাশ আমার উপর হামলা করে। তারা আমাকে অনেক মারধর করে এবং চাকু দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। আমার স্ত্রী ও দুই সন্তান আমাকে বাঁচাতে এলে তাদেরকেও বেরধক মারপিট করে। এছাড়াও হবুর স্ত্রী ও তার মেয়ে এক পর্যায়ে আমাকে আঘাত করে।

ভিকটিম আব্দুল মজিদের সহধর্মিণী জানান, আমাদের নিয়ে প্রায়ই তারা বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত। এই বিষয়ে আমি কখনো আমার স্বামীকে কিছু বলি না। কাল যখন তারা আবার এসব কথা বলে তখন আমার স্বামী ঘরেই ছিল। সে এই কথা শুনে তাদের এই ধরণের কাজ না করতে বলায় তারা আমার চোখের সামানে আমার স্বামীকে বেধড়ক মারপিট করেছে। আমি আমার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে লিয়াকত আমাকে ও আমার সন্তানদের মারপিট করেছে।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আহত আব্দুল মজিদ খুবই হতদরিদ্র একজন মানুষ। দিন আনে দিন খাই। জমিজমা নিয়ে অনেক আগে থেকেই তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জের ধরে লিয়াকত, তার ছেলে ও ভাইয়েরা মিলে সুযোগ বুঝে তাদের উপর হামলা চালায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুইজন স্থানীয় ব্যাক্তি জানিয়েছেন, আসামি লিয়াকত সুদের ব্যবসার পাশাপাশি সমাজের নানান অপকর্মের সাথে জড়িত। তিনি কয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে, চেক জালিয়াতি, জমি দখল, দোকানপাট দখলসহ নানান অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। এছাড়া তার ছেলে সজল তার বাবার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিজের বউ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে অন্যের বউ তুলে এনে সংসার করছে। সজল কয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ১ নং ওয়ার্ডের সহকারী জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে দায়িত্বরত আছে। এছাড়াও লিয়াকত অর্থ আয়ের জন্য তার নিজের স্ত্রীকে দিয়ে নানান যৌনকর্ম করিয়ে থাকেন।

ঘটনার পরে হাসপাতালের জুরুরী বিভাগে

ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক স্বপনের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন। ঘটনাটি আমি শুনেছি। আমি একজন সমাজসেবক হিসাবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

কুমারখালী থানার সাব ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. শিমুল দৈনিক অধিকারকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তার পরামর্শে কুমারখালী থানার দায়িত্বরত মুন্সি কামরুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, থানায় লিয়াকতকে এক নম্বর আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের মধ্যে লিয়াকত, সজল ও পলাশকে গতকাল রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য তিন আসামি পলাতক রয়েছে। গ্রেপ্তার তিন আসামিকে আজ কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড