• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

৩ মাসে মসজিদের দানবাক্সে দেড় কোটি টাকা

  কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৩:০৯
টাকা
সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে দানবাক্স থেকে পাওয়া টাকা গণনা করা হয় (ছবি : দৈনিক অধিকার)

তিন মাসের ব্যবধানে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক ‘পাগলা মসজিদের’ দানবাক্সে জমা পড়েছে প্রায় দেড় কোট টাকা। টাকার ভাঁজে ভাঁজে আরও পাওয়া গেছে চাঁদ-তারা খচিত স্বর্ণ ও রুপার অলংকারসহ বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রা।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। পরে সন্ধ্যায় গণনা শেষে মোট ১ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ টাকা পাওয়া যায়।

এর আগে গত ২৬ অক্টোবর ওই দানবাক্সগুলো খোলা হয়। সে সময় দানবাক্সগুলো থেকে মোট ১ কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া যায়। সেই হিসেবে এবার ৬৬ হাজার ১০০ টাকা কম দান পড়েছে।

তবে কিশোরগঞ্জের এই ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স এবার তিন মাস ১৯ দিন পর খোলা হয়েছে।

শনিবার সকালে সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হলে রীতিমতো সবার চোখ কপালের ওঠার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়। দানবাক্সগুলো থেকে একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার হাজার হাজার কচকচে নোট। পরে টাকাগুলো বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় গণনার কাজ। যা চলে দিনব্যাপী। গণনার পর হিসেবে আসে টাকার পরিমাণ দেড় কোটি ছাড়িয়েছে।

এবার টাকা গণনায় মসজিদ ও মাদরাসার ৬০ জন ছাত্র-শিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ অংশ নেন। এছাড়া কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার তত্ত্বাবধানে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফজলে রাব্বি, মাহামুদুল হাসান, মো. উবায়দুর রহমান সাহেল, দানবাক্স কমিটির সদস্যসহ রূপালী ব্যাংকের কিশোরগঞ্জ শাখার সব পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ টাকা গণনার তদারকি করেন।

প্রতিবারের মতো টাকা গণনার এই এলাহী কাণ্ড নিজ চোখে দেখার জন্য শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এ দিন মসজিদে ভিড় জমান। পাগলা মসজিদের দানবাক্সে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার দান করা ছাড়াও প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ এখানে হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন।

অনেকেরই ধারণা, খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনের আশা পূরণ হয়। সেজন্য দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এই মসজিদে এসে দান করে থাকেন। শুধু মুসলিমরাই নন অন্য ধর্মের মানুষেরাও মনের আশা পূরণের জন্য এখানে দান করে থাকেন।

টাকা গণনার কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, এবার পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে ১ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ টাকা পাওয়া গেছে। টাকাগুলো ইতোমধ্যেই রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও ডলার, রিয়ালসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। তবে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার অন্যবারের চেয়ে এবার পরিমাণে বেশি পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, এর আগে ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মসজিদের দানবাক্স থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫০ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সর্বশেষ গত ২৬ অক্টোবর দানবাক্স খুলে ১ কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া যায়। যা দানবাক্সগুলো থেকে পাওয়া গতবারের চেয়ে ৬৬ হাজার ১০০ টাকা কম।

মসজিদ কমিটির সূত্রে জানা যায়, তিন মাস পর পর এই মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। প্রতিবারই এমন দান পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন : মাদক নির্মূলে খোকসার ওসির উজ্জ্বল সাফল্য

উল্লেখ্য, এই মসজিদটির অবস্থান জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে। বর্তমানে দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এই মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্স। ইতোমধ্যেই মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের আয় থেকে এর উন্নয়ন, এতিমখানা, মাদরাসা, জটিল রোগীদের চিকিৎসা সেবায় আর্থিক সাহায্যসহ বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।

ওডি/আইএইচএন

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড