• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শীতে কাতর ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ

  আল মামুন জীবন, ঠাকুরগাঁও

১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:০৩
ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ঠাকুরগাঁওয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে ক্রমশ বাড়ছে শীতের তীব্রতা। দিনের বেলায় হালকা রোদ থাকলেও সন্ধ্যার পরই ঠাণ্ডার প্রকোপে জড়সড় হয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এর ফলে রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে কর্মস্থল ত্যাগ করে গৃহে ফিরে যাচ্ছে কর্মব্যস্ত মানুষ।

ঠাকুরগাঁও কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক আফতাব উদ্দীন মুঠোফোনে দৈনিক অধিকারকে বলেন, বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছিল।

হিমালয়ের কোল ঘেঁষা সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ে প্রতি বছর শীতের তীব্রতা অন্যান্য জেলার চেয়ে বেশি। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসে শীতের আগমন ঘটে। পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মাঝামাঝিতে শীতের প্রকোপ বাড়ে এ দুই জেলায়। এ বছর একটু আগাম শীতের আগমনে কিছুটা বিপাকে সাধারণ মানুষ। ভোর বেলা কুয়াশাছন্ন থাকছে চারদিক। এর ফলে চলাচলের রাস্তাগুলোতে ট্রাক, বাস ও মোটরসাইকেলগুলোকে দিনের বেলা হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হচ্ছে ঠাণ্ডা। রাত ৮টার পরেই শীতের কম্বল, লেপ মুড়ি দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করে মানুষ। অনেকেই আগুন জ্বালিয়েও শীত নিবারণের চেষ্টা করেন।

স্থানীয়রা জানায়, দিনের বেলা বেশ গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাতভর বৃষ্টির মত টুপটুপ করে কুয়াশা ঝরতে থাকে। বিশেষ করে ধানের শীষে কুয়াশা বিন্দু বিন্দু জমতে দেখা যায়। সকালে যারা ঘাসের ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করেন কুয়াশার কারণে তাদের কাপড় ভিজে যায়।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের লালাপুর গ্রামের বাস চালক মকবুল হোসেন জানান, ভোরে গাড়ি নিয়ে বের হবার সময় রাস্তায় কুয়াশা লক্ষ করা যাচ্ছে। তাছাড়া শীত পুরোদমে এখনও আসেনি। পুরোদমে শীতের আগমন এর চেয়ে বেশি ঠাণ্ডা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানান তিনি। জেলা শহরের টেকনিক্যাল মোড়, কালীবাড়ি, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও রোডসহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে লেপ-তোশক বানাতে ব্যস্ত কারিগররা। দোকানের সামনে বসে একটার পর একটা লেপ-তোশক বানাচ্ছেন তারা। লেপ-তোশকের কারিগররা বলেন, প্রায় প্রতিদিনই তারা লেপ সেলাই করে থাকি। সাইজ অনুযায়ী প্রতিটি লেপে তারা মজুরি পান ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। সেলাইকর্মীরাও সবাই একই নিয়মে মজুরি নিয়ে থাকেন। দিন শেষে ৫শ থেকে ৮শ টাকা রোজগার হয় তাদের। তা দিয়েই সংসার চালান তারা।

পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি এনজিও ব্রাকের এরিয়া ম্যানেজার আবু সাঈদ বলেন, শীতকালে আমরা প্রতি বছরই শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। চেষ্টা করি তীব্র শীতে একটু গরমের পরশ দেওয়ার। ঠাকুরগাঁওয়ে যখন প্রচণ্ড শীত পড়া শুরু করবে, দুই-চারদিন কুয়াশায় সূর্য মানুষ দেখতে পাবে না, এমন সময়গুলোতে শীতার্ত সহযোগিতা করে ব্র্যাক।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে। পাঁচটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের শীতবস্ত্র প্রেরণ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেগুলো বিতরণ শুরু হবে। এছাড়াও ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কিছু লেপ তৈরি করা হয়েছে। যারা একেবারে অসহায়, তাদের লেপ ও কিছু নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিন।

তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে নিজ নিজ এলাকার পিআইও অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানোর জন্য।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিকট দুস্থদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। সেগুলো যাচাই বাছাই করে পুরোদমে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড