নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নেতার নির্দেশ মানতে বাধ্য হয়ে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন বলেও শিক্ষকদের কেউ কেউ স্বীকার করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭ বছর পর রবিবার নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এবার নতুন ও পুরাতনদের মধ্যে যারা দলের নেতৃত্বে আসতে চান তারা তাদের পক্ষে জনমত তৈরি করতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্ভাব্য নেতৃত্বের অনেকেই এবং তাদের নিকটজন ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। ফলে তাদের নির্দেশ মানতেই বাধ্য হয়ে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত এবং স্কুল বন্ধ রেখে সম্মেলনে যেতে হয়েছে।
অভিভাবক সূত্রে জানা যায় ,উপজেলার বাসুদেবপুর শীষ চন্দ্র বিদ্যানিকেতন হাই স্কুল, ডাক্তার নাসির উদ্দিন তালুকদার মহাবিদ্যালয়সহ উপজেলার অন্তত ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষকরা সম্মেলনে হাজির হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, বাসুদেবপুর শ্রীশ চন্দ্র বিদ্যানিকেতনে রবিবার ষষ্ঠ, সপ্তম ও নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা ছিল। এই স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি তৌহিদুর রহমান লিটন দলের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী। বাসুদেবপুর শীষ চন্দ্র বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক ইয়াসিন আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সভাপতির নির্দেশ পেয়ে তারা অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। এ জন্য বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে স্কুল খোলা রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ডাক্তার নাসির উদ্দিন তালুকদার মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোহম্মদ আলী বলেন, সভপতির নির্দেশের কারণে তিনিসহ ২-১ জন শিক্ষক অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। তবে যথা নিয়মে ক্লাস হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সভাপতি পদ প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাসহ পরীক্ষা স্থগিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলার স্বরকুতিয়া হাইস্কুলও বন্ধ রাখা হয়। এই স্কুল কমিটির সভাপতি হচ্ছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আশরাফুজ্জামান মিঠু। তিনি দলের সভাপতি পদ প্রার্থী রইস উদ্দিন রুবেলের নিকট আত্মীয়। রুবেলের পক্ষে অবস্থান নিতে স্কুলের শিক্ষকদের সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।
তবে আশরাফুজ্জামান মিঠু এই অভিযোগকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করে বলেন, স্কুলে যথা সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সভপতি প্রার্থী রইস উদ্দিন রুবেল এসব অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে বলেন, যারা কাউন্সিলর তারাই সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে কেউ সম্মেলনে আসেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল জানান, তার জানা মতে উপজেলার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল না। শিক্ষার্থীদের যেন সমস্যা না হয় সে জন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে সম্মেলনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
উপজেলা অফিসের সামনের খোলা মাঠে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। যদি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে, তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড