মুনশি আমিনুল ইসলাম
অহংকার পতনের মূল- এ কথা আমরা সবাই জানি। তবে ইসলামের দৃষ্টিতে অহংকার কতটা খারাপ তা খুব না জানা থাকলেও ইসলাম যে অহংকারের বিপক্ষে সেটা সবার কমবেশি জানা আছে। অহংকার মানুষকে শেষ করে দেয়। এমনকি ভেতরে থাকা প্রতিভাকেও ধ্বংস করে দেয়। একজন মানুষ খাঁটি মুমিন ব্যক্তি হতে হলে তাকে অবশ্যই অহংকারমুক্ত থাকতে হবে।
অহংকার মানুষকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছার পথে প্রতিবন্ধক। অহংকার এমন এক জিনিস, যা অন্যদের সঙ্গে পরামর্শ করা কিংবা অন্যের সাহায্য চাওয়ার মানসিকতা পর্যন্ত নষ্ট করে দেয়। এ ছাড়া অহংকারী স্বার্থপর লোকের আচার-আচরণ, কর্মকাণ্ড ইত্যাদি ভয় কিংবা ত্রাস সৃষ্টি করে। যার ফলে অন্যদের অধিকার পদদলিত হয়। মঙ্গল ও কল্যাণ অনুভবের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এমনকি নিজের যোগ্যতা, সামর্থ্য ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেধার বিকাশ রুদ্ধ হয়ে যায়। তাই তো জ্ঞানীরা বলেন, ‘মেধা ও প্রতিভা ধ্বংসের সহজতম উপায় হলো- অহমিকা।’
অহংকারী যে ধ্বংসপ্রাপ্ত- এর উদাহরণ হলো, ইবলিস-শয়তান। ইবলিস ছিলো- জিনদের অন্তর্ভুক্ত। প্রায় ছয় হাজার বছর পর্যন্ত সে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল ছিলো। ফেরেশতাদের কাতারেও তার একটা বিশেষ পদমর্যাদা ছিলো। কিন্তু যখন ইবলিস আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে অহংকার দেখালো তখনই সে প্রত্যাখ্যাত হয়ে গেলো। একেবারে চিরদিনের জন্য বিতাড়িত, পথভ্রষ্ট হয়ে গেল সে।
মহান আল্লাহর কোনো সৃষ্টিরই অহংকার করা সাজে না; গর্ব ও অহংকার একমাত্র আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য। হজরত লোকমান (আ.) তার ছেলেকে অহংকার থেকে দূরে থাকার আদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘ঘৃণা ও অবজ্ঞাভরে মানুষের কাছ থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিও না, গর্ব ও অহংকারের সঙ্গে দুনিয়াতে চলো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারী লোকদেরকে পছন্দ করেন না।’ হাদিসে এ বিষয়ে কঠোর সতর্কবার্তা এসেছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এমন কোনো ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে শস্যদানা পরিমাণ ঈমান থাকবে এবং এমন কোনো ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে শস্যদানা পরিমাণ অহংকার থাকবে।’ (সহিহ মুসলিম :১/৬৫)
বর্ণিত হাদিসে জান্নাত থেকে দূরে এবং জাহান্নামে প্রবেশের কারণ হিসেবে অহংকারকে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ অহংকার এতো মারাত্মক গুনাহ, যার থেকে সামান্য অহংকার প্রকাশ পাবে, সে জান্নাতে স্থান পাবে না; তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড