মুনশি আমিনুল ইসলাম
চীনে মহামারির আকার ধারণ করেছে করোনা ভাইরাস। এখন পর্যন্ত অন্তত ৮১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কেবল চীনে নয়, আক্রান্ত হয়েছে ভারত, জাপান, হংকং, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের প্রায় চব্বিশটি দেশ। গোটা পৃথিবী এই ভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে। চীন ছাড়াও বিভিন্ন দেশে এই রোগে মারা গেছেন অনেকে। তবে এরই মধ্যে আশ্চর্য একটি খবর পাওয়া গেছে। তা হলো, উইঘুর মুসলিমরা আল্লাহর বিশেষ রহমতে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত আছেন। অথচ সেখানকার বর্তমান যে পরিবেশ, তাতে এই রোগে তাদেরই আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা ছিল সবচে বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসকে ‘মহামারি’ বলে সতর্কতা জারি করেছে। তারই মধ্যে চীনের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছিল উইঘুর মুসলিমদের বন্দি শিবির। চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সংশোধনের নামে বিভিন্ন বন্দি শিবিরে উইঘুর মুসলিমদের রাখা হয়েছে মানবেতর পরিস্থিতির মধ্যে। সেখানে উইঘুর মেয়েদের জোর করে বন্ধ্যা করে দেয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের ধর্মীয় আচারবিধি পালন নিষিদ্ধ করা হয়েছে; অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে যখন প্রায় ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমের দিন কাটছে তখন করোনা ভাইরাস ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উইঘুর বন্দিশিবিরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া প্রসঙ্গে সম্প্রতি মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে এক প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, চীনের অন্যান্য এলাকার তুলনায় উইঘুর মুসলিমরা করোনার গ্রাস থেকে অনেকটাই রেহাই পাচ্ছেন। তার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ‘উইঘুর মুসলিমরা যেহেতু হালাল খাদ্য খেয়ে থাকেন, সেটা তাদেরকে করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ দূরত্বে রেখেছে।’ যদিও করোনা ভাইরাস সংক্রামক হওয়ায় তারা শিকার হবেন না, এ কথা বলার সুযোগ নেই। কিন্তু তারা যে এখনো এই ভয়াবহ ভাইরাস থেকে মুক্ত সেকথা স্পষ্ট জানিয়েছে সিএনএন।
করোনা ভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্ক আছে চীনের উহায়ের দক্ষিণ সামুদ্রিক খাবারের পাইকারি বাজারের সঙ্গে। যদিও বেশ কিছু সামুদ্রিক প্রাণী করোনা ভাইরাস বহন করতে পারে (যেমন বেলুগা তিমি), ওই বাজারটিতে অনেক জীবন্ত প্রাণীও থাকে, যেমন মুরগি, বাদুড়, খরগোশ, সাপ- এসব প্রাণী করোনা ভাইরাসের উৎস হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, চীনের হর্সশু নামের একপ্রকার বাদুড়ের সঙ্গে এই ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে।
উল্লেখ্য, চীনাদের প্রিয় খাদ্য আরশোলা, টিকটিকি, ইঁদুর, ব্যাঙ ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ। আর সেগুলোই মারাত্মক ভাইরাস বহন করে থাকে। মুসলিমরা এই সব খাদ্য ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞার কারণে গ্রহণ করেন না। তাদের হালাল খাদ্যই পছন্দ। এ ব্যাপারে জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের চৈনিক ইতিহাসের অধ্যাপক জেমস মিলওয়ার্ড উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইটারে বলেছেন, ‘বন্দি শিবিরে যা খারাপ অবস্থা, অস্বাস্থ্যকর ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে উইঘুর মুসলিমরা থাকছে তা নজরদারির প্রয়োজন।’ তাদের প্রতি চীন সরকারের অবহেলার কথা উল্লেখ করে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন- ‘যেভাবে করোনা ভাইরাস থাবা বসাচ্ছে তাতে উইঘুর বন্দি শিবির মৃত্যু উপত্যকা হয়ে উঠতে পারে।’
এই ব্যাপারে টুইটারে ‘ভাইরাস থ্রেট ক্যাম্পস’ নামে হ্যাশট্যাগ চালু করা হয়েছে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে করোনার থাবা এখনও প্রবেশ করেনি উইঘুর বন্দি শিবিরগুলোতে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড