• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‘দ্যা গেম’-এর তৃতীয় পর্ব

ধারাবাহিক উপন্যাস : দ্যা গেম

  রোকেয়া আশা

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:৩৮
গল্প
ছবি : প্রতীকী

টেক্সটটার ফাংশন কিরকম? ফিউদর টেক্সট সিন করার প্রায় সাথে সাথেই টেক্সটটা নাল হয়ে গেছে। এখন ইনবক্সে ব্লাংক একটা ম্যাসেজ পড়ে আছে। ম্যাসেঞ্জারে কিংবা অন্য কোন এপে হয়তো সম্ভব; কিন্তু সরাসরি ফোন টেক্সটের ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে, সেটা শোনেনি ফিউদর। কে টেক্সটটা পাঠিয়েছে, সেটা গত আটচল্লিশ ঘন্টা আগেও গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয় ছিলো না। কিন্তু গত পরশু রেড রুমের ঘটনাটার পর থেকে ফিউদরের ভাগ্য পরিবর্তনের একটা সুযোগ এসেছে। সে জানে সে কিভাবে বিটকয়েন দিয়ে ধনী হয়ে যেতে পারবে। এখানে, মিনিস্ট্রির আন্ডারে সাধারণ একজন প্রোগ্রাম ডেভেলপারের কাজ করে স্বচ্ছল জীবন কাটানো যায়, কিন্তু ফিউদরের স্বপ্ন আরও বড়। ধনী হতে হবে।

অবশ্য তারজন্য শুধুমাত্র এসাইনড কাজটাই কোনরকম অনাবশ্যক কৌতুহল ছাড়াই করে যাওয়া প্রয়োজন ফিউদরের। কৌতুহল সে দেখাতোও না। কিন্তু এখন এই টেক্সট ম্যাসেজটাই হঠাৎ করে ফিউদরকে কৌতুহলী করে তোলে। ধরেই নেয়া যায়, ফিউদরকে যেই অদৃশ্য ব্যক্তি এসাইন করেছে, সে নিজেও সম্ভবত বেশ বড় মাপের আইটি জিনিয়াস৷ রেড রুমের শিকারীরা আইটি জিনিয়াস হবে সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু অস্বাভাবিক এরকম একটা টেক্সটিং ফাংশন যার হাতে, সে নিজেও অস্বাভাবিক ধরনের জিনিয়াস বলেই ধরে নেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে নিজে কাজটা না করে ফিউদরকে দিয়ে কেন করাচ্ছে? ফিউদর স্মিরনোভের নাকে রহস্যের গন্ধ ঢোকে।

প্রথমে এক ঘরেই ঢোকে মেয়ে চারজন। এক এক করে পোশাক পালটে নেয় সবাই। মাশা নিজের পোশাক পালটে মাহিরার একটা জিন্স আর শার্ট পরে নেয়। আয়েশার দিকে তাকায় এরপর। আয়েশাই একমাত্র হিজাব পরে এই চারজনের মধ্যে। বোরকা না, তবে স্কার্ফটা পরে। - উম, দেখতেই পারছো ডাবল বেডের রুম। প্রতি রুমে দুইজন করে থাকার ব্যবস্থা। ইন্ডিয়ান টিমটায় দুইজন মেয়ে। একসাথেই থাকবে। তবে কোরিয়ার টিমটায় মেয়ে মাত্র একজন। ওর সাথে তোমাদের কেউ রুম শেয়ার করতে পারবে? মাশার কথা শুনে আয়েশা আড়চোখে মিশু মাহিরার দিকে তাকায়। ওরা একই কলেজে পড়ে, আগে থেকেই বন্ধু। আর এমনিতেও, আয়েশার সাথে ওদের বয়সেরও কিছুটা পার্থক্য তো আছেই। - মিশু আর মাহিরা একসাথে থাকবে। আমি কোরিয়ান মেয়েটার সাথে রুম শেয়ার করতে পারি। আয়েশার দিকে তাকিয়ে ঘাড় কাত করে হাসি দেয় মাশা। আয়েশা নিজের ব্যাগটা তুলে নেয়। মাশা বের হয়ে যায় আয়েশার সাথে।

মিশু আর মাহিরার রুম নাম্বার ২১৩। ২১৭ নাম্বার রুমটার সামনে গিয়ে মাশা দরজায় টোকা দেয়। ভেতরের মানুষটা বোধহয় প্রস্তুতই ছিলো। দ্বিতীয়বার টোকা দেওয়ার আগেই দরজাটা খুট করে খুলে যায়৷ মেয়েটার নিখুঁত সোজা চুলগুলো কাঁধ অব্দি লম্বা। কপালের সামনে চুল কাটা। এই হালকা ঠাণ্ডা আবহাওয়াতেও মেয়েটার পরনে নীল রঙের জিন্সের শর্টস। গায়ে গোলাপি জাম্পার। মাশাই প্রথমে পরিচিত হয়ে নেয়। মেয়েটা হাত ধরে বলে, ‘আমি ইয়ুন দুয়ো। কাউদক ইয়ুন দুয়ো।’ - আমি আয়েশা সিদ্দীকা। মাশা তাড়া দিয়ে দু’জনকে বলে, ‘বি ফাস্ট। আর আধ ঘন্টা পর আমরা বের হবো।’ মাথা নেড়ে সম্মতি দেয় বাকি দুজন।

‘ম্যাসেজটার কথা বলবি ওদেরকে?’- মাহিরা প্রশ্ন করে মিশুকে। - বুঝতে পারছি না। শুধু আমি আর তুই পেয়েছি। ওরা তো নিশ্চয়ই পায় নি। দরজায় নক হতেই থেমে যায় মিশু। মাহিরা উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দেয়। দীপ্ত আর তারিকুল। - আসবো আপুনি? মাহিরা দরজার সামনে থেকে সরে গিয়ে দীপ্তকে ভেতরে আসার জায়গা করে দেয়। দীপ্তের পেছন পেছন তারিকুল ঢোকে। ‘দীপ্তদা, বসো।’ মাহিরার কথা শুনে মৃদু হাসে দীপ্ত৷ পিচ্চি দুইটার সাথে আয়েশার চাইতেও দীপ্তের সম্পর্ক বেশি সহজ। দীপ্ত রুমের দেয়াল ঘেঁষে থাকা সোফাটায় বসে। তারিকুল বসে ফাঁকা বেডটায়। মাহিরা বসে না। দীপ্ত চশমাটা খুলে কাচ পরিষ্কার করতে করতে মুখ তুলে তাকায়। - মিশু, মাহি, তোদেরকে একটা প্রশ্ন করার ছিলো। ওরা উত্তর দেয় না। দীপ্ত আবার কথা বলে, সরাসরি প্রশ্ন। - তোদের কাছে কি গতকাল ফ্লাইটের আগে কোন টেক্সট এসেছে? তারিকুল লক্ষ্য করে, টেক্সটের কথা শুনতেই মেয়ে দুটোর মুখ পাণ্ডুর হয়ে গেছে। মিশু আর মাহিরা পরস্পরের মুখের দিকে তাকায়। হয়তো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। মাহিরাই কিছুটা দ্বিধা করে শেষে জানায়, - হ্যাঁ। আজব একটা ফন্টে। - কি লেখা ছিলো টেক্সটে? - তারিকুল জানতে চায়। - ওয়েলকাম টু দ্যা গেম। দীপ্ত আর তারিকুল চুপ থাকে কিছুক্ষণ। ‘টেক্সটটা দেখাতে পারবি?’ দীপ্তের কথা শুনে মাহিরা বলে, ‘নেই ওটা। আমি স্ক্রিনশট তুলতে গেছিলাম। তখনই নাল হয়ে গেছে। মিশুরটাও।’ - কিন্তু তোরা স্ক্রিনশট কেন তুলতে চেয়েছিলি? এবার মিশু উত্তর দেয়, ‘ওই ফন্টটা আমি চিনি। ভাইয়া যখন মারা গেলো, তখন আমি ভাইয়ার রুমে ছিলাম। ভাইয়ার হাতে ফোন ছিলো।’ - তো? - ভাইয়া মারা যাওয়ার সময় ভাইয়ার ফোনেও ঠিক একই ফন্টের একটা ম্যাসেজ এসেছিলো।

(চলবে...)

‘দ্যা গেম’-এর দ্বিতীয় পর্ব- ধারাবাহিক গল্প : দ্যা গেম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড