• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অস্ট্রেলিয়ায় চলছে ভোট গণনা : শুরুতেই এগিয়ে ক্ষমতাসীনরা

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ মে ২০১৯, ১০:১২
স্কট মরিসন
অস্ট্রেলিয়ায় কনজারভেটিভ পার্টির নেতা স্কট মরিসন ও মধ্য-বামপন্থী লেবার পার্টির নেতা বিল শর্টেন। (ছবিসূত্র : দ্য এক্সপ্রেস)

এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্বে ওশেনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত দেশ অস্ট্রেলিয়ায় শেষ হল ৪৬তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। গত শনিবার (১৮ মে) দেশটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন সকাল থেকেই দলে দলে ভোটাররা কেন্দ্রে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে শুরু করেন।

এরপর একই দিন স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ভোট গ্রহণ শেষে শুরু হয় গণনা। এতে মোট ভোটের প্রায় ২ শতাংশের কম গণনা শেষে দেখা যায়, ১৯ আসনে বর্তমান জোট সরকার দল লিবারেল ও ন্যাশনাল পার্টি অনেকটাই এগিয়ে আছে। যেখানে লেবার পার্টি জয় পেয়েছে মোট ৯ আসনে। এবারের নির্বাচনে দলটির সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন মোট ৭৬টি আসন।

এ দিন দেশজুড়ে প্রায় ৭ হাজারের অধিক ভোট কেন্দ্রে একযোগে চলেছে ভোটের যাবতীয় কার্যক্রম। যেখান কোনো কেন্দ্র থেকেই পাওয়া যায়নি কোনো ধরণের অস্বাভাবিক ঘটনার তথ্য। দীর্ঘদিন যাবত দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকরাও এবার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করেছেন তাদের ভোটাধিকার। ওশেনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত এই দেশটিতে প্রায় ৩০ হাজারের অধিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লোকের বসবাস।

অজি আইন অনুযায়ী, দেশটিতে ১৮ বছর বয়সের ওপরে সবারই ভোট দেওয়া এক রকম বাধ্যতা মূলক। সে হিসাবে এবার প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখের বেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, যাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই নারী ভোটার। যা দেশটির জন্য নতুন এক রেকর্ড। যদিও এরই মধ্যে প্রায় ৪৭ লাখের অধিক ভোটার এই নির্বাচনের আগেই তাদের প্রি-ভোট প্রদান করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি তিন বছর পরপর সরকার পুনরায় গঠনের জন্য সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যদিও ২০০৭ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রধানমন্ত্রীই নিজের পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। যে কারণে নির্বাচনে জয় লাভ করলেও বিজয়ীদের পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় টিকে থাকাটাই হচ্ছে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।

অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন

অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চলছে ভোট গণনা। (ছবিসূত্র : দ্য ডেইলি মেইল)

সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী দলকে অবশ্যই পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদের (নিম্ন কক্ষ) ১৫১টি আসনের মধ্যে অন্তত ৭৬টি আসনে জয় পেতে হবে। যদিও এতে ক্ষমতাসীন মধ্য-ডানপন্থী লিবারেল-ন্যাশনাল জোট অবশ্য বর্তমানে দুটি কম আসন নিয়ে সরকারে আগে থেকেই টিকে আছে।

এবারের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের লিবারেল-ন্যাশনাল জোট এবং বিরোধী নেতা বিল শর্টেনের মধ্য-বামপন্থী অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির (এএলপি) মধ্যেই মূল লড়াই হবে বলে আগে থেকেই আভাস পাওয়া গেছে। যদিও ভোটের আগে জনমত জরিপগুলো জানিয়েছিল, এবার বিরোধী দল লেবার পার্টিই এগিয়ে। কেননা তারা সম্প্রতি সরকারের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে জনগণের সামনে নিজেদের মত খুব ভালোভাবেই উত্থাপন করতে পেরেছিল বলে দাবী দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন হচ্ছে দেশটির ভিক্টোরিয়া রাজ্য। যেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজ্য নির্বাচনেও জোট সরকার দল লিবারেলের বিরুদ্ধে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে লেবার পার্টির নেতা ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুস বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।

মূলত এর পর থেকেই আসনটি সকলের কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের জাতীয় নির্বাচনের সকল ফলাফলের মোড় ঘুরিয়ে সক্ষম এই আসনটি। যদিও এতে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির জয়ের সম্ভাবনাই অনেকটা বেশি বলে মনে করছেন বেশিরভাগ বিশ্লেষকরা। তবে জনমত জরিপগুলোতে রাজ্যটিতে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে ৫১-৪৯ সমর্থনের কথা বলা হয়েছে।

যদিও বিশ্লেষকদের দাবী, বর্তমানে ক্ষমতাসীন মরিসন সরকারের জয় পাওয়ার বেশির ভাগটাই দলটির সৌভাগ্যের ওপর নির্ভর করছে। অপর দিকে এই জয়ের জন্য অনেক লড়াই করতে হবে বিরোধী দল লেবার পার্টিকে।

এই নির্বাচনকে পুরোপুরি সুষ্ঠু দাবী করা হলেও দেশটির নির্বাচন কমিশন বরাবর এরই মধ্যে লিবারেলের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে ভোটার আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছে লেবার পার্টি। বিরোধী এই দলটি জানায়, এই নির্বাচনে দেশটির বৃহৎ চীনা বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান ভোটারদের ব্যবহার করছে লিবারেল। কেননা প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের সামনে চীনা ভাষায় লিবারেলে ভোট দেওয়ার প্রচারণা চালিয়েছে দলটি।

তাছাড়া চীনা কমিউনিটিকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন শব্দ ও রঙ ব্যবহারের মাধ্যমে যেখানে চীনা ভোটার বেশি এমন সব এলাকায় তাদের পোস্টার লাগিয়েছিল দলটি। যদিও লেবার পার্টির এই অভিযোগ পুরোপুরি বাতিল করে দিয়েছে অজি নির্বাচন কমিশন।

আরও পড়ুন :- অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ নির্বাচনে চলছে ভোটগ্রহণ

কমিশন কর্মকর্তারা জানান, লিবারেল তাদের নির্বাচনি প্রচারণায় কোনো ধরণের নীতিমালা বিরোধী কিছুই করেনি। যে কারণে লেবার পার্টির এই অভিযোগটি আর গ্রহণ করা হচ্ছে না।

সূত্র : 'রয়টার্স'

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড