বাইডেনের জয়ে এখনো অনেক বিশ্বনেতাই নীরব

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন জো বাইডেন। ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রপ্রধান বাইডেনকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন। যদিও বেশ কয়েকজন নেতা অবশ্য এখনো বাইডেনের জয়ের খবরে খুশি হতে পারেননি।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে সব ধরনের বৈধ চ্যালেঞ্জের সমাধান হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি বাইডেনকে তার জয়ের জন্য স্বাগত জানাচ্ছেন না।

রবিবার (৮ নভেম্বর) লোপেজ ওব্রাদর সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, জো বাইডেন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুজনের সঙ্গেই তার দেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণে বৈধ চ্যালেঞ্জগুলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করতে চান। তার মতে, আমরা এখনই বেপরোয়া আচরণ করতে চাই না।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান এমন অনেক নেতাই বাইডেনকে স্বাগত জানানো থেকে নীরব ভূমিকায় অবস্থান করছেন। এর মধ্যে অন্যতম ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এছাড়া রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও জো বাইডেনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।

আরও পড়ুন : মুসলিম দেশগুলোয় আরোপিত ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করবেন বাইডেন

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান। কিন্তু সেদিক থেকে বাইডেনের সঙ্গে বোলসোনারোর সম্পর্ক মোটেও ভালো নয়। নির্বাচনি দৌড়ে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

বাইডেন যখন ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে বলেছিলেন যে, আমাজন রেইনফরেস্টকে রক্ষা করতে ব্রাজিলকে তাদের চাপ প্রয়োগ করা উচিত তখন বোলসোনারো তার বক্তব্যকে 'বিপর্যয়' বলে উল্লেখ করেছিলেন। সে সময় এক টুইট বার্তায় জো বাইডেনের নামের বানানও ভুল করেছিলেন বোলসোনারো। তিনি জো বাইডেনের জায়গায় লিখেছিলেন জন বাইডেন।

ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। তিনিও জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানাননি। তবে এক্ষেত্রে ট্রাম্পের মিত্র কিছু দেশকে ব্যতিক্রমী ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। যেমন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রোদ্রিগো দুতের্তে বাইডেনকে স্বাগত জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন : হোয়াইট হাউস ছাড়লেই ট্রাম্পকে তালাক দেবেন মেলানিয়া!

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেতে শুরু করেছেন বাইডেন। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেন, আমি জো বাইডেনের সঙ্গে ভবিষ্যতে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করার জন্য আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছি।

তার মতে, আমাদের সময়কার যে বিশাল চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তা মোকাবিলায় আমেরিকা ও ইউরোপ তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক অটুট রেখে কাজ করবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো টুইট বার্তায় বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বর্তমানের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। আসুন একসঙ্গে কাজ করি।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সাঞ্চেস বলেন, তিনি বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে আগ্রহী এবং তিনি তাদের সৌভাগ্য কামনা করেছেন।

আরও পড়ুন : বাইডেনের সময় কেমন হবে চীন-মার্কিন সম্পর্ক?

বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করার পর একটি দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেন, কানাডা ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক অন্যান্য, যা বিশ্বে ব্যতিক্রমী। দুই দেশের সরকার শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায়, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে এবং বিশ্বে জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় এক সঙ্গে কাজ করবে।