• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পোস্টন্যাজাল ড্রিপ : কী এবং কেন হয়?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

২৭ জুন ২০১৯, ১৪:৩৭
পোস্টন্যাজাল ড্রিপ
ছবি : প্রতীকী

প্রতিদিন আপনার নাক, শ্বাসনালী, মুখ, জিহ্বা ইত্যাদি অংশকে সুরক্ষিত রাখতে শরীর নিজ থেকে সর্দি উৎপাদন করে। সাধারণত, শরীরে চলে আসা জীবাণু ও ভাইরাসকে দূর করতে সাহায্য করে। খুব অল্প পরিমাণে উৎপন্ন হওয়ায় আমরা ব্যাপারটি টেরও পাই না। তবে অনেক সময় শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে সর্দি উৎপন্ন করে। আর সেসময় ব্যাপারটি শুধু বিরক্তিকর নয়, বরং, বেশ কষ্টকরও হয়ে পড়ে। এই পুরো প্রক্রিয়াটিকেই পোস্টন্যাজাল ড্রিপ বলা হয়। সাধারণত, আমাদের নাক ও মুখ দিয়ে বাড়তি এই সর্দি বের হয়ে আসে।

পোস্টন্যাজাল ড্রিপ কেন হয়?

সাধারণত যে কারণে পোস্টন্যাজাল ড্রিপ বেশি তৈরি হয় সেগুলো হলো-

● ঠান্ডা ● ফ্লু ● অ্যালার্জি ● সাইনাস ইনফেকশন ● যেকোন প্রদাহ ● নাকে কিছু আটকে গেলে ● গর্ভধারণ ● নির্দিষ্ট কোনো ওষুধের প্রভাবে ● আবহাওয়া ● রাসায়নিক কোন পদার্থ ● খাবার ইত্যাদি।

অনেকসময় সমস্যা অতিরিক্ত সর্দি তৈরি হওার কারণে হয় না। এখানে সমস্যার প্রধান কারণ সৃষ্টি হয় এই সর্দিকে প্রক্রিয়াজাত না করতে পারার কারণে। সেক্ষেত্রে, অতিরিক্ত সর্দি জমাট বেঁধে গলা, শ্বাসনালী এবং পাকস্থলীতে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মতো ব্যাপার তো আছেই।

পোস্টন্যাজাল ড্রিপের লক্ষণগুলো কী?

আপনার পোস্টন্যাজাল ড্রিপ হলে গলার মধ্যে কিছু একটা আটকে আছে এমন অনুভব করবেন। বারবার গলা পরিষ্কার করার দরকার পরবে। নাক দিয়ে সর্দি পরার ব্যাপার তো সাথে আছেই। বিশেষ করে রাতের বেলা এর কারণে কফের সমস্যা অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। আর এই প্রক্রিয়া যদি বেশিদিন চলতে থাকে, তাহলে আমাদের কানও বাজেভাবে আক্রান্ত হতে পারে। সাইনাস ইনফেকশন এবং জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যাগুলোরও মুখোমুখি হবেন আপনি এক্ষেত্রে।

সমাধান কী?

পোস্টন্যাজাল ড্রিপ দূর করতে আপনি কী পদক্ষেপ নেবেন সেটা পুরোটাই নির্ভর করে আপনার সমস্যা কোন পর্যায়ে আছে এবং কেন এমনটা হয়েছে তার উপরে। এই যেমন- ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে যদি আপনার পোস্টন্যাজাল ড্রিপ তৈরি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার অ্যান্টিবায়োটিক নিতে হতে পারে। অবশ্য, আপনার কফের রঙ সবুজ বা হলদেটে হওয়া মানেই কিন্তু এই নয় যে, আপনার ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়েছে।

ঠান্ডার কারণে কফের রঙ এমন হয়ে যেতে পারে। এতে করে, ভাইরাসের কারণে এমন সমস্যা তৈরি হলে সেটার সমাধান আপনি অ্যান্টিবায়োটিকসে পাবেন না। সাইনাসিটিস ও ভাইরাল ইনফেকশনের সমাধান হিসেবে অ্যান্টিহিস্টামিন ও ডিকনজেস্টান সেবন করতে পারেন আপনি। এছাড়া, অ্যালার্জির কারণে তৈরি হওয়া পোস্টন্যাজাল ড্রিপের ক্ষেত্রে এগুলোর সাথে সাথে স্টেরয়েড ও ন্যাজাল স্প্রে গ্রহণ করতে পারেন আপনি। এট বেশ কার্যকরী।

পুরনো ধাঁচের অ্যান্টিহিস্টামিন আপনার সর্দিকে আরও বেশি ঘন করে দেয়। ফলে এতে করে ভালোর চাইতে খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অন্যদিকে, নতুন ধরনের অ্যান্টিহিস্টামিনের ক্ষেত্রে আপনার সর্দি শুকাতে গিয়ে আরও বেশি ঘন হয় না। কান ও নাকের যে ব্লকগুলো আছে, এতে করে সেটা খুলে যায় এবং সংক্রমণ শরীরে ছড়িয়ে পড়ে না।

অবশ্য, এতে করে আপনার মুখ বারবার শুকিয়ে যাওয়া ও মাথা ঘুরানো ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, কোন ওষুধ আপনার জন্য গ্রহণ করা সঠিক ও কার্যকরী হবে সেটা ঠিক করতে প্রথমেই চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।

এ সময় আপনি ওষুধের পাশাপাশি ন্যাজাল স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। নাকে ময়েশ্চারাইজার প্রদান করার জন্য উষ্ণ বাষ্পও ব্যবহার করতে পারেন।

চিকেন স্যুপ কতটা কার্যকরী?

অনেকেই সর্দি নিরাময়ে চিকেন স্যুপ খেয়ে থাকেন। এমনিতে এর সরাসরি কোনো উপকারিতা না থাকলেও আপনি চিকেন স্যুপ খেলে এটি উষ্ণতা প্রদান করবে। ফলে সর্দি জমাট বেঁধে থাকলে সেটা দূর হয়ে যাবে।

পোস্টন্যাজাল ড্রিপ মোটেও ভয় পাওয়ার মতো কিছু নয়। তবে আপনার সর্দিতে যদি রক্ত পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে খুব দ্রুত চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। যত দ্রুত আপনি পদক্ষেপ নিবেন, তত দ্রুতই রোগ নিরাময় হবে। তাই, দেরি না করে কাজ শুরু করুন।

সূত্র- ওয়েবএমডি।

ওডি/এনএম

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড