• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১  |  
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ব্রেস্ট বায়োপসি : আপনার প্রশ্ন, বিশেষজ্ঞের উত্তর

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

১৮ মার্চ ২০১৯, ১৩:৪৪
ব্রেস্ট বায়োপসি
ছবি : প্রতীকী

ক্যানসার বর্তমান সময়ে খুব পরিচিত একটি অসুখে পরিণত হয়েছে। আর নারীদের ক্ষেত্রে এই ক্যানসার সবচাইতে বেশি হয় স্তনে। স্তনে কোনোরকম পিণ্ডের উপস্থিতি পেলে সেটা তাই ভয়ের ব্যাপার। এই ভয় থেকে অবশ্য খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব বায়োপসির মাধ্যমে।

আপনিও কি ব্রেস্ট বায়োপসি করতে চলেছেন? তাহলে চলুন, দেখে নেওয়া যাক ব্রেস্ট বায়োপসির ক্ষেত্রে কোন কোন ব্যাপারগুলোর মুখোমুখি হতে হবে আপনাকে, এবং এ সংক্রান্ত কিছু জরুরী তথ্য-

ব্রেস্ট বায়োপসির রকমভেদ :

সাধারণত ব্রেস্ট বায়োপসির ক্ষেত্রে স্তনের খানিকটা টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা করা হয় যে সেখানে আদৌ ভয় পাওয়ার মতো কিছু রয়েছে কিনা। নানা পদ্ধতিতে এই বায়োপসি করা সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে কোর বায়োপসি, ভ্যাকুয়াম অ্যাসিস্টেড বায়োপসি এবং ওপেন সার্জিকাল বায়োপসি। এই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে ভিন্নতা কোথায়?

কোর বায়োপসি-

কোর বায়োপসির ক্ষেত্রে চিকিৎসক প্রথমে মাংসপিন্ডের অবস্থান দেখবেন। তারপর আপনাকে খানিকটা চেতনানাশক ওষুধ প্রদান করে অপারেশন করবেন। এক্ষেত্রে অবশ্য খুব বেশি সময় ও স্থানের দরকার পড়বে না।

ভ্যাকুয়াম অ্যাসিস্টেড বায়োপসি-

ভ্যাকুয়াম অ্যাসিস্টেড বায়োপসি অনেকটা কোর বায়োপসির মতোই। তবে এতে একটি লম্বা ও বড় একটি সুইয়ের সাথে ভ্যাকুয়াম আটকানো থাকে। সেই ভ্যাকুয়ামের সাহায্যেই স্তনের মাংসপিণ্ডকে টেনে বের করে আনা হয়।

ওপেন সার্জিকাল বায়োপসি-

এটি প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা একটি পদ্ধতি, যেখানে স্তনে সার্জারি করে মাংসপিণ্ড বের করে আনা হয়। এজন্য সাধারণ চেতনানাশক ব্যবহার করা হয়। এই সার্জারিতে ক্ষতের পরিমাণ বড় হলেও স্তনকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত করা সম্ভব হয়।

কোন পদ্ধতিটি সবচাইতে ভালো?

আপনার ব্রেস্ট বায়োপসির জন্য কোন পদ্ধতিটি ভালো সেটা নির্ভর করে স্তনে থাকা মাংসপিণ্ডের আকৃতি ও ধরণের উপরে। ৫ মিলিমিটারের কম আকৃতির মাংসপিণ্ড বা পানিভর্তি সিস্ট হলে সেটা দূর করতে ভ্যাকুয়াম অ্যাসিস্টেড বায়োপসি ব্যবহার করা সবচাইতে ভালো। তবে এক্ষেত্রে আপনার জন্য কোন পদ্ধতিটি ভালো হবে সেটা নিয়ে চিকিৎসকের সাথে কথা বলাটাই ভালো।

সার্জারির সময় কি ব্যথা অনুভূত হয়?

সার্জারির ক্ষেত্রে আপনাকে যেহেতু চেতনানাশক দেওয়া হবে, তাই এক্ষেত্রে আপনি খানিকটা অস্বস্তিবোধ করতে পারেন। তবে ব্যথা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা এখানে থাকে না। তবে অপারেশনের সময় যদি আপনি ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে সাথে সাথে চিকিৎসককে সেটা জানান।

স্তনের স্থানভেদে কি ব্রেস্ট সার্জারি করা কঠিন বা সহজ হয়ে পড়ে?

হ্যাঁ। স্তনের কিছু নির্দিষ্ট স্থান, এই যেমন- বগলের কাছাকাছি অংশে বা বুকের চামড়া বা খাঁচার কাছাকাছি কোথাও যদি মাংসপিণ্ড জন্ম নেয় এবং সেখানে অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে, সেক্ষেত্রে সার্জারি করা কঠিন হয়ে যায়।

কারণ, এক্ষেত্রে আঘাত পাওয়ার বা একটু অসাবধানতায় সার্জারির ফলাফল খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এক্ষেত্রে তাই আল্ট্রাসাউন্ড-বায়োপসি করাকেই বেশি পছন্দ করেন চিকিৎসকেরা।

ব্রেস্ট বায়োপসির পর কী কী সমস্যা হতে পারে?

ব্রেস্ট সার্জারি করার পর খানিকটা সমস্যা অনুভূত হতে পারে। কিছুটা ব্যথাবোধ করলেও সেটা ১-২ সপ্তাহের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। যেহেতু এসময় আপনার স্তনে ব্যথা থাকবে, তাই ভারী কোনো কাজ থেকে বিরত থাকুন। ব্যথা দূর করার জন্য কিছু ওষুধ হয়তো আপনি সেবন করতে পারেন। তবে তার আগে চিকিৎসকের সাথে কথা বলে নিন।

ব্রেস্ট বায়োপসির পরও কি ক্যানসার হতে পারে?

হ্যাঁ। তবে সেটা শতকরা ২০ শতাংশ নারীর ক্ষেত্রে। বাকি ৮০ শতাংশ নারী ক্যান্সারের হাত থেকে মুক্ত থাকেন এই সার্জারির পর। আর এই ফলাফলটাও সার্জারির এক সপ্তাহের মধ্যেই হাতে পেয়ে যাবেন আপনি।

তাই, স্তনে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখলে সেটা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। কে জানে, হয়তো দ্রুত পদক্ষেপ নিলে সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন আপনি।

মূল লেখক- ডক্টর লিম সিউ কুয়ান, মাউন্ট এলিজাবেথ নভেনা হসপিটাল।

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড