• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভালুকায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকরা

  ভালুকা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ

৩১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৪:২৬
সরিষা
সরিষা ক্ষেত (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ভোরের শীতের শিশির বিন্দু আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে দিগন্ত জোড়া হলুদকে দিয়েছে নতুন মাত্রা। ভালো ফলনের আশায় কৃষকরা অবিরাম শ্রম দিয়ে যাচ্ছে সরিষা চাষের জমিতে। সরিষা চাষ অধিক ভালো লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলায় এবার চলতি রবি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ সরিষার আবাদ হয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছে ময়মনসিংহের ভালুকাবাসীরা।

ভালুকা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানায়, এবারে চলতি মৌসুমে ভালুকা উপজেলায় মোট জমির পরিমাণ ২৭ হাজার ৯৫৫ হেক্টর। তার মধ্যে ৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের করা হয়। উপজেলায় টরি-৭, বারি-৯, বারি-১৪, ১৫ জাতের সরিষার চাষ করা হয়েছে। এতে এ অঞ্চলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকরা।

এ দিকে, কিছু কিছু জমি সরিষা চাষের উপযোগী না হওয়ায় কৃষকরা সঠিক সময়ে সরিষা বপন করতে পারেনি। ফলে তারা অন্যান্য আবাদ করছেন। ফুলকপি, টমেটো, বিভিন্ন ধরনের শীতের শাক সবজি ইত্যাদি আবাদ করেন। কৃষকরা যথা সময়ে সরিষা ঘরে তুলতে পারলে ও বিক্রয়মূল্য ভালো দাম পেলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে আশা করছেন কৃষকরা। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভালুকা উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় মাঠ জুড়ে শুধুই যেন হলুদের সমারোহ। সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে চরমধূয়ার দিগন্ত জোড়া মাঠ। প্রান্তর জুড়ে উঁকি দিচ্ছে শীতের শিশির ভেজা সরিষা ফুলের দোল খাওয়া গাছগুলো। সরিষার সবুজ গাছের হলুদে ঘিরে রেখেছে। ক্ষেতে গুন গুন করছে মৌমাছি। সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌমাছির ঝাঁক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।

ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের গোবুদিয়া গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মো. আলম সিকদার ও মো. কাদের সিকদার বলেন, আমরা স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে অধিক মুনাফা থাকায় জমিতে আগাম জাতের সরিষার আবাদ করেছি। তারা আরও বলেন, ধানের দামের দর পতনের কারণে প্রতি বছরই তাদের লোকসান গুণতে হয়। তাই আমরা বিকল্প ফসল হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি আমরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে তারা বলে জানান।

একই ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে এক বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। সরিষা তুলে নিয়ে ওই জমিতে ইরি ও বোরো ধান লাগাবো। সরিষার ফসল থেকে উপার্জিত আয় দিয়ে বোরো ধান উৎপাদনে সহায়ক হবে বলে তিনি জানান।

ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই অঞ্চল আগে অনেক সরিষা চাষ হয়তো এখন আর আগের মতো সরিষা আবাদ হয়না। তিনি আরও বলেন, আমি দেড় বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। আগাম জাতের সরিষার আয় করা অর্থ দিয়ে আমার সংসারের খরচ চালানো সহজ হবে। এছাড়াও সরিষা চাষে সার কম প্রয়োগ করতে হয়। সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানি লাগে না। একেবারই খরচ কম ও অল্প সময়ে এ ফসল ঘরে তোলা যায়। বর্তমান বাজারে সরিষার ভালো দামও রয়েছে।

ভালুকা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, সরিষার রোগ বালাই দমনে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন- ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ড : চার্জশিট আন্দোলনে কেটে গেল বছর

ভালুকা উপজেলা কৃষি অফিসার নারগিস আক্তার দৈনিক অধিকারকে জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন কৃষকরা সরিষা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা আয় করতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।

ওডি/এসজেএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড