• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইনজেকশন পুশ করে নারী কর্মীকে ৩০ বার ধর্ষণ!  

  কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি

১১ জুলাই ২০১৯, ১৪:১৩
ডাক্তার নামধারী এক সিরিয়াল ধর্ষক
আটক ডাক্তার নামধারী সিরিয়াল ধর্ষক মীর হোসেন (ছবি : সংগৃহীত)

প্যাথলজিতে চাকরির ফাঁদে ফেলে অগণিত নারী কর্মীদের ইনজেকশন পুশ করে ধর্ষণ! এরপর যৌন লালসা মেটাতে গোপন ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে ভয় দেখিয়ে বার বার ধর্ষণ, আবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে চাকরি থেকে বের করে দেয়ার ভয় দেখিয়েও ধর্ষণ! এমন অভিযোগে ডাক্তার নামধারী এক সিরিয়াল ধর্ষককে আটক করেছে র‍্যাব।

এক নারী কর্মীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (১০ জুলাই) তাকে আটক করে কুমিল্লার র‌্যাব ১১, সিপিসি-২-এর একটি দল। কথিত ওই ডাক্তার মীর হোসেন লাকসাম পৌরসভার বাইনচাটিয়া গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে।

সিরিয়াল ধর্ষক চাঁদপুরের রসু খা, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের স্কুল শিক্ষক আরিফ কিংবা চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত বেলাল দফাদারের ধর্ষণের উৎসব থেকেও আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছেন কুমিল্লার লাকসাম পৌর শহরের জংশন এলাকায় র‌্যাবের হাতে আটক ডাক্তার নামধারী সিরিয়াল ধর্ষক আলোচিত মীর হোসেন।

তবে ঠিক কতজন নারী কর্মী এই সিরিয়াল ধর্ষকের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন- এ বিষয়ে জানতে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন র‌্যাব। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১১-এর কুমিল্লার সিপিসি-২-এর কোম্পানি কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার। নিজ মালিকানাধীন ডিজিটাল হেলথ কেয়ারের প্যাথলজি ল্যাবে কর্মরত নারী কর্মীদের ধর্ষণ করে আসছিলেন এই কথিত ডাক্তার বেশধারী।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুয়া ডাক্তার মীর হোসেন তার প্যাথলজিতে সুন্দরী মেয়েদের চাকরি দিয়ে নানা কৌশলে তাদের ধর্ষণ করতেন। গোপনে ক্যামেরায় ছবি তুলে রেখে পরবর্তীতে হুমকি দিয়ে তাদের একাধিকবার ধর্ষণ করতেন। কেউ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পেত না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বলেন, মীর হোসেন ডাক্তার না হয়েও নিজেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দাবি করতেন। স্থানীয় কিছু সাংবাদিককে ম্যানেজ করে দীর্ঘ চার বছর ধরে নিজেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

র‌্যাব সূত্র জানায়, কয়েক মাস আগে এক সুন্দরী নারী কর্মীকে নিজের প্যাথলজিতে ভালো বেতনে চাকরির প্রস্তাব দেন মীর হোসেন। কিন্তু চাকরির শুরুতেই নানা অজুহাতে ওই নারীর শরীর স্পর্শ করার চেষ্টা করতেন তিনি। একপর্যায়ে মীর হোসেন তাকে জোরপূর্বক ইনজেকশন পুশ করে ধর্ষণ করেন। গোপন ক্যামেরায় ছবি তুলে রাখা আছে- এমন হুমকি দিয়ে ওই নারীকে অন্তত ৩০ বার ধর্ষণ করা হয়।

সূত্র আরও জানায়, প্রতিবার ধর্ষণের সময় শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করা হতো। ঘটনা প্রকাশ করলে ইন্টারনেটে ছবি ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। তার নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে গত সোমবার কুমিল্লায় র‌্যাবের নিকট ওই নারী লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের সত্যতা পেয়ে র‌্যাবের গোয়েন্দারা বুধবার ডিজিটাল হেলথ কেয়ারে অভিযান চালিয়ে ভুয়া ডাক্তার ধর্ষক মীর হোসেনকে আটক করে। অভিযানে চেম্বারের ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, কনডমসহ বিভিন্ন অবৈধ নেশাজাতীয় দ্রব্য জব্দ করা হয়। এরপরই র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে ধর্ষণের সব চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।

র‌্যাব-১১ সিপিসি ২-এর কোম্পানি কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, মেয়েটির লিখিত অভিযোগ পেয়ে আমরা লাকসাম ডিজিটাল হেলথ কেয়ারের মালিক মীর হোসেনের চেম্বারে অভিযান চালিয়ে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, বিপুল পরিমাণ কনডমসহ বিভিন্ন অবৈধ নেশাজাতীয় দ্রব্য পাই।

তিনি জানান, মীর হোসেন মূলত কোনো ডাক্তার নন, চাকরি দেয়ার নামে ওই চেম্বারে অসংখ্য নারী কর্মীকে ধর্ষণ করেছেন তিনি।

সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, তাকে আটক করে র‌্যাব হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়াও ইতোমধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এমন নারী কর্মীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের স্বার্থে বর্তমানে সেখানে কর্মরত এক নারী কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব কার্যালয়ে আনা হয়েছে। তার কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে আটককৃত ওই ভুয়া ডাক্তার নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার লাকসাম থানায় মামলা করা হতে পারে।

ওডি/এআর

অপরাধের সূত্রপাত কিংবা ভোগান্তির কথা জানাতে সরাসরি দৈনিক অধিকারকে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড