• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বসতবাড়িতে অগ্নি সংযোগ

‘এখানে বক্তব্য দেওয়ার কিছু নেই, যা পারেন লিখবেন’

  মো. রেজোয়ান ইসলাম, নীলফামারী

০৪ আগস্ট ২০২৩, ১২:৩৭
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বসতবাড়িতে অগ্নি সংযোগ

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পুলিশের উপস্থিতিতে বসতবাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ১০ জন আহত হন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের সোনামণির ডাঙ্গায় বেলা সাড়ে ১২টায় ঘটনার সূত্রপাত হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬৫৪০নং কবলা দলিল মূলে বিএস ৫৮৪৮ দাগের ২৮ শতক জমির দাবিদার আইনজীবী মামুনুর রশীদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে রশিদুল ইসলামসহ পাঁচজনকে বিবাদী করে ১৪৪/৪৫ ধারা অনুযায়ী কোর্টে মামলা (মামলা নং ১৮৭/২৩) দায়ের করেন। এরেই প্রেক্ষিতে উক্ত জমিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার অবনতি না ঘটার নোটিশ দেন আদালত। যদিও উভয় পক্ষ আদেশ অমান্য করে জোর করে জমি নিজেদের দখলে নেওয়ার দলবদ্ধভাবে চেষ্টা চালায়। পরে পরিস্থিতির অবনতি হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পুলিশ বাদী-বিবাদীকে জমির কাগজ পত্র নিয়ে থানায় হাজির হতে বলে। উভয় পক্ষ পুলিশের প্রস্তাব মেনে নেয়। পুলিশ ও বাদী-বিবাদীর আলোচনা চলাকালে হঠাৎ মামুনুর রশীদ ও বাবুলের বাড়ির প্রবেশ পথে উভয় পক্ষের অন্তত ১০০ জন নারী-পুরুষ লাঠি দিয়ে মারপিটে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে উক্ত জমিতে বসবাসকারী বাবুলের রান্নাঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য অগ্নি নির্বাপণ করেন।

এ ঘটনায় বাদী মামুনুর রশীদ পাটোয়ারী বলেছেন, আমাদের জমিতে জোর করে বিবাদী দখলের চেষ্টা করে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। উভয় পক্ষের লোকজনকে কাগজ নিয়ে থানা যেতে বলে পুলিশ। আমরা তা মেনে নেই। কিন্তু ঘটনাস্থলে পুলিশের সামনে বিবাদীর সাথে কথা বলে নাউতারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আশিক ইমতিয়াজ (মনি)। তার পরামর্শে হঠাৎ করে বিবাদী আমার বাবাসহ আমার পরিবারের সদস্যদের লাঠি দিয়ে মারধর করে আহত করে। বিবাদীর লাঠির আঘাতে আমার বাবার হাত ভেঙে গেছে। আমার ছোট ভাইয়ের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমরা ছয়জন গুরুত্বর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

বিবাদী রশিদুল বলেন, আমার জমিতে জোরপূর্বক মামুন ঘর উঠাতে চায়। আমি বাধা প্রদান করে, বলি জমি নিয়ে কোর্টে মামলা চলমান এবং আমাদের মাঝে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে আমাদের জানায় এটা মামুনুর রশিদের জায়গা। এখানে সে ঘর উঠাবে তার পক্ষে রায় আছে। পুনরায় আমাদের মাঝে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ থানায় কাগজ নিয়ে যেতে বলে এবং আমরা তা মেনে নেই। এর কিছুক্ষণ পরেই বাবুলের বাড়ির ওখান তার পরিবার ও মামুনুর রশীদের মারামারি হয়। ঘটনাস্থলেই বাবুলের বাড়িতে আগুন সূত্রপাত ঘটে এবং তা পুলিশের সামনে। সে মুহূর্তে পুলিশ নীরব ছিল।

এ প্রসঙ্গে মামুনুর রশীদের করা অভিযোগ অস্বীকার করে নাউতারা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশিক ইমতিয়াজ (মনি) বলেন, তারা নিজেরা সবাই প্রতিবেশী। ডিমলা থেকে ওসি সাহেব আমাকে কল দিয়ে বলেন আপনার ইউনিয়নের পাশেই পুলিশ পাঠিয়েছি। একটু মীমাংসা করার ব্যবস্থা করবেন। আমি সেখানে গিয়ে দেখি পুলিশ আছে এবং খুব উচ্চবাচ্য হচ্ছে। আমি আর সেদিক না গিয়ে।

তিনি আরও বলেন, ওসি সাহেবকে বললাম আপনি নিজেই আসেন। এখানে উভয় পক্ষ উত্তেজিত। আমাদের কথা কতটুকু কাজ হবে তা আমার জানা নেই। আমি এর থেকে আর বেশি কিছু জানি না।

এ বিষয়ে বাবুল হোসেন বলেন, খাস জমিতে বিগত ৩০ বছর ধরে পরিবারসহ বসবাস করছি। মামুন আমাকে নোটিশ দিয়েছে বাড়ি ভাঙার জন্য। রশিদুলের জায়গা দখল করতে গিয়ে আমার বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আমাদের বেধড়ক মারধর করে। আমি ও আমার সহধর্মিণী অসুস্থ। আমাদের আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে মামুনুর রশীদ পাটোয়ারীর করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই আব্দুর রশিদকে প্রশ্ন করা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, মন্তব্যের কিছু নেই যা পারেন লিখবেন। আপনি আমাকে বলেন যে এই বিষয়ে আমি কি বক্তব্য দেবো।

ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লাইছুর রহমান জানান, এ ঘটনায় তরিকুল এবং আবু তাহের নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড