কাজী শাহরিয়ার রুবেল, আমতলী (বরগুনা)
বরগুনার আমতলীতে প্রসিদ্ধ গরুর বাজারের মধ্যে গাজীপুর বাজার অন্যতম। এ বাজারে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গরু আসে। পুরো বাজার গরুতে পরিপূর্ণ থাকলেও বেচাকেনা তেমন জমে ওঠেনি। ক্রেতাদের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়েনি। তবে বিকাল নাগাদ কিছুটা বেচাকেনা হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
ইদ উল আযহার বাকি মাত্র ৫ দিন। এখনও গরুর জমে না ওঠার বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, বৃষ্টি থাকায় ক্রেতার সংখ্যা কম। তাছাড়া এলএসডি সংক্রামক থাকায় ক্রেতারা গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। মূলত ঝামেলা এড়াতে ক্রেতারা ঈদ উল আযহার দু—এক দিন আগে গরু কিনবেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) গাজীপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গরু আসছে। গরুগুলোকে একের পর এক নামানো হচ্ছে। এরপর বাজার কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট জায়গায় সারি করে রাখা হয়েছে। তবে বাজারে তেমন ক্রেতা দেখা যায়নি। টিপ টিপ বৃষ্টির জন্য বেচাকেনা তেমন জমে ওঠেনি। কিছু কিছু ক্রেতা গরুর দেখে দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছে।
উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রাওঘা থেকে ৮টি গরু নিয়ে আসেন মো. জসিম সরদার। প্রায় ৭ কি.মি পথ পায়ে হেঁটে গরু নিয়ে আসেন তিনি। একটি গরুও তিনি বিক্রি করতে পারেননি। আশা করেছিলেন বাজারে আজকে বেচাকেনা ভালো হবে।
সোনাখালী গ্রামের জহিরুল নামক পাইকার জানান, বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না থাকায় ঈদ উল আযহার প্রতি মানুষের আগ্রম কম। সবাই কম বেশী ঋণী। আবার গরুর এলএসডি রোগের জন্য ক্রেতারা আতঙ্কে আছেন। তাই গরু বাজারে থাকলেও তেমন ক্রেতা নেই।
এদিকে পশুর হাটে আগত বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তায় নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি পুরো হাট এলাকাকে নজরে রাখছে গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়ি। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে ইদ উল আযহা উপলক্ষে প্রাণীর স্বাস্থ্য পরিক্ষা ও পরাপর্শ বিষয়ক ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রেখেছে উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল।
উল্লেখ্য যে, পবিত্র ইদ উল আযহা উপলক্ষে উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভায় ছোট বড় খামার ও স্থানীয় পরিবারে প্রায় ৮ হাজার ৭৮৯টি পশু প্রস্তুত করেছেন। এদের মধ্যে ষাঁড় ৩ হাজার ৭০৪ ও বলদ ২ হাজার ৮৬৯টি, গাভীন ৮৩৫টি, মহিষ ১৫৬টি, ছাগল ১ হাজার ৯৪টি ও ভেড়া ১৩১টি।
উপজেলায় পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষে পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯৫০টি। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৮৩৯টি পশু। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি পশুগুলো অন্যান্য উপজেলার বাজারে বিক্রির জন্য পাঠানো হবে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, পবিত্র ইদ উল আযহা উপলক্ষে উপজেলায় ৯টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত পশু রয়েছে। আশা করছি পবিত্র ইদ উল আযহা উপলক্ষে পশুর ঘাটতি পড়বে না।
বাজার পরিদর্শনে আসেন বরিশাল বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ পরিচালক ডা. মো. আবদুস সবুর। তিনি জানান, পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষে প্রাণীর স্বাস্থ্য পরিক্ষা ও পরাপর্শ বিষয়ক ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। প্রত্যেকটি বাজারে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম থাকবে। ঈদ উল আযহায় এলএসডি রোগের সংক্রামক প্রভাবিত করবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাজারে অনেক সময় পরিদর্শন করলাম এ রোগের তেমন গরু চোখে পড়েনি। আশা করছি প্রভাব পড়বে না। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছি রোগটি প্রতিরোধ করার।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড